ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০১:৩৭, ২০ মার্চ ২০১৮

ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী শুরু হয়েছে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ কর্মসূচী পালন। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার এ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এমপি। আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত এই স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ পালিত হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু সাতদিন নয়, প্রতিদিন দেশের সাধারণ মানুষকে সর্বোৎতম স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সচেষ্ট থাকতে হবে। ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। স্বাস্থ্যসেবার সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি, স্বাস্থ্য সচিব(মেডিক্যাল শিক্ষা) ফয়েজ আহম্মেদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের(বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ , ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন প্রমুখ। স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ পালন সফল করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তলাবিহীন ঝুঁড়ির বদনাম ঘুচিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে মানবতার নেত্রী হিসেবে পরিচিত। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণ হয়ে উন্নয়নশীল মর্যাদা লাভ করেছে। আর স্বাস্থ্যসেক্টর দেখেছে সফলতার মুখ। কর্মসূচী গ্রহণ, জনবল নিয়োগ ও অবকাঠামো নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছে। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সফলতা পেয়েছে সরকার। চলতি বছর আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যথাযথ সময়ে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করে সুনাম কুড়িয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণারয়। আর দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করা হয়েছে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব। সব মিলিয়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের নেটওয়ার্ক আজ দেশের আনাচে কানাচে বিস্তারলাভ করেছে। স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে দেশের মানুষ। তবে এখনো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সমন্বিত উদ্যোগে সেগুলো অতিক্রম করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবার সংশ্লিষ্ট সকলে যাতে সারা বছর প্রতিদিন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আন্তরিকভাবে কাজ করার চেতনা পায় , সেজন্যই এই স্বাস্থ্যসেবা সপ্তাহ পালন। তাই এই কর্মসূচীকে সফল করে তুলতে হবে। চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে হাসপাতালে ভিড় না করার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিবেন চিকিৎসক ও নার্সরা। রোগীর সঙ্গে একজন লোক থাকলেই চলে। চিকিৎসক, নার্স এবং চিকিৎসাসেবার সংশ্লিষ্ট লোকজন ছাড়া কারো হাসপাতালে ভিড় করে রোগীকে দেখতে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। এতে রোগীর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। হাসপাতালকে নিজেদের বাড়ি ঘর বানানো যাবে না। রোগীর চারপাশে ভিড় জমানো হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। হাসপাতালগুলোর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কোন আপোষ করা যাবে না উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্যখাতে আরো ৪০ হাজার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগ দেবে। শীঘ্রই এই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে তিনি জানান। ঢাকা মেডিকেল কলেজের উন্নয়নে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই মেডিকেলের চেহারাই পাল্টে যাবে। শিগগিরই এই উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হবে। তখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হবে ৫ হাজার বেডের হাসপাতাল। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ উদ্যাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী এ সপ্তাহ পালিত হবে। জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে উৎসব মুখর পরিবেশে এ সপ্তাহ পালিত হবে। বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ২০ মার্চ কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয়ভাবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও সমাবেশ। ২১ মার্চ অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য ক্যাম্প, ২২ মার্চ বর্ণ্যাঢ্য র্যালী, ২৩ মার্চ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ২৪ মার্চ জাতীয় যক্ষ্মা দিবসের কর্মসূচী, ২৫ মার্চ মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচী, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন।
×