ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে ১৪ দলের গণসমাবেশ

জঙ্গী সন্ত্রাসী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২১ মার্চ ২০১৮

জঙ্গী সন্ত্রাসী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী নির্বাচনে আবারও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় ছিনিয়ে আনার মাধ্যমে এই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামকে আরও বেগবান এবং সাম্প্রদায়িক জঙ্গী-সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজ অপশক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। ১৪ দল নেতারা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই যথাসময়ে আগামী নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তিকেই আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসা হবে। এদেশে আর কখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দলের গণসমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা, সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান এবং বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত চক্রান্তের প্রতিবাদে এই গণসমাবেশ আয়োজিত হয়। সমাবেশে ১৪ দলের পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করেন জোটের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। কর্মসূচীতে রয়েছে আগামী ৩০ মার্চ রংপুর এবং ৫ এপ্রিল যশোরে গণসমাবেশ। এছাড়া পরবর্তী সময়ে ফেনীতেও অনুরূপ সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন জোট। গণসমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বারবার বাংলাদেশ এবং অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত হানছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি মেনে নিতে পারেনি বলেই তারা এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এদের একমাত্র শক্তি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক-সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ। তাই অতীতের মতো আগামী দিনেও ঐক্যবদ্ধভাবে এদের প্রতিহত করা হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপির আমলেই জঙ্গীবাদ লালিত পালিত ও পুষ্ট হয়েছে। এরা ইসলামের নামে মানুষকে প্রতারণা করছে। কেবল ইসলাম থেকে নয়, বাংলাদেশের মাটি থেকেই এদের বিতাড়িত করতে হবে। বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করতে হবে। কারণ মানবতা ও দানবতা একসঙ্গে থাকতে পারে না। কাজেই দানবের পতন ঘটবে, মানব থাকবে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ড. জাফর ইকবালের ওপর আক্রমণকে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তবুদ্ধির ওপর আক্রমণ আখ্যা দিয়ে বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে- তাকে আরও বেগবান করতে হবে। আর আগামী নির্বাচনে আবারও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় ছিনিয়ে আনার মাধ্যমে এই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার জন্য তার দল লন্ডন থেকে একজন আইনজীবী নিয়ে এসেছে। এই আইনজীবী কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মামলা পরিচালনার জন্যও এদেশে এসেছিলেন। তার মানে বিএনপি এখনও জামায়াতকে ছাড়েনি। তারা আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শুধু রাজপথেই নয়, আগামী নির্বাচনেও সাম্প্রদায়িক এই অপশক্তিকে পরাজিত করতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। গোল করতে চাইলে বিএনপিকে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। ১৪ দল ছিল, আছে, থাকবে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও বিজয় ছিনিয়ে এনে ১৪ দল আবারও ক্ষমতায় আসবে। এদেশে আর কখনোই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আবারও দেশকে স্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী নির্বাচনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শেখ হাসিনার সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জামায়াত এখনও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ বলেন, এই দেশে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের কোন স্থান হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
×