ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর ‘হৈমন্তী’ বাঁচাতে নাটোরে বিশেষজ্ঞ দল

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২১ মার্চ ২০১৮

বঙ্গবন্ধুর ‘হৈমন্তী’ বাঁচাতে নাটোরে বিশেষজ্ঞ দল

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২০ মার্চ ॥ নাটোরের উত্তরা গণভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে লাগান ৪৬ বছরের ‘হৈমন্তী’ গাছ বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে নাটোর জেলা প্রশাসন। গাছটি বাঁচাতে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের একদল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গাছটি পর্যবেক্ষণ করেন। আট সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম। এ সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম, নেজারত ডেপুটি কালেকক্টরেট (এনডিসি) অনিন্দ ম-লসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর থেকে গ্র্যান্ড মাদার হাউস জঙ্গলে ভরপুর ছিল। পরে বর্তমান জেলা প্রশাসক গণভবন দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। সে সময় পরিষ্কার করতে গিয়ে গাছটি বঙ্গবন্ধুর স্ব-হস্তে রোপণ করার বিষয়টি ধরা পড়ে। ১৯৭২সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্তরা গণভবনে এক সফরকালে তার স্ব-হস্তে একটি ‘হৈমন্তী’ গাছ রোপণ করেছিলেন। কিন্তু গাছটির চার দিকে ঝোপ-জঙ্গলে ভরা ছিল। পরে পরিষ্কার করে গোড়া বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে অযতœ-অবহেলায় থাকার কারণে পোকার আক্রমণে গাছটি মরে যাওয়ার পথে। এই অবস্থায় নাটোর জেলা প্রশাসন ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে গাছটি রক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গাছটি বাঁচাতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক দল উদ্যান বিশেষজ্ঞ দল গাছটি সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন। বিকেল চারটার দিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি দল গণভবনে গাছটি পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় গাছটি বাঁচাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশমালা দিয়েছে বিশেষজ্ঞ দলটি। প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শাহাদৎ হোসেন, ড. কবিতা আঞ্জুমান আরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার বিভাগের পরিচালক কুদরতি গণি, উর্ধতন বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা এএসএম মেজবা উদ্দিন, উর্ধতন বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা মাফরুহা আফরোজ, সেচ ভবনের মার্কেটিং এক্সপার্ট বজলুর রহমান, নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম, উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তার উপ-পরিচালক মেফতাহুল বারীসহ অন্যরা। প্রতিনিধি দলের প্রধান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ব-হস্তে লাগান গাছ অনেক ঐতিহ্য বহন করে। বর্তমানে গাছটির বয়স ৪৬ বছর হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে গাছটি অযতœ-অবহেলায় থাকার কারণে পোকার আক্রমণে গাছটি নষ্ট হয়ে গেছে। তবে পুরোপুরি ভাবে রিকভার করা সম্ভব না হলেও দীর্ঘ দিন টিকিয়ে রাখতে বেশ কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিছু উদ্যোগ নিলে গাছটি বাঁচান সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
×