ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সনাক্ত না হওয়ায় খালি হাতে ফিরেছেন পিয়াসের বাবা

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ২১ মার্চ ২০১৮

সনাক্ত না হওয়ায় খালি হাতে ফিরেছেন পিয়াসের বাবা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে ইউএস-বাংলা এয়ালাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বরিশালের পিয়াস রায়ের লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন তার পরিবার ও স্বজনরা। পিয়াসের মরদেহ শনাক্ত করতে না পেরে এরইমধ্যে তার বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় নেপাল থেকে খালি হাতে ফিরেছেন। অপরদিকে একমাত্র ছেলে হারানোর শোকে ভেঙে পরেছেন তার মা পূর্ণা রাণী রায়। তিনি কারও সাথে কথা বলছেন না। এমনকি কান্নাও করছেন না। বুধবার দুপুরে নিহত পিয়াসের একমাত্র বোন জামাতা হিমাত্রি সরকার শুসময় বলেন, গত ১৬ মার্চ দুপুরে ইউএস-বাংলা এয়ালাইন্সের তত্ত্বাবধায়নে একটি ফ্লাইটে তার শ্বশুড় (পিয়াসের বাবা) সুখেন্দু বিকাশ রায় নেপালের কাঠমান্ডুতে পৌঁছেন। সেখানে পিয়াসের লাশের শনাক্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। তবে পিয়াস এমনভাবে দগ্ধ হয়েছে তাই তার লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আমার শশুর ১৯ মার্চ দেশে ফিরে আসেন। পাশাপাশি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশ শনাক্তের প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। তিনি আরও বলেন, পুরো প্রক্রিয়ায় আরও সময় লাগবে বলে চিকিৎসক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানালে ২০ মার্চ রাতে তিনি (পিয়াসের বাবা) খালি হাতে বরিশাল নগরীর বাসায় চলে আসেন। এদিকে নগরীর আব্দুল গফুর সড়কের নিহত পিয়াসের বাসায় নিস্তব্দতা বিরাজ করছে। শোকে পাথর হয়ে গেছেন পিয়াসের গর্ভধারিনী মা পূর্ণা রাণী রায়। পিয়াসের একমাত্র বোন শুভ্রা রানী বলেন, দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রথমে বুঝেছি এই বুঝি ভাই ফোন দিয়ে বলবে আমি ঠিক আছি। সে অপেক্ষা শেষে জানলাম ভাই আর নেই। ভেবেছিলাম ১৯ মার্চ ভাইয়ের লাশ দেশে আসবে। কিন্তু তাও আসলোনা। তিনি আরও বলেন, এখন সবাই লাশের অপেক্ষায় আছি। আর মা কেমন যেন ভেঙে পরেছেন। কারও সাথে তিনি কথা বলছেন না। এমনকি কান্নাও করছেন না। সূত্রমতে, জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামের সুখেন্দু বিকাশ রায় নলছিটি উপজেলার চন্দ্রকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং তার স্ত্রী পূর্ণা রাণী রায় বরিশাল সরকারী পলিটেকনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ওই দম্পত্তির একমাত্র পুত্র সন্তান পিয়াস রায় ছিলেন গোপালগঞ্জের শেখ সাবেরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস চূড়ান্ত পর্বের ছাত্র। গত ৫ মার্চ তার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ভ্রমনের নেশায় নেপালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় পিয়াস। দুই ভাই-বোনের মধ্যে পিয়াস রায় ছিল বড়।
×