ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলীর দাবিতে কেশবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ০২:৪৯, ২১ মার্চ ২০১৮

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলীর দাবিতে কেশবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ কেশবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের এক অংশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমানের ৩০ মার্চের ভেতর বদলীর দাবি করে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। নির্বাহী অফিসার ওই অংশের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করেছেন এমন অভিযোগ এনে তাঁরা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একটি সূত্র থেকে জানা গেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এমন বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন। বুধবার দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ সংসদের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে ইউ এন ও তাদের দাবিকৃত আলাদা আসনের ব্যবস্থা করেননি। দাবী পূরণ না করায় আমরা ওই অনুষ্ঠান বর্জন করি। একই দিনে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক অংশের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের সম্মননা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু অনুষ্ঠানটি প- করার জন্য আগের দিন রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতকারীরা মঞ্চটি ভাংচুর করে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উপরোন্তু এর কয়েক দিন পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান বয়বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমান, আব্দুস সাত্তার দফাদার, শাহাবুদ্দিন সরদারসহ কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে চরম অসৌজন্য মূলক আচরণ করে তাদেরকে তার অফিস থেকে বের করে দেন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এমএনএ সুবোধ মিত্র, যুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হালীম, বাম সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য অসাম্প্রদায়িক মানুষের চেষ্টায় ও তাদের অর্থে ৬০ দশকের শেষের দিকে কেশবপুর পাবলিক ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অক্ষত ওই শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে একই স্থানে নতুন করে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও ২১ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করে উদ্বোধকের নাম ফলক স্থাপন করে পূর্বের শহীদ মিনারকে অস্বীকার করেছেন। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান কেশবপুরে যোগদানের পর কর্মজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবীসহ সকল স্তরের মানুষের সাথে দূর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আতংক সৃষ্টি করে চলেছেন। এসব কারণে লাল মুক্তিবার্তা ভূক্ত মুক্তিযোদ্ধারা আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়েজিত অনুষ্ঠান বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শেখ কাইয়ুম উদ্দীন, নূরুল ইসলাম খোকন, লিয়াকত আলী, ফজলুর রহমান, আব্দুল ফকির, রশিদুল হক, আব্দুর রহমান, মনিমোহন ধর প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা। আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি অ্যাড. মিলন মিত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সকল আন্দোলনে একত্বতা ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান বলেন, বাংলাদেশের কোথাও আলাদাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেয়ার নজির নেই। ১৬ ডিসেম্বর তাঁরা অনুষ্ঠান থেকে চলে যাবার পর আমার কাছে কেউ আসেননি। আমি তাদের সাথে কোন অসৌজন্যমূলক আচরন করিনি। কেশবপুরের কোন মানুষই আমার শত্রু বা প্রতিদ্বন্দি নয়। আমি সরকারি চাকুরী করতে এসেছি সকলকে সাথে নিয়ে সম্মিলিত ভাবে পথ চলার জন্য। এটা আমার বিরুদ্ধে একটা গভীর ষড়যন্ত্র।
×