ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাহিদুর রহমান

বিষয়টি অগৌরবের

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২২ মার্চ ২০১৮

বিষয়টি অগৌরবের

আমাদের নিত্য নৈমিত্তিক সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক নানা অসঙ্গতির অভাব নেই। একটু চোখ খুললেই নানারকম অসঙ্গতি চোখে পড়ে। ভাবুক মনকে আরও ভাবিয়ে তোলে। ইদানীংকালে এফএম রেডিও ও টেলিভিশনের বহু টকশোতে উপস্থাপক ও বক্তার বক্তব্য শুনে মনে হয় তারা যেন ভুল বাংলা বলার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আধুনিক নাগরিক জীবনে বিনোদনের বহু মাধ্যমের মধ্যে একটি হলো রেডিও। ছোটকাল থেকে আমি রেডিও শুনি। দিন যায় আর তার প্রতি আসক্তি কমে আসছে। কারণ হিসাবে বলতে পারি ভাষার ব্যবহার খুবই লজ্জাজনক অবন্থা। আঞ্চলিক ভাষা ও আধুনিক ভাষার যে একটা সংমিশ্রণ এক কথায় তা ‘লেজে গোবরে।’ আবার বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে বক্তার বক্তব্য শুনে মনে হয় তিনি কোন ইংরেজী চ্যানেলে বক্তব্য দিচ্ছেন, ৮০ ভাগ কথাই ইংরেজীতে বলছেন। এতে কি আমাদের ভাষার অবমাননা করা হয় না? বিশ্বের ৩০ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। এই বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে এ বাংলার ছাত্রজনতা এক হয়ে ভাষার সংগ্রামে জাপিয়ে পড়েছে। পুলিশ লাঠি চার্জসহ মিছিলে গুলিবর্ষণ করে। শহীদ হয় রফিক, শফিক, বরকতসহ অনেকে। ভাষার জন্য ভাষার স্বাধীনতার জন্য বাঙালী জাতিই একমাত্র রক্ত দিয়েছে। কেননা বাংলা ভাষা শুধু ভাষা বললে ভুল হবে, ৩০ কোটি মানুষের আবেগ মিশ্রিত অনুভূতি, লাখ লাখ শিশুর মুখের প্রথম শব্দ মা। তাই অতুল প্রসাদ সেন তার কবিতায় বলেছেন- ‘কি জাদু বাংলা গানে! গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,’। বাংলা ভাষাকে আমাদের মনে ধারণ করতে হবে। এ ভাষার আছে নিজস্ব বর্ণমালা, নিঃসন্দেহে বাংলাভাষায় রয়েছে একটি বিশ্বমানের সাহিত্য সম্ভার। আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। আমরা সংগ্রামী জাতি এটা মনে রাখতে হবে। পটাপট ইংরেজী বলাতে আমাদের কোন গৌরব নেই; বরং শুদ্ধ করে বাংলা ভাষায় কথা বলাতে আমাদের গৌরব আছে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ইংরেজীতে থাকা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বিজ্ঞাপন, গাড়ির নামফলক, সব ধরনের সাইনবোর্ড ও নামফলক বাংলায় লিখতে হবে। একই সঙ্গে বাংলা ভাষা প্রচলন আইনানুসারে সব ক্ষেত্রে অবিলম্বে বাংলা ভাষা ব্যবহারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কাপাসিয়া, গাজীপুর থেকে
×