ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ার পরমাণু চুল্লি ধ্বংসের কথা স্বীকার করলো ইসরায়েল

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ২২ মার্চ ২০১৮

সিরিয়ার পরমাণু চুল্লি ধ্বংসের কথা স্বীকার করলো ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রায় ১১ বছর আগে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে হামলা চালিয়ে সিরিয়ার পরমাণু চুল্লি সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সম্প্রতি এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। পরে এসংক্রান্ত নথিপত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। এ স্বীকারোক্তির পর ওই হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যের প্রত্যেকের জন্য সতর্কবার্তা অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। জানা যায়, ২০০৭ সালের ওই হামলার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গন ইসরায়েলকেই দায়ী করে আসছিল। এমনকি হামলার এক বছরের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রও স্বীকার করেছিল যে- ইসরায়েলই হামলাটি চালিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের দিক থেকে স্বীকারোক্তি এলো বুধবার। ‘অপারেশন অর্চার্ড’ শীর্ষক ওই গোপন অভিযানের ব্যাপারে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের আলোচনা করা এত দিন পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর সরকার এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেই এজ্জোর এলাকায় ২০০৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১০টায় একটি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। ইসরায়েল সরকারের বুধবারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০০৭ সালের ৫-৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে ইসরায়েলের জঙ্গি বিমানগুলো সিরিয়ায় নির্মাণাধীন পরমাণু চুল্লিতে সফলভাবে আঘাত করেছে এবং ধ্বংস করে দিয়েছে। ওই চুল্লির নির্মাণকাজ কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। এ অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও গোটা অঞ্চলের জন্য ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠা হুমকিকে সফলতার সঙ্গে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। সেই হুমকিটা ছিল সিরিয়ার পরমাণু সক্ষমতা।’ বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েল ওই হামলাসংক্রান্ত বেশ কিছু ছবি, ভিডিও চিত্র ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোপন কাগজপত্রও প্রকাশ করেছে। ওই হামলার পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, সিরিয়া গোপনে পরমাণু চুল্লি নির্মাণের চেষ্টা করছিল এবং ইসরায়েল সেটা ধ্বংস করে দিয়েছে। বুধবার ইসরায়েলের স্বীকারোক্তির পর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিদগর লিবারম্যান বলেন, এক দশক আগের ওই অভিযান ‘মধ্যপ্রাচ্যের প্রত্যেকের জন্য’ একটা বার্তা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আফেখা আদ্রু জানান, ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধবিমান ছাড়াও মোট আটটি এফ -১৬ এবং এফ-১৫ জঙ্গি বিমান হামলায় অংশ নেয়। লেজার বোমা ব্যবহার করে মোট ১৭ টন বিষ্ফোরক দ্রব্য নিক্ষেপ করা হয় এবং পরমাণু চুল্লি সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দেয়া হয়। তিনি আরও জানান, হামলা করার আগে গোয়েন্দাদের এবং হামলাস্থলে জটিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। সেনামুখপাত্র বলেন, রাজধানী দামেস্ক থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে দেইর আজ-জুরে এলাকায় কয়েকটি পর্যায়ে পরমাণু চুল্লিটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ইসরায়েলের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী ইসরায়েল কাত্জ সরাসরি ইরানের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘ইরানের মতো যেসব দেশ ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি’, সেসব দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকাটা কখনোই ইসরায়েল মেনে নেবে না। না বললেই নয়, ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে করা এক চুক্তির আওতায় ইরান নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম আপাতত সীমিত রেখেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়ে চলেছেন এবং সত্যি তিনি সেটা বাতিল করলে ইরান আবার পুরোদমে পরমাণু কর্মসূচি চালু করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। সূত্র : এএফপি
×