ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৩ মার্চ ২০১৮

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল। সাফল্যের আরেক ধাপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশের এই অর্জন। কয়েকদিন আগে পাওয়া হয় স্বীকৃতিপত্র। আর এখন চলছে উদ্যাপন। বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকা ছিল আনন্দনগরী। জাতীয়ভাবে এখানে উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রা আলোচনা অনুষ্ঠান সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বাঙালীর অগ্রযাত্রা খবর ছড়িয়ে দেয়া হয় সর্বত্র। দিনব্যাপী আয়োজনের সূচনা করা হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোক উৎসবের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর ৯ স্থান থেকে ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীন দফতরের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে শোভাযাত্রা করে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। স্টেডিয়ামের বাইরে ২০টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়। এর ফলে উৎসবের সঙ্গে একাত্ম হন পথচারীরাও। এভাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উৎসবমুখর ছিল রাজধানী। অবশ্য তারও আগে থেকে জাতীয় পতাকার রঙে সাজতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। আগামী সোমবার ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে শহরের বহুতল ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। কাওরানবাজার এলাকাটির কথা বিশেষভাবে বলতে হয়। এখানে মূল রাস্তার ধারে অনেকগুলো বহুতল ভবন। ইতোমধ্যে কয়েকটি ভবন সেজেছে পতাকার রঙে। সন্ধ্যা নামতেই লাল সবুজ আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। মতিঝিলে অবস্থিত ব্যাংক বীমাগুলোর প্রধান কার্যালয়েও চলছে আলোকসজ্জার কাজ। আগামী দুই একদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হবে বলে জানা গেছে। এর বাইরে প্রতিদিনই আয়োজন করা হচ্ছে নানা অনুষ্ঠানের। একাত্তরের স্মৃতিচারণ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হচ্ছে। সম্মান জানানো হচ্ছে শহীদদের প্রতি। স্বাধীনতার মাসে আবারও সামনে এলো ঢাকার শিশুপার্ক প্রসঙ্গ। রাজধানী ঢাকার ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের বিনোদনের জন্য ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ১৫ একর জায়গার ওপর এটি নির্মাণ করা হয়। পুরোদমে চালু হয় ১৯৮৩ সাল থেকে। পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম শিশুপার্ক হলেও, এ নিয়ে সমালোচনা ছিল শুরু থেকেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেছিলেন, সে জায়গাটিকে আড়াল করতেই শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ শিশুপার্ক সরিয়ে নিয়ে ঐতিহাসিক জায়গাটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। অনেকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে কথা হচ্ছিল। কাজ হচ্ছিল। কিন্তু শিশুপার্কটি এখনও স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। তবে স্বাধীনতার মাসে পরিবর্তন আসছে নামফলকে। ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’ বদলে নামফলকে ‘শিশুপার্ক’ লেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। যে কোন দিন নামফলক পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে জানান তিনি। শিশুপার্কের নামফলক নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনও। তিনি বলেছেন, আমরা সরকারের আদেশের জন্য অপেক্ষা করছি। সরকারী আদেশ পেলেই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকায় এখন অনেক হাসপাতাল। কিন্তু সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল। আছে যথারীতি। এমনকি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হাসপাতালগুলোর ওপরও আস্থা রাখা যাচ্ছে না। ইউনাইটেড হাসপাতালের কথাই ধরা যাক, অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারণে আবারও জরিমানা গুনতে হয়েছে হাসপাতালটিকে। গত বুধবার র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালায়। হাসপাতালের পরীক্ষাগার, ফার্মেসিÑ সবখানেই অনিয়ম দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, ল্যাবরেটরিতে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট পাওয়া গেছে। যে তাপমাত্রায় রাখা দরকার তা না রাখায় এসব রি-এজেন্ট বরফ হয়ে যায়। সেখানে প্রায় পাঁচ কার্টন রি-এজেন্ট ছিল। প্রায় সবটাই মেয়াদোত্তীর্ণ। সার্জিক্যাল আইটেমগুলোও ব্যবহারযোগ্য ছিল না। অস্ত্রোপচারের পর সেলাইয়ে যে সুতা ব্যবহার সে সুতোও ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান তিনি। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার আরেক নামী হাসপাতাল এ্যাপোলোতে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নকল ওষুধ ধরা পড়ায় ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এ অবস্থায় ঢাকার হাসপাতালগুলোর সেবার মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
×