ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুবাইয়ে মাথায় ক্রেন পড়ে বাংলাদেশী নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৩ মার্চ ২০১৮

দুবাইয়ে মাথায় ক্রেন পড়ে বাংলাদেশী নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২২ মার্চ ॥ দুবাইয়ে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় উপর থেকে ক্রেনের তার ছিঁড়ে মাথায় পড়ে মাদারীপুর জেলার শিবচরের আবদুল মান্নান খান নামের একজন প্রবাসী মারা গেছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারের লোকজন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে বাড়ির সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। রাতে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সংসারের অভাব অনটনকে ঘুচিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় প্রায় ৮ বছর আগে মাদারীপুরের শিবচরের উমেদপুর গ্রামের দিনমজুর গেদু খানের ছেলে মান্নান খান (৪৫) দুবাইয়ে পাড়ি জমায়। দুবাইয়ের ফ্রেবিক্স কোম্পানিতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে স্বল্প মজুরিতে কাজ শুরু করে মান্নান। প্রতিমাসে দুবাই থেকে যা টাকা পাঠাত তা দিয়েই বাবা, মা, স্ত্রী, ১ ছেলে, ২ মেয়েসহ ৬ জনের ভরণ পোষণ চলত। নিহতের বড় মেয়ে রতœা ৮ম শ্রেণী, ছেলে আমির হোসেন ৬ষ্ঠ শ্রেণী ও ছোট মেয়ে স্বপ্নার ৫ম শ্রেণীর পড়াশোনার খরচ চলত বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা দিয়েই। উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ রবিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুবাইয়ের আবুধাবী শহরের একটি ২৭ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ করছিল মান্নান। এ সময় হঠাৎ উপর থেকে একটি ক্রেনের তার ছিঁড়ে মান্নান খানের ওপর পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ২২ মার্চ দুপুরে তার লাশ বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় এবং সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। বাদ মাগরিব জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে তার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে ৩ সন্তানের ভবিষ্যত। কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। দুবাইয়ে মান্নানের সঙ্গে থাকা তার নিকটাত্মীয় রফিক মিয়া মোবাইল ফোনে বলেন, ‘মান্নান ও আমি দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ের ফ্রেবিক্স কোম্পানিতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছিলাম। সেদিন কাজ করার সময় নির্মাণ সামগ্রীসহ একটি ক্রেন উপর থেকে তার ওপর পড়ে গেলে মৃত্যু হয়। পরে কোম্পানির লোকজনের সার্বিক সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ এয়ারে তার লাশ এসে পৌঁছায়। নিহত মান্নান খানের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, ‘সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী স্বামীকে হারিয়েছি। আমার ৩টি অবুঝ শিশুর ভবিষ্যত নিয়ে আমি চিন্তিত। তাই কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’
×