ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাহত কনস্টেবল শফি উদ্দিনের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নেই

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২৩ মার্চ ২০১৮

যুদ্ধাহত কনস্টেবল শফি উদ্দিনের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কনস্টেবল শফি উদ্দিনের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আজও অন্তভুক্ত হয়নি। দীর্ঘকাল বিভিন্ন মহলের নিকট আবেদন করেও তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তভুক্ত করা হয়নি। হতভাগা এ মুক্তিযোদ্ধা এ ক্ষোভ দুঃখ নিয়ে গত ৬ মাস পূর্বে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। তার পুত্র আনোয়ারুল আলম বাবার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি আদায়ে এখন বিভিন্ন মহলে ধর্ণা দিচ্ছেন। জানা গেছে, নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার আফাজ উদ্দিনের পুত্র শফি উদ্দিন ১৯৬৭ সালে পাবনা পুলিশ লাইন কনস্টেবল পদে যোগদেন। কনস্টেবল নং-৬০১। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকবাহিনী পাবনা পুলিশ লাইনে আক্রমন করলে জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান ও পুলিশ সুপার আবদুল গাফফার চৌধুরীর নেতৃত্বে অন্য পুলিশের সাথে শফি উদ্দিন প্রতিরোধ যুদ্ধে শামিল হন। পাকসেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল পাকবাহিনী ত্রিমুখী পুলিশ লাইন আক্রমন করলে পুলিশের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পরে। এরপর কনস্টেবল শফি উদ্দিন ভারতের বালুরঘাট মুক্তিযোদ্ধা যুব শিবিরে যোগ দেন। যুব শিবিরের মাধ্যমে ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। বেঙ্গল রেজিমেন্ট সিপাই নং-৫২৪১। শফি উদ্দিন অধিনায়ক মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে জামালপুর যুদ্ধে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। ভারতের তুরা হাসপাতালে চিকিৎসা করান। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান শেষে ছাড়পত্র নিয়ে পুনরায় পাবনা পুলিশ লাইনে যোগদান করেন। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমন প্রত্রাক-৬/৪/৭২ সিরি-১১০৫ নং ৩০/১১ নং পত্র মারমত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিনকে ৫০০ টাকার অনুদান দেন। যার চেক নং-০১৬৮০৬। পাবনা পুলিশ লাইনে হেডকনস্টেবল পদে পদোন্নতি পেয়ে তিনি অবসরে যান। দীর্ঘকাল ধরে তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য আবেদন করলেও তা আজও করা হয়নি। যুদ্ধাহত এ মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভ দুঃখ নিয়ে গত ৬ মাস পূর্বে ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমান তার পুত্র আনোয়ারুল আলম পিতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি আদায়ে বিভিন্ন মহলের কাছে আবেদন করছেন। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা বইতেও শফি উদ্দিনের অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আনোয়ারুল আলম এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×