ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবৈধ দখলদারদের কবলে টাঙ্গাইল গালা হাট ॥ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ২৩ মার্চ ২০১৮

অবৈধ দখলদারদের কবলে টাঙ্গাইল  গালা হাট ॥ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা হাটের কোটি কোটি টাকা মুল্যের জায়গা যুগ যুগ ধরে অবৈধ দখলে রেখেছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এতে করে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হলেও হাটের উন্নয়ন হয়নি দীর্ঘ অর্ধশত বছরেও। এই অবৈধ দখলবাজদের কারণে প্রতিবছর সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। ১৯৬০ সালে গালা হাটটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী হাটটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না তারা। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গালা হাটের পেরিফেরিভূক্ত জায়গায় অন্তত ৩০/৩৫ টি কাঁচাপাকা অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনায় কেউ কেউ নিজেরা ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আবার অনেকে দোকান করে ভাড়া দিয়েছেন। অনেকে আবার স্থাপনা নির্মাণ করে তা বিক্রিও করে দিয়েছেন। এদের মধ্যে জনতা বহুমুখী সমবায় সমিতির নামেই রয়েছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ জায়গা। যার পুরোটাই হাটের পেরিফেরিভুক্ত। এ জায়গার মধ্যে জনতা বহুমুখী সমবায় সমিতির চারটি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে প্রায় ২৫ বছর ধরে। শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাট। হাজী ছাবাই উদ্দিন তালুকদার, মালু সেখ, রোস্তম আলী, আতোয়ার আলী সরকার, কোহাছেক আলী গালা এলাকার কয়েকজন সমাজসেবী ১৯৬০ সনে এই হাটটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে হাটটি অবৈধ দখলদারদের কবলে পরে একদিকে যেমন হারিয়ে ফেলেছে তার অস্তিত্ব। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। বিগত ২০১৫ সালের ৫ মার্চ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের স্মারক মূলে সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভূমি ও ইমারত (দখল পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ, ১৯৭০ এর ৫(১) ধারা অনুযায়ী ৭ (সাত) দিনের মধ্যে অবৈধ দখল/স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। তারও আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান গালা হাটের পেরিফেরিভূক্ত জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু প্রভাবশালীদের কবল থেকে আজও পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা মুল্যের এই জায়গা উদ্ধার করা সম্বব হয়নি। এরও আগে ২০১২ সালের ১৩ মে এবং তার দুই বছর পর ২০১৫ সালের ২১ মে গালা হাটের পেরিফেরিভূক্ত জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার নোটিস প্রদান করা হয়। কিন্তু অজানা অলৌকিক কারণে অদ্যাবধি এই অবৈধ দখলদার ও তাদের নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুখময় সরকার বলেন, আমরা এই হাটের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে সেগুলো মার্কিং, সীমানা নির্ধারণ, উচ্ছেদ নথি তৈরি করে নথি জেলা প্রশাসকের নিকট অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছি। জেলা প্রশাসক সেটি অনুমোদনও দিয়েছেন। আমরা আমাদের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছি। এখন উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের।
×