ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা পদ্ধতি ॥ বঙ্গবন্ধুর চোখ দিয়ে দেখুন -স্বদেশ রায়

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১২ এপ্রিল ২০১৮

কোটা পদ্ধতি ॥ বঙ্গবন্ধুর চোখ দিয়ে দেখুন -স্বদেশ রায়

লুৎফর রহমান সরকার যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর সে সময়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি অলিখিত নিয়ম করেছিলেন। তাঁর নিয়ম ছিল, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট ক্লাসকে বাদ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড ক্লাস হলেও তাকে নেয়া যেতে পারে। তাঁর বক্তব্য ছিল, ঢাকা শহরে থাকাই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট ক্লাসের সমান। ওদের রেজাল্টটুকু বাড়তি। ঠিক এমনিভাবে কিছুদিন আগে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে কথা হচ্ছিল। তাদেরও অলিখিত নিয়ম, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েদের প্রাধান্য দেন। বাকিদের ক্ষেত্রে তাদের খুব একটা নজর নেই। লুৎফর রহমান সরকার এই নিয়োগের এই ফর্মুলা বের করেছিলেন। এরশাদ আমলে তাই নিজে যখন দু-একজনকে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছি; প্রথমদিকে অন্ধভাবে তাঁকেই ফলো করেছি। ফলও যে খুব খারাপ হয়েছে, তা নয়। দেখেছি, অন্য কলেজ থেকে বা মফস্বলের ইউনিভার্সিটিগুলো থেকে যারা আসে তাদের থেকে ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা ভাল করে বেশিক্ষেত্রে। এখন ব্র্যাকও ভাল করে। একটা পর্যায়ে এসে মনে হলো একটি ছেলের কথা। সে প্রশাসন ক্যাডারে বিএনপি আমলে একজন টিএনও হিসেবে তার থানাকে ২০০১ এর ওই তা-ব থেকে খুব টেকনিক্যালি রক্ষা করেছিল। অথচ সে এমন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে যে, কলেজে আসার আগে রবীন্দ্র রচনাবলী কোনদিন চোখে দেখেনি। এই ঘটনা মনে পড়ার পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস, উত্তরবঙ্গের একটি পশ্চাৎপদ জেলার এক ছেলেকে নিয়োগ দেই। তার কাজের ভেতর যে সৃষ্টিশীলতা পাই, তাতে সত্যি মুগ্ধ হতে হয়। সে সত্যিকার অর্থে সৃষ্টিশীল একটা ছেলে। লুৎফর রহমান সরকার থেকে আমার মতো একজনের, সকলেরই এই উপর থেকে টেনে নেয়ার নীতি কেন? এর একমাত্র কারণ, আমরা যেমন গোটা বাংলাদেশ চিনি না তেমনি আমাদের ভালবাসা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক, বাংলাদেশকেন্দ্রিক নয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর সারা জীবনে বাংলাদেশের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত অবধি ঘুরেছিলেন। তাছাড়া তাঁর ছিল রবীন্দ্রনাথের মতো অন্তর্দৃষ্টি। আর দেশের মানুষের প্রতি তাঁর যে ভালবাসা ছিল, এই ভালবাসা দ্বিতীয় কোন ব্যক্তির কখনই হবে না। কারণ, বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয়বার জন্মান না। বঙ্গবন্ধুর ভালবাসাকে আমরা জেন্ডারে ভাগ করে বলি পিতার মতো ভালবাসা। আসলে পিতা ও মাতা উভয়ের ভালবাসা তাঁর হৃদয়ে ছিল। যে কারণে মায়ের ভালবাসার হৃদয় দিয়েও তিনি দেখতে পেতেন প্রতিটি সমস্যাকে। যেমন একটা পরীক্ষা সকলেই করে দেখতে পারেন। ঘরের ভেতর গ্রামের অশিক্ষিত এক মায়ের একটি পাঁচ মাসের বাচ্চাকে রেখে একজন ডাক্তার, একজন বিদেশী ডিগ্রীধারী কাউকে এবং ওই অশিক্ষিত মাকে বাইরে বসিয়ে রাখুন। বাচ্চাটি যখন কেঁদে উঠবে- দেখবেন কেন কাঁদছে তার সঠিক উত্তর ওই মা-ই দিতে পারবে। এখানে ভালবাসার কাছে হেরে যায় সার্টিফিকেটের শিক্ষা। আর সত্যি অর্থে বঙ্গবন্ধুর মতো রাজনীতিবিদরা ছাড়া সার্টিফিকেটের শিক্ষার বাইরে কোন শিক্ষা পান না। কারণ, বাদবাকি শিক্ষাটা তো নিতে হয় মানুষের কাছ থেকে। তাঁরা তো ওইভাবে মানুষ চেনেন না। যেমন আমরা চিনি না। বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ সৃষ্টি করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা তখন খুবই দুর্বল ছিল। সে সময়ে রাজধানীর সঙ্গে তুলনামূলকভাবে অনেক জেলা খুবই পশ্চাৎপদ ছিল। অবশ্য শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বললে ভুল হবেÑ নানান কারণে ছিল পশ্চাৎপদ। এখনও শিক্ষার মান বিচারে অনেক জেলা ঠিক সমানভাবে এগিয়ে আসতে পারেনি। এই বাস্তবতার বিবেচনা থেকেই হয় তো একক দেশে যেহেতু অন্য কোন প্রদেশ নেই, তাই দেশটিকে সমানতালে এগিয়ে নেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু সরকারী চাকরিতে জেলা কোটা করেছিলেন। আজ এ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিচ্ছেন জেলা কোটার বিরুদ্ধে। যারা আন্দোলন করছেন, মতামত দিচ্ছেন তাদের প্রতি বলব, বেসরকারী সবক্ষেত্রে লুৎফর রহমান সরকারের ফর্মুলার মতোই ফর্মুলা মানা হয় নিয়োগের ক্ষেত্রে। যে কারণে অনেকেই বলেন, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভেতর দিয়ে নিয়োগ হয়ে যায়। আসলে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের আইবিএ, ব্র্যাক আর নর্থ সাউথের ছেলেমেয়েদের নিয়ে নেয়া হয়, এই বাস্তবতাটা তারা জানেন না। বেসরকারী এসব নিয়োগে সরকারের কোন হাত নেই, আন্দোলন করেও কোন ফল পাওয়া যাবে না। হাতে থাকে তাই শুধু সরকারী চাকরি। এই সরকারী চাকরি থেকে যদি জেলা কোটা বাদ দেয়া হয়, তাহলে মফস্বলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীদের উপরে উঠে আসা কতটা সম্ভব হবে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। কোটা বিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের একটা সমঝোতা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য বলেছেন। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এমন কিছু যেন তৈরি করা না হয় যে, দেশটি শুধু রাজধানীর জন্য হয়ে যায়। যখন কোন দেশের অর্থনীতি বড় হতে থাকে তখন একটা বড় সমস্যা এসে সামনে দাঁড়ায়, তা হলো বৈষম্য বেড়ে যাওয়া। এই বৈষম্য শুধু অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাড়ে না, শিক্ষা, চাকরি সবক্ষেত্রে বাড়ে। তখন একটি শ্রেণীর হাতে সিংহভাগ অর্থ থাকে। তাদের ছেলেমেয়েরা সে সময়ে অর্থ দিয়ে ভাল শিক্ষাটি কিনে নিতে পারে। তাই সে সময়ে শিক্ষার ক্ষেত্রেও বৈষম্য আসে। ওই বৈষম্য চাকরিতেও চলে যায়। এ সময়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকে এই বৈষম্য কমানো। সরকার তো দরিদ্রকে ফিডিং অর্থনীতি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না। তাকে কাজ দিতে হবে। যে কারণে নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের কোন একটি প্রত্যন্ত উপজেলার ছেলেমেয়েদেরও চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, তাঁর এই কোটা নিরীক্ষা কমিটি যেন দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর চোখ দিয়ে দেখেন। তারা যেন এমন কোন সংস্কার না করেন যাতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েদের উঠে আসাটা বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার সারাদিন কোটা বিরোধী আন্দোলনের খবর প্রকাশ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। সেখানে কোন একটা চ্যানেলে বার বার দেখেছি, গোলাপী রঙের পোশাক পরা একটি মেয়ে বার বার জোরের সঙ্গে বলছে, সব মিলিয়ে কোটা থাকবে মাত্র ১০%। নিজ কন্যাসম ওই মেয়েটির প্রতি তাকিয়ে বার বারই মনে হচ্ছিল, ওর মতো বয়সে যখন রাজপথে ছিলাম তখন কি আমি এমনই উত্তেজনার তাড়নায় সিদ্ধান্ত নিতাম? তাকে আমি নিজের মেয়েই সম্বোধন করে বলছি, আমার ওই মেয়েটি যখন বলছে সব মিলিয়ে কোটা ১০ % এর বেশি হবে না তখন কি সে ভেবে দেখেছে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ে কি মেয়ে ও ছেলের অনুপাত সমান, না মেয়ে অনেক কম! ওর বয়স অনেক কম। সচিবালয়ের চত্বরে হয় তো ওর এখনও যাওয়ার সময় হয়নি। ও যদি সময় পেত, একবার সচিবালয়ে ঘুরে আসত, তাহলে দেখতে পেত এখনও কিন্তু সচিবালয়ে ১০% উর্ধতন কর্মকর্তা মেয়ে নয়। এ সময়ে যদি সব মিলিয়ে কোটা ১০% করা হয়, তাহলে মেয়েদের ভাগে তো ১% পড়বে না। তাহলে আমাদের যে আশা, আগামীতে মেয়ে ও ছেলে সমান সমান হোক। পার্লামেন্টে ৩০০ পার্লামেন্ট মেম্বারের ১৫০ মেয়ে নির্বাচিত হোক- সে সমাজ হবে কীভাবে? প্রতিযোগিতায় হয় ঠিকই। তবে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পৌঁছানোর জন্য একটি পর্যায়ে হাত ধরে টেনে তুলতে হয়। তাই আমাদের যে সব মেয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে তাদের একটু শান্ত মাথায় ভেবে দেখতে হবে যে, কোন অপরাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নয়, কোন সংগঠনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নয়- আমি আসলে কী কাজটি করছি? একজন শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রে ও সমাজে মেয়েরা যাতে সামনে এগিয়ে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করাÑ সে কাজটি কি আমি করছি, না ঠিক তার উল্টো কাজটি করছিÑ তা ভেবে দেখতে হবে। পাশাপাশি ওই মেয়েদের এটাও ভাবতে অনুরোধ করব, এই সমাজে কারা চায় যে, মেয়েরা যেন কর্মক্ষেত্রে না আসে! কারা মেয়েদের তেঁতুল বলে! পক্ষান্তরে মেয়েদের উঠে আসার পথ বন্ধ করে দিতে ওই মেয়েরা কি তাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে রাজপথে নামেনি? যে কোন সরকারকে সব সময়ই দেখা যায় রাজপথে মানুষ নামলে তারা একটা আপোস করে। তবে নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে সরকারের আপোস করা ঠিক হবে কিনা, একবার হলেও ভেবে দেখতে বলব। এই নারী ও জেলা কোটার পরে সব থেকে বড় কোটা মুক্তিযোদ্ধা কোটা। একটি বড় অংশের ক্ষোভটা কেন যেন এই কোটার ওপরই দেখছি। এখানে কোটা ৩০%। তবে এটা নামে তালপুকুর। আসলে কি ঘটি ডোবে সেখানে? কারণ, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এক লাখের কিছু বেশি। মুক্তিযোদ্ধার তালিকাও তেমনটি। কিছু ভুলভ্রান্তি সেখানে আছে ঠিক। তারপরেও ১৯৭৫ থেকে টানা ২১ বছর দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকার ফলে এই এক লাখের অর্ধেকের বেশির জীবনমান এমন স্থানে চলে গেছে, যারা কোনদিন আর এই সরকারী চাকরির প্রতিযোগিতায় আসতে পারবে না। কারণ, এখনও সংবাদপত্র খুললে দেখা যায়, হয় কোন মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করছেন, না হয় রিক্সা চালাচ্ছেন। যারা আন্দোলন করছে তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করব, তোমরা একবার ভেবে দেখ ওই মুক্তিযোদ্ধারা না হলে আজ এ দেশ পেতাম না। অথচ ওই ভিক্ষুকের, ওই রিক্সাওয়ালার ছেলেমেয়েরা কি তোমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আসছে? বাংলাদেশে গত ৪৭ বছরে কারা ধনী হয়েছে? গোটা পিরোজপুর খুঁজে দেখতে বলি, রাজাকার দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী যে ’৭১ এর আগে একজন ক্যানভাসার, একজন বাজারের রাস্তায় বসা ফেরিওয়ালা ছিল, তার সন্তানদের এখন কত সম্পদ? তার দশ ভাগের একভাগ সম্পদ কি গোটা পিরোজপুর খুঁজলে, একজন মুক্তিযোদ্ধার আছে? তাই এখানে সাকল্যে পঞ্চাশ হাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের থেকে সন্তানসন্ততিরা প্রতিযোগিতায় আসবে। পঞ্চাশ হাজার পরিবার থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে হিসাব করুন একটা বিসিএসে কি ৫০ জন আসতে পারবে? পারবে না। ১০ থেকে পনেরো জন আসে। তাই সেখানে নির্দেশ দেয়া আছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধায় নিয়োগ পাবে। আর নিয়োগ যে সেভাবেই হচ্ছে তার প্রমাণ, ৩৩ বিসিএস থেকে ৭৭.৪০ % মেধায় নিয়োগ হয়েছে, ৩৫ বিসিএস থেকে ৬৭.৪৯ % মেধায় নিয়োগ হয়েছে, ৩৬ বিসিএস থেকে ৭০.৩৮% মেধায় নিয়োগ হয়েছে। তাই সত্যি অর্থে, মুক্তিযোদ্ধাদের এই কোটা নিয়ে পানি ঘোলা করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে পানি ঘোলা কারা করে? জামায়াত-শিবির-বিএনপি, এরাই তো মুক্তিযোদ্ধার কোটা নিয়ে পানি ঘোলা করে। তাই এই ঘোলা পানিতে কি সাধারণ ছাত্রছাত্রীর নামা উচিত? জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর প্রজন্ম তাঁদের সর্বস্ব ত্যাগ করেছিল আবার যাতে জাপান ঘুরে দাঁড়ায়। ওই প্রজন্ম এখন বয়োব্দ্ধৃ। তাদের কেউ যদি এখনও বিকেলে কোন রেস্টুরেন্টে খেতে আসে তখন সকলে ছুটে যায় তাকে সাহায্য করার জন্য। আর আমাদের যে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়ে গেল, তাদের পরিবার কি কেবলই ভিক্ষে করবে আর রিক্সা চালাবে? আমরা কি একবারও ভেবে দেখব না একটি শহীদ পরিবার বা একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা দেশের জন্য কী দান করেছে। আর তার বিপরীতে তাদের পরিবার কী হারিয়েছে। সর্বোপরি আরও একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, তারা কি শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে চাকরি পাচ্ছে? তাদের কি বিসিএস পরীক্ষায় পাস করে আসতে হচ্ছে না? তাহলে যে পরীক্ষায় পাস করেছে, সে কিভাবে একেবারে মেধাহীন হচ্ছে? আর যারা পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করেছে, তারাই যে কর্মক্ষেত্রে ভাল হবে, তা সঠিক নয়। কর্মক্ষেত্র বিশাল জায়গা। পরীক্ষার পাস মার্কটি গেট পাস মাত্র। ভারতের ক্রিকেট প্লেয়ার নির্বাচনে রাজ্যকোটা আছে। পূর্বাঞ্চল কোটা থেকেই সৌরভ গাঙ্গুলী সুযোগ পেয়েছিলেন। সেদিন কেউ ভাবেনি, কলকাতার মাঠের এই প্লেয়ার কয়েকবার বাদ পড়ার পর চান্স পেয়ে প্রথম টেস্টেই দুই ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি করবে। তারপরে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আর সেই তো এখন অবধি ভারতের সেরা ক্যাপ্টেন। তাই সরকার ও আন্দোলনকারী উভয়ের কাছে অনুরোধ, দেশের স্বার্থটা দয়া করে সকলে বঙ্গবন্ধুর চোখ দিয়ে দেখুন। ভালবাসা দিয়ে দেখুন। জামায়াত-শিবিরের চোখ দিয়ে দেখবেন না। [email protected]
×