ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে হৃদয়ের, স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২০ এপ্রিল ২০১৮

ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে হৃদয়ের, স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গোপালগঞ্জে ট্রাকের ঘষায় ডান হাত হারানো টগবগে যুবক খালিদ হাসান হৃদয় স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন। অল্প সময় স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারছেন। দীর্ঘক্ষণ স্বাভাবিক কথা বলতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। চিকিৎসকরা বলছেন, হৃদয় আপাতত শঙ্কামুক্ত। তার পূর্ণ বিশ্রাম দরকার। হৃদয়কে মানসিকভাবে সাহস জোগানো প্রয়োজন। গত ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে দশটার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রামে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ট্রাকের ঘষায় হৃদয়ের (২০) ডান হাতটি কাঁধ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওইদিনই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই তার অপারেশন হয়। পরে তাকে হাসপাতালের ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের ২৪ নম্বর বিছানায় পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে হৃদয়কে বিছানায় শুয়ে খাবার খেতে দেখা গেছে। পাশে বসে আছেন মা শাহীনা বেগম ও পিতা রবিউল ইসলাম মিনা। তারা সন্তানকে যথাসাধ্য সাহস জোগাচ্ছেন। মা শাহীনা বেগম বলছিলেন, দুপুর থেকে একেবারেই স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছে। তবে ওর মনে এক ধরনের ভয় কাজ করে। ঘুমের জন্য চোখ বন্ধ করলেই ভয়ে থরথর করে নড়ে ওঠে। চোখ খুলেই অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকে। হয়ত চোখ বন্ধ করলে হাত হারানোর সেই দৃশ্য ভেসে ওঠে। কথাবার্তাও স্বাভাবিক বলতে পারে। তবে বেশিক্ষণ নয়। অল্প সময়ের জন্য। বেশিক্ষণ কথাবার্তা বলতে গেলেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মোতাবেক আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, যাতে হৃদয় কষ্ট ভুলে থাকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার জনকণ্ঠকে বলেন, প্রাথমিকভাবে হৃদয় অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত। স্বাভাবিক হচ্ছে আস্তে আস্তে। তারপরও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হৃদয়ের অপারেশনকারী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ শামসুজ্জামান জনকণ্ঠকে বলেন, হৃদয়ের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আশঙ্কামুক্ত। তাকে এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। গোপালগঞ্জ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, চালক জাকির হোসেন (৩২) ও ঘাতক ট্রাকটি ঘটনার রাতেই খুলনার কাঁটাখালী থেকে আটক করা হয়। জাকিরের ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হৃদয়ের মামাত ভাই নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি হাইওয়ে পুলিশের ভাঙ্গা থানা তদন্ত করছে। হৃদয়ের পিতা রবিউল ইসলাম মিনার (৫৩) গোপালগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের একটি পরিবহন কোম্পানিতে চাকরি করেন। হৃদয় একই কোম্পানির বাসে করেই টুঙ্গিপাড়া থেকে গোপালগঞ্জ যাচ্ছিল। হৃদয়ের মা খুলনায় এ্যাসেনসিয়াল ড্রাগে কর্মরত। সেই সুবাদে তাদের খুলনায় বসবাস। হৃদয়ের বড় বোন শারমীন আক্তার খুলনা বিএল কলেজে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী। তিনি বিবাহিত। দ্বিতীয় বোন তামান্না আক্তার স্বর্ণা খুলনায় বেসরকারী নর্দার্ন ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্সে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। সবার ছোট হৃদয়।
×