ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালের দুই উপজেলায় ঝড়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২০ এপ্রিল ২০১৮

বরিশালের দুই উপজেলায় ঝড়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ কাল বৈশখী ঝড়ে জেলার আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলায় লন্ডভন্ড হওয়া গ্রামে ফসল, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা, পোল্ট্রি ফার্ম বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর চারদিনেও সচল হয়নি বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল জানান, ১৭ এপ্রিল দুপুরে কাল বৈশাখী ঝড়ে মুহুর্তের মধ্যে কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে কৃষকের ক্ষেতের পাকা ধান, পান বরজ, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা, পোল্ট্রি ফার্ম বিধ্বস্ত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণ ও পুণর্বাসন অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে নিরুপন করা ক্ষয়ক্ষতির তালিকা অনুযায়ী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ধান, পান বরজ, গাছপালা, পোল্ট্রি ফার্মে সাত কোটি ৮২লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ঝড়ে ২৮২টি ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ২৩৭টি কাঁচা ঘরবাড়ির আংশিক ও ৪৫টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেক পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পল্লী বিদ্যুৎ আগৈলঝাড়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ হযরত আলী জানান, ঝড়ে উপজেলার সকল এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। ঝড়ের কারণে ২০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে গিয়ে ও বিভিন্নস্থানে সঞ্চালন তারে গাছ পরে ছিড়ে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির নিরুপনের বরাত দিয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা নাছরিন জানান, উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে ফসল ও ঘর বিধ্বস্ত হয়ে সাত কোটি টাকারও বেশী ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বোরো ধানের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা, পান বরজে প্রায় ২২ লাখ টাকাসহ ফসলে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৪৩৫টি ঘর সম্পূর্ণ ও ৮৭৫টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘর ও গাছ চাঁপা পরে কমপক্ষে ২৭ জন আহত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২ এর গৌরনদী জোনাল অফিসের ডিজিএম ফজলুল হক জানান, কাল বৈশাখী ঝড়ের আঘাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এইচটি ও এলটি বিদ্যুৎ লাইনের ৪০টি খুটি ভেঙ্গে ও ২০১টি স্থানের বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে পরেছে। এছাড়া ২৫০টি বৈদ্যুতিক মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমান ১০ লক্ষাধিক টাকা। ফলে ঝড়ের পর থেকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে জোনাল অফিসের আওতাধীন গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর উপজেলার সম্পূর্ন ও মুলাদী, বানারীপাড়ার উপজেলার একাংশ এলাকার সদরের কিছু অংশে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হলেও গ্রামীণ জনপদে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তবে সঞ্চালন লাইন চালু করতে বিদ্যুত অফিসের কর্মীরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ শুক্রবার দিনভর গৌরনদী উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন ইটালী আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল ইসলাম দিলীপ।
×