ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দাদনের টাকার জন্য শিকলে বেধে রাখা হয় রাসেল ও তার বোনকে

প্রকাশিত: ২৩:২২, ২০ এপ্রিল ২০১৮

দাদনের টাকার জন্য শিকলে বেধে রাখা হয় রাসেল ও তার বোনকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ উত্তাল সাগরে মাছ শিকারে যেতে না চাওয়া এবং দাদনের কথিত ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ১৯ বছরের তরুন জেলে রাসেল মিরাকে ডেকে নিয়ে শিকলে বেধে রাখা হয়। ভাইকে বেধে রাখার খবরে ছোট বোন আট বছরের কেয়ামনি গিয়ে কান্নাজুড়ে দিলে তাকেও শিকলে বেধে রাখে ট্রলার মালিক আলমাছ সরদার ও তার দুই সহযোগী বাবুল সরদার, নাসীর সরদার। দুই সন্তানকে উদ্ধার করতে গিয়ে দুই মাসের মধ্যে দাবিকৃত টাকা দেয়ার অঙ্গীকার করলেও দমেনি গোয়ার পরিচিত আলমাছ সরদার। প্রকাশ্যে বেধড়ক পেটানো হয় রাসেলের মা রেবেকা বেগমকে (৩২)। এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সাদা কাগজে সই রেখে দেয়। চেতনা ফিরলে ক্ষত শরীর নিয়ে অবশেষে কলাপাড়া থানায় এসে রেবেকা জানালে পুলিশ গিয়ে রাসেল ও কেয়ামনিকে উদ্ধার করে । রেবেকা বেগম বর্তমানে কলাপাড়া হাসপাতালে নির্যাতনের অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কাতরাচ্ছে। লালুয়ার চারিপাড়া গ্রামের এ দরিদ্র পরিবারটি এখন আছেন চরম নিরাপত্তাহীন। দুই সন্তানসহ স্বামীকে নিয়ে চরম ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আছেন। বুধবার বিকেলের এ ঘটনায় ওই নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। কলাপাড়া থানা পুলিশও কাউকে গ্রেফতার করেনি। একই স্থানে, পাশাপাশি বাড়ি থাকায় উল্টো বাড়িঘরে থাকা এখন অনিরাপদ হয়ে গেছে এ পরিবারের জন্য। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে শুধু অঝোর ধারায় কান্না করছেন রেবেকা। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ছেলেকে শিকলে বেধে রাখার অভিযোগে তার মা থানায় আসলে পুলিশের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে রেবেকা বেগমকে মারধরের বিষয় তার জানা নেই, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×