পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ॥ পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে পরষ্পর বিরোধী আঞ্চলিক দলের রোসানলে পড়ে ২৫টি গ্রামের তাদের আত্মীয় স্বজন ও সমর্থক ৪৫টি পরিবারের ৩ শতাধিক লোক বাড়ী ঘর ছাড়া হয়ে উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে । অনেকে এসছে এক কাপড়ে। অনেক ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে পাল্টা-পাল্টি হামলা,বাড়ীঘর ভাংচুর অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। পাল্টা-পাল্টি হামলায় জীবন গেছে অন্তত ৭ জন। নিখোঁজ রয়েছে অনেকে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পক্ষের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) সমর্থিত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বৈসাবি উৎসব চলাকালিক খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ(প্রসীত)ইউপিডিএফ(বর্মা) ও জেএসএস(এমএন) গ্রুপের নেতকর্মীরা সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। অপহরণ, হামলা, পাল্টা হামলা প্রাণ হারায় অন্তত ৭জন। তবে অধিকাংশ লাশ গুম করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের হামলা, হুমকি, বাড়ীঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্তত ২৫ টি গ্রামের কয়েকশত পরিবারের নারী ও শিশু খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
আজ শুক্রবার দুপুরে মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি খুলারাম পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন গ্রাম থেকে উদ্বাস্তু ৪৫ পরিবারের মাঝে ত্রাণ ও মশারী বিতরণ করেছে মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, মাটিরাঙা, গুইমারা ও রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ২৫টির বেশী গ্রামের ৪৫ পরিবারকে হুমকি দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু সন্ত্রাসীদের কাছে জনপ্রতিনিধিরা অসহায় দাবি করে বৃদ্ধমান সমস্যা সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মহালছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা ।
এ বিভীষিকাময় পরিস্থিতির জন্য ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এর গণমাধ্যম সমন্বয় মিঠুন চাকমা, প্রসীত খীসাপহ্নী ইউপিডিএফকে দায়ী করছে । তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ সংগঠক মাইকেল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অশান্ত রাখতে একটি পক্ষ পাহাড়ে সার্কাস চালু করেছে। জনপ্রতিনিধিদের ব্যানারে বিশেষ একটি মহল সার্কাস দলের সদস্যদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে ইউপিডিএফর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না নাসরিন ঊর্মি আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনের হুমকিতে উদ্বাস্তুদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেন এই কর্মকর্তা
স্থানীয় লোকজন জানান আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াই বন্ধ না হলে খাগড়াছড়িতে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসার শংকা রয়েছে।পর্যটন সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল জাতিগোষ্ঠীর নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে বৃদ্ধমান সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন এমনটা প্রত্যাশা পাহাড়বাসীর।
