ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে পুত্রবধুর দাবীতে অনশন

প্রকাশিত: ০২:২৭, ২১ এপ্রিল ২০১৮

নাটোরে পুত্রবধুর দাবীতে অনশন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ দুই বছর আগে শুরু হয় প্রেমের সম্পর্ক। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিক ইমরান হোসেন মাহবুবা মাসুদ রুসমিলা লরিন (২৫) কে একাধিকবার দৈহিক মিলন করে। বিয়ের কথা বললে প্রেমিক নানা অজুহাতে এড়িয়ে যায়। কিন্তু স্বামীর সংসার করতে নাছোড়বান্দা লরিন প্রেমিক ইমরানকে বিয়ে করাতে রাজী করান। ইমরানের খালার বাসায় নিকট কয়েকজনের উপস্থিতিতে বিয়েও হয় তাদের। কথা ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে পুত্রবধূ ঘরে তুলে নেবেন ইমরানের বাবা মোশারফ হোসেন। কিন্তু সেই শুভদিন আসছিল না স্বামী সংসার বঞ্চিত লরিনের। উপান্তর না দেখে শুক্রবার বিকেলে লরিন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মহল্লায় তার স্বামীর বাড়িতে যান। সেখানে পুত্রবধূর অধিকার নিয়ে স্বামীর ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে তাতে বাধা দেন শ্বশুর মোশারফ হোসেনসহ তার নিকট আত্মীয়রা। এসময় শারীরিক নির্যাতন ও লাঞ্চনা-ভৎসনার স্বীকার হন গৃহবধূ লরিন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। তবে লরিনের শ্বশুরকে থানায় ডাকা হয়েছিল। তিনি পুত্রবধূকে ঘরে তুলে নেওয়ার জন্য কিছু সময় চেয়েছেন বলে জানান গুরুদাসপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাস। মাহবুবা মাসুদ রুসমিলা লরিন অভিযোগ অভিযোগ করে জানান, গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মোশারফ হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেনের সাথে প্রায় দুই বছর আগে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। এরপর ইমরান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। সর্বশেষ লরিন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা টালবাহানার পর ইমরান তাকে বিয়ে করতে রাজী হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ মার্চ ইমরারান বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় তার খালার বাড়িতে লরিনকে নিয়ে যায়। সেখানে ১ লা এপ্রিল ইমরান ও তার বিয়ের পর থেকেই শুক্রবার বিকালে তিনি পুত্রবধূর মর্যাদা পেতে পুনরায় তার শ্বশুর বাড়ীতে ১ এপ্রিল ইমরানের পিতা মোরাশফসহ তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত থেকে তাদের বিয়ে দেন। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে তাকে শশুরবাড়িতে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। সর্বশেষ শুক্রবার বিকালে স্বামীর বাড়িতে গেলে তাকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে বের করে দেওয়া হয়। তিনি তার স্বামী সংসার ফিরে না পেলে তার আর সমাজে মুখ দেখাতে পারবেন না বলে জানান তিনি। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর বাবা মাসুদুর রহমান এ্যাপোলো জানান, ইমরান তার মেয়েকে ঘর ছাড়া করেছে। সবাই মিলে তাদের বিয়েও দিয়েছে। এখন স্বীকৃতি দিচ্ছে না। তিনি তার মেয়ের স্বামী-সংসার ভিক্ষা চান। ওই গৃহবধূর শশুর মোশারফ হোসেন দাবি করেন, গত মাসে তিনি ইমরান ও লরিনের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছেলেটি বাড়িতে না থাকায় ছেলের বউকে ঘরে তোলা হয়নি। তবে ২৫এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে লরিনকে পুত্রবধূর মর্যাদা দেওয়া হবে। গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস জানান, মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছেলের বাবা মোশারফকে থানায় ডাকা হয়েছিল। তিনি তার ছেলের বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। ২৫ এপ্রিল তার ছেলেকে থানায় নিয়ে এসে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাবেন।
×