ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে মাদ্রাসা থেকে পালালো ১০ বছরের জিম, আটক ১

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ২১ এপ্রিল ২০১৮

নাটোরে মাদ্রাসা থেকে পালালো ১০ বছরের জিম, আটক ১

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ গতরাত তিনটার দিকে নাটোরের গুরুদাসপুর চাচকৈড় বাজার পাড়ায় একটি দোকানের সেডের নীচ থেকে শোনা যাচ্ছিল শিশু কান্নার শব্দ। কান্নার শব্দ শুনে আশে-পাশের বাসিন্দারা খোঁজ নিতেই বেরিয়ে আসে পায়ে লম্বা লোহার শিকল পড়া আনুমানিক ১০ বছর বয়সী এক সুশ্রী শিশু কণ্যা। নাম তার জিম। তার কেন এ অবস্থা জানতে চাইলে আরো জোরে কান্না। শুধু বলছিলো, ‘পালাইয়া আইছি, আর যামু না। আমারে বাঁচান। আমারে আবার পাঠাইলে মইরা যামু’। জিম আক্তার (১০) নামে এই শিশু কন্যাটি উপজেলার একটি মাদ্রাসা থেকে এভাবেই পা’তে শিকল পড়া অবস্থায় পালিয়ে আসে । পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জিমকে উদ্ধার করে তার অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হুজুর ইয়ারুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। শিশু কন্যা জিম আক্তার উপজেলার কাছিকাটা দক্ষিন পাড়া গ্রামের মৃত. আয়নুল হকের মেয়ে। জানা যায়, জিম আক্তারের মা মিনিয়ারা বেগম তাকে পার্শ্ববর্তী চলনালী গ্রামে একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনার জন্য ভর্তি করলে সে মাঝে-মধ্যে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসতো। সে যাতে আর মাদ্রাসা থেকে পালাতে না পারে সেজন্য ওই মাদ্রাসার হুজুর ইয়ারুল ইসলাম শিশুটিকে লোহার শিকল পড়িয়ে রাখতো। শিকল পড়ানোর যন্ত্রনায় সইতে না পেরে শুক্রবার রাত তিনটার দিকে সে টয়লেটে যাবার অজুহাতে পা’য়ে শিকল লাগানো অবস্থায় পালিয়ে যায়। পরে সে গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাচকৈড় বাজার পাড়ার রাস্তার পাশে দোকান ঘরের সেডের নীচে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। এসময় তার কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে একটি বাড়ীতে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার সকালে ওই শিশু কন্যাটিকে উদ্ধার করে। পরে তার কাছ থেকে সমস্ত ঘটনা শুনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মাদ্রাসার শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। মেয়েটির মা মিনিয়ারা বেগম জানান, তার মেয়ে পড়াশুনা অমনোযোগী। পড়তেই চায় না। তার জন্য মাদ্রাসার হুজুরকে বলেছিলাম শাসন করার জন্য। কিন্তু হুজুর যে এমন করবে বুঝতে পারি নাই। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং দুপুরে তার মায়ের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসার হুজুর ইয়ারুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
×