ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী

সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২২ এপ্রিল ২০১৮

সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত

দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার মহাসড়কে যখন চলছে, সে সময় না বুঝে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সামনে রেখে অযথা কোটা পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে পেছনে থাকা ঘাপটি মারা প্রতিক্রিয়াশীল চক্র দেশে অশান্তির পাঁয়তারা সৃষ্টির প্রয়াস নিয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাচ্ছি ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার জন্য পাশাপাশি প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আসলে যারা কোটা পদ্ধতি নিয়ে এত দিশেহারা তাদের অনেকেই হয়ত কখনও ভেবে দেখেনি সরকারী চাকরি এ দেশে বড়জোর হলে প্রায় ১৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করে থাকে। আর বিসিএসে বছরে গড়ে দুই হাজারের মতো চাকরি হয়। গত সাড়ে নয় বছরে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছে সেখানে কর্মসংস্থান মূলত তৈরি হয়েছে অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয়। পাশাপাশি বেসরকারী খাতে প্রায় দুই কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও কোটা পদ্ধতি নিয়ে যেহেতু অযথা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে এ পদ্ধতির অবসান ঘটিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করলেন যে, তিনি জনকল্যাণ এবং জনআকাক্সক্ষাকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়ে থাকেন। এখানেই তিনি জয়ী। এদিকে জনগণের ইচ্ছা অপব্যবহার করে যারা ভুল পথে পরিচালিত করার খায়েশ করেছিল, সেখানে তাদের মুখে ঝামা ঘসে দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র-নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য আলাদা ব্যবস্থার কথা বলেছেন। যে প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- পরিচালনা করেছে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ঘোষণা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে তস্করের মতো হামলা ধ্বংসযজ্ঞ যারা করেছেন তারা কখনও কোন সাধারণ ছাত্রছাত্রী হতে পারে না। গোয়েন্দারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনবেন বলে আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কোটা পদ্ধতিকে অবলুপ্ত করার পক্ষে অভিমত দিয়ে আসছিলেন। এমনকি শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ও কোন প্রথা বিলুপ্তির পক্ষে মত দিয়েছিলেন। এমন অবস্থায় যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসা হামলা করেছিল, তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি নীল নক্সা করেছিল বলে প্রতীয়মান হয়। মাঝখান থেকে নিরীহ ছাত্রছাত্রী যারা আন্দোলন করছিল, তারে ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ফায়দা তুলতে চেয়েছিল। তারেক জিয়ার বিদেশ থেকে টেলিফোন তার জ্বলন্ত প্রমাণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় ও তার পরিবার-পরিজনের ওপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা যে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র কাজ করেছে তারা দেশের শত্রু এবং পঞ্চম স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। কত বড় পাষ- ও নির্লজ্জ এবং হিংসাশ্রয়ী রাজনীতির বেড়াজালে এরা আবদ্ধ যে, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের বাসভবনে আক্রমণের মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের অবমাননা কেবল করেনি বরং পুরো শিক্ষক সমাজকে অপমান করেছে। জানি এক সময় এরা আইনের আওতায় আসবে। দেশে যখন প্রবৃদ্ধির সৃষ্টি হচ্ছে তখন বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পুঁজি পাচার না হয়ে দেশে বিনিয়োগ হলে কর্মসংস্থান বাড়বে। মুক্তিযোদ্ধারা এ দেশের স্বপ্নের সন্তান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। উনাদের প্রতি দেশবাসীর রয়েছে অকৃত্রিম শ্রদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর দুঃখজনক মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক অবহেলিত হয়েছেন। তাদের এই অবহেলা ও বঞ্চনার সীমা-পরিসীমা ছিল না। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাদের পুনর্বাসনের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাদের ছেলেমেয়েদেরও চাকরির সংস্থান করেছেন। এখন ভিন্নভাবেও তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা যায়। কোটা নিয়ে যে তুলকালাম ঘটনা ঘটে গেল তা আসলে একটি দুঃখজনক ভুল বোঝাবুঝি বই অন্য কিছু নয়। কেননা মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৫% লোক বাদ দিলে বাকি ৯৫% দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে একাকার হয়ে গিয়েছিল। যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ছয় বছর। বাসায় বাংকার করা হয়েছিল। সেখানে এসে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নিতেন। কখনও আমি কিংবা আমার ফুফাত ভাইরা রান্না করা খাদ্য বাংকারে পৌঁছে দিতাম। আমাদের মতোই দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে ধন্য হয়েছিল। আর যারা রাজাকার-আলবদর তারা পাকিস্তানীদের পক্ষ অবলম্বন করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং যারা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছিল তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন এবং নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এ রাজাকাররা ঢাকায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। এমনকি জেলাভিত্তিক বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরবর্তী পরিকল্পনা তাদের ছিল। একটি জাতিকে মেধাশূন্য করার অপপ্রয়াস গ্রহণ করেছিল। আমাদের দেশের স্বাধীনতা লাভের পর পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশকে নানা ফ্রন্টে বঙ্গবন্ধু গড়তে নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছিলেন। তার অসামান্য কর্মপন্থায় রাষ্ট্র যখন এগিয়ে চলছিল, তখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আর গিরগিটির মতো রং পাল্টানো একদল তাকে নির্মমভাবে সপরিবারে অকৃতজ্ঞের মতো হত্যা করে। জাতি হিসেবে আমাদের কলঙ্কিত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যার অসীম সাহস ও দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছেÑ যুদ্ধাপরাধীদের পা-াদেরও বিচার হচ্ছে। আসলে দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছেন। দেশের অগ্রযাত্রার জন্য উনি যা ভাবেন, অন্যরা হয়ত তা ভাবেন অনেক পরে। এখানেই একজন স্টেটম্যানের সাফল্য। তিনি সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধির জন্য বার বার কর্মসংস্থানের প্রয়াস নিয়েছেন। কোটা পদ্ধতি বিলুপ্তির মাধ্যমে যারা অনুপ্রবেশ করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করতে চাচ্ছিল তারা আর সুযোগ পাবে না। তবে দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। কেননা তারা নানা ছল-ছুতোয় ঘোট পাকাতে ব্যস্ত থাকেন। ঘসেটি বেগমরা যুগে যুগে নানা পন্থায় শাকচুন্নীর মতো বিভিন্ন জনের ঘাড়ে সওয়ার হোন। একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আরও একটি সময়োপযোগী ঘোষণা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আশ্বস্ত করেছেÑ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট বসানো হবে না। বিভিন্ন কারণে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত অভিভাবকরাও তাদের সন্তান-সন্ততিদের পাঠিয়ে থাকেন। সম্প্রতি লিভিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য অনুষদের প্রোগ্রামে ব্যবসা প্রশাসনের ছাত্রছাত্রীদের মান দেখে বেশ ভাল লাগল। দেশের সরকারী হোক, বেসরকারী হোক ছাত্রছাত্রীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বই প্রধান উদ্যোগী ও পরিশ্রমী হিসেবে কাজ করে নিজের হোক বা অন্যের হোক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রশিবির এবং আরেক দল সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারী নিজেদের আখের গোছানোর জন্য যেভাবে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে তথ্যের আদান-প্রদান করে অনর্থক ফায়দা তুলতে সচেষ্ট ছিলেন, তাদের আবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত। নির্বাচনী বছরে প্রতিপক্ষ মিথ্যে অভিযোগ আর ষড়যন্ত্র করতে চেষ্টা করবে। এধসব ঞযবড়ৎু অনুযায়ী তারা নানা অপকৌশল করবে। এ চেষ্টায় তাদের মধ্যে মরিয়া ভাব ফুটে উঠেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী সময়োচিত পদক্ষেপগুণে বেশি সুবিধা করতে পারেনি। নিস্তরঙ্গ জলরাশির মধ্যে ঢিল দিলে যেমন হয় তাদের প্রয়াসও তেমন ছিল। এ ধরনের অপপ্রয়াস করে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করেছিল। দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে আমাদের তরুণ প্রজন্মের ওপর। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা, মেধা-মননের বিকাশ জাতি গঠনে সহায়তা করে থাকে। বর্তমান সরকার সব সময়েই তার বিরোধদের প্রতি নমনীয় ও সহনীয় আচরণ করে আসছে। এটির সুযোগ নিয়ে যেভাবে তথাকথিত সুশীল সমাজ যারপরনাই কাদা ছোড়াছুড়ি ও মিথ্যে অভিযোগের বেসাতি কোটা পদ্ধতি নিয়ে করেছেন তা কহতব্য নয়। প্রতিটি আন্দোলনে শোভন ও অশোভন দিক আছে। মাঝরাত্রিতে হলের দরজা ভেঙ্গে এসে দলগতভাবে যুক্ত না হয়ে বরং সকালে এসে যুক্ত হলে তা অনেক বেশি দূর-দূরান্তে অবস্থানরত গার্জিয়ানদের জন্য শোভনীয় হতো। তাদের সারারাত সন্তান-সন্ততিদের খবরের জন্য অপেক্ষা করতে হতো না। আমাদের প্রাচ্যের সুন্দর ও শোভনীয় অনেক পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলোকে অবশ্যই অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয় ছিল। তরুণ প্রজন্মকে আরও অধিক দায়িত্বশীল হতে হবে। জনদুর্ভোগ ঘটানো যাবে না। সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে দুষ্টু চক্রটি তাদের যে বিশেষ ফায়দা তোলার প্রয়াসে ছিল তা নষ্ট হয়েছে। কোটা প্রথা বিলুপ্তি হওয়ার ফলে চাকরি ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্ব বেড়ে গেল। তাদের মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। পরীক্ষার জন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্র ব্যবস্থা সবার জন্য যে দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে তরুণরা তাদের যোগ্যতা বলে নিজেদের সেখানে প্রমাণ করতে হবে। কেননা আজকের যারা নবীন আগামী দিনের কর্ণধার তারাই হবেন। মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ প্রেমের সঙ্গে দেশ গঠনে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের এ অগ্রযাত্রা বাংলাদেশের চলার পথে বর্তমান সরকার মৌলনীতির সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ হবে। গত সোয়া নয় বছরে দেশের উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের জন্য জননেত্রী অনেক কিছু করে গেছেন। তার উপযুক্ত ও নেতৃত্বগুণে দেশ এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে শিক্ষার মৌল উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মোদ্দীপ্ত শিক্ষা। এ জন্য ছাত্রছাত্রী অবস্থায় কর্মোদ্দীপ্ত শিক্ষার পাশাপাশি সফট স্কিল গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রতিটি বাণিজ্যিক অনুষদে বিজনেস ইনকিউবেটার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চাকরিমুখী শিক্ষার পাশাপাশি যে সমস্ত স্থানে বিদেশীরা চাকরি করছে তাদের স্থানে যাতে এদেশীয় প্রার্থীরা চাকরি পায় সে জন্য পরিকল্পনা কমিশনকে একটি স্টাডি করে খুঁজে বের করতে হবে কোন স্থানে এবং পাঠ-পঠনে কি অসুবিধার কারণে আমাদের দেশীয় চাকরি প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছে না। সেই মিসিংলিঙ্কটি ইন্ডাস্ট্রি থেকে খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী পাঠ-পঠনের ব্যবস্থা করতে হবে। আর অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ থাকবে প্রশ্ন ফাঁস, ভর্তির জন্য কিংবা চাকরির জন্য অযথা ঘুষ না দেয়ার জন্য। যদি নৈতিকতাহীনভাবে অভিভাবকরা ঘুষ না দেয় তবে অন্যায় কর্মও বন্ধ হতে বাধ্য হবে। দেশের অগ্রযাত্রায় মেধাবীদের স্থান হবে সর্বাগ্রে। এদিকে তারেক জিয়ার সঙ্গে সাদা দলের শিক্ষক নেতার কথা নিন্দনীয়। বিএনপির একজন নেতা ব্যারিস্টার যে দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তা নিশ্চয়ই কর্পূরের মতো উবে যাবে। উনি হয়ত দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখে এমন ধরনের উক্তি করেছেন। আসলে যারা কোটা বাতিলের দাবি করেছিলেন তারা সরকারী চাকরি পাওয়ার আশায় করেছেনÑ কিন্তু এটি কোনমতেই বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলন ছিল না। উন্নত শিক্ষার বিকাশ সাধনের জন্য বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ পদক্ষেপের আওতায় আইকিউসির মাধ্যমে ৬৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে জরিপ এবং জরিপ উত্তর এক্সপার্টদের মতামতের ভিত্তিতে চার বছরব্যাপী যে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তা চলতি বছরেই শেষ হয়ে যাবে। এটির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং অধিক সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এদিকে সরকারের শুভ উদ্যোগের কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে মান উন্নত করার প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছিল। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থাও সরকার গ্রহণ করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৮-এর মাধ্যমে ডিসেন্ট কর্মসংস্থানের জন্য সরকার নানামুখী প্রয়াস গ্রহণ করেছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাপিং করার ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজারে অনুপ্রবেশ উপযোগী শিক্ষা, সফট স্কিল এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার মান নির্ধারণ করে উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি এবং ডিজিটাল এডুকেশনকে ছড়িয়ে দিতে প্রয়াস নিয়েছে। আর যার সুফল ওছঅঈ-এর অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে যাতে সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের আওতায় ওছঅঈ থাকে তার জন্য একটি শিক্ষা আইন জাতীয় সংসদে পাস হলে ভাল হতো। ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেম ওয়ার্ক তৈরির প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ্যাক্রিডিশন কাউন্সিল ২০১৭ পাস হয়েছে শিক্ষানুরাগী প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে। বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জার্নালের ইনডেক্সিং করা প্রয়োজনÑ যা ইউজিসি দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে। উন্নত শিক্ষার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময়ে সচেষ্ট রয়েছেন যাতে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা যায় এবং ব্যাপকভাবে শিক্ষার সম্প্রসারণ ঘটেছে। সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করে চলেছে। একটি বিশেষ শ্রেণী কোটা পদ্ধতিতে জটিলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিল। এরা গিরগিটির মতো রং বদলকারী। কর্মসংস্থানের দিকে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। বেসরকারী উদ্যোক্তাদের উচিত দেশীয়দের আগে তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে একটি বিশেষ শ্রেণী বার বার লাভবান হয়েছে। হুজি, জামায়াতী-বিএনপিরা আজকাল বেছে নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে আত্মীয়করণ করে তাদের ধীরে ধীরে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দেয়া। এদের চিহ্নিত করা দরকার। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করা উচিত হয়নি। প্রজন্ম ’৭১ এবং যারা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করেন তাদের নিজেদের স্বচ্ছ থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও দায়িত্বশীলদের আচরণ যথাযথ হতে হবে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। অনগ্রসর শ্রেণীর জন্যও উনি কাজ করে চলেছেন এটি অবশ্যই অব্যাহত থাকবে। লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট এবং অধ্যাপক [email protected]
×