ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে তিন দিনব্যাপী লোকসংস্কৃতি উৎসব

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ২২ এপ্রিল ২০১৮

যশোরে তিন দিনব্যাপী লোকসংস্কৃতি উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বাংলার লোক সমাজের ইতিহাস অতি প্রাচীন, বৈচিত্র্যময় এবং ব্যাপক। দীর্ঘকাল থেকে গড়ে ওঠা লোক সম্প্রদায়ের সামাজিক আচার-আচরণ ও বিশ্বাস, যাপিত জীবন, আনন্দ-উৎসব বাংলার মানুষের প্রকৃত পরিচয় বহন করে। বাঙালীর সেই নিজস্ব শেকড় আর ঐতিহ্যের অনুসন্ধান ব্যাপৃত করতে যশোরে তিন দিনব্যাপী লোকসংস্কৃতি উৎসব শুরু হয়েছে। লোকসংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অঙ্গ লোকসঙ্গীতকে প্রাধান্য দিয়ে ‘ফিরে চল মাটির টানে’ শ্লোগানে নবম বারের মতো এ উৎসবে রআয়োজন করেছে উদীচী যশোর জেলা সংসদ। নতুন বাংলা বছরে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবতাবোধের দীক্ষায় মনুষ্যত্বকে রাঙাতে নিজেদের ঐহিত্য বজায় রেখে টাউন হল মাঠের রওশন আলী মঞ্চে উৎসব আসর জমিয়েছে উদীচী। গত শুক্রবার বিকেলে সংগঠন ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হলেও সন্ধ্যার পর মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রবীণ বাউল শিল্পী দিদার বাউল। উৎসবের প্রথম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হুসাইন শওকত, উদীচীর উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আব্দুস শহীদ লাল, এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন ও সাবেক সভাপতি সৌমেশ মুখার্জী। উৎসব উদ্যাপন পরিষদ ১৪২৫ এর আহ্বায়ক শেখ মারুফ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মাসুদ পারভেজ মিঠু। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন খন্দকার রাজিবুল ইসলাম টিলন। উদীচীর সহ-সভাপতি হায়দার আলী চৌধুরী সনুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবারের উৎসবটি তার প্রতি উৎসর্গ করা হয়। শুভঙ্কর গুপ্তের সঞ্চালনায় প্রথম দিনের উৎসবে উদীচীর নির্বাচিত শিল্পীদের পরিবেশনার পাশাপাশি লালন, হাসন, রাধা রমন, শাহ আব্দুল করিম, দুদু শাহ, পাঞ্জু শাহ ও বিজয় সরকারের গান পরিবেশন করেন যশোরের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্পীরা। যাদের কণ্ঠের যাদুতে যশোরবাসী বাঙালীর মাটির সুরের স্বাদ পায়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন ওয়াজিহা, নুরুল ইসলাম, গোবিন্দ বিশ্বাস, শফিকুল ইসলাম বাবু, নীতু শীল, মাছুম বাউল, বৈশাখী, রাসেল, গৌরব, রিগ্যান, জয়গোপাল, শরিফুল প্রমুখ। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মঞ্চে আরও গান পরিবেশন করেন ঢাকার শিল্পী সালমা, খৈবর উদাস, ভগিরত মালো, তাপস প্রমুখ। শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠানে যশোরের বিভিন্ন শিল্পী ছাড়াও ঢাকার শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ উৎসব আয়োজন সম্পর্কে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব বলেন, লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন দিক যদি যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়, তাহলে লোকসংস্কৃতির পক্ষে জনমানসে এক ধরনের প্রণোদনা তৈরি হবে, যা এই সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশে বিশেষ সহায়তা করবে। সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান বলেন, গ্রাম প্রধান বাংলাদেশে গ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠী শত শত বছর ধরে তাদের নিজস্ব ধ্যানধারণা ও জীবনযাপন প্রণালীকে ভিত্তি করে নানামুখী যে সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে তাই আমাদের লোকসংস্কৃতি। লোকসংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অঙ্গ লোকসঙ্গীত বাংলার লোক উৎসবের প্রাণ।
×