ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাটোরে যুবলীগ নেতার পশু হাসপাতাল দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০২:৪৩, ২২ এপ্রিল ২০১৮

 নাটোরে যুবলীগ নেতার পশু হাসপাতাল দখলের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ নাটোরে ইউনিয়ন সরকারী পশু হাসপাতাল (কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট) ভাংচুর ও দখল করে নিজ কার্যালয় বানানোর চেষ্টা করে জনগনের প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভাংচুর চালিয়েছে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম কালিয়া ও তার সমর্থকরা। রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার শংকরভাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার কথা রয়েছে। নাটোর সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভ্যাটেনারী ফিল্ড এসিন্টেন্ট মজিবুর রহমান ও পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার বড় হরিশপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম কালিয়া তার সমর্থকদের নিয়ে শংকর ভাগ এলাকায় অবস্থিত পশু হাসপাতাল (কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট) দখল করতে যায়। এসময় তারা হাসপাতালের প্রজনন কর্মী আব্দুল আজিজকে বের করে দিয়ে দখল নেয় এবং ভাংচুর চালায়। বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পরে দখলে ব্যর্থ হয়ে কালিয়া বাহিনী সেখানকার আসবাবপত্র ভাংচুর করে তাদের শাসিয়ে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে শংকরভাগ হাটটি বর্তমানে এলাকার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই হাটকে বানচাল করার লক্ষ্যেই কালিয়া বাহিনী একটা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে এঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এব্যাপারে রবিবার বিকালে মাইকিং করে শংকরভাগ স্কুল মাঠে অত্র এলাকার লোকজনকে নিয়ে আলোচনায় বসে শংকরভাগ হাট কমিটি। স্থানীয় কয়েকজন জানান, ইউনিয়ন সভাপতি বিনা অনুমতিতে প্রভাব খাটিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে নিজের অফিস বানানোর চেষ্টা করছেন যা অবশ্যই আইনত দন্ডনীয়। একজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে হয়ে এমন কাজ করা তার মোটেও উচিত হয়নি। এছাড়া হাসপাতাল ভাঙ্গতে বাঁধা দেওয়ায় যুবলীগ নেতা স্থানীয় কতিপয় লোকজনকে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। নাটোর সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভ্যাটেনারী ফিল্ড এসিন্টেন্ট মজিবুর রহমান আরো জানান, জেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্ত স্যার ছুটিতে থাকায় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে সময় লাগছে। এব্যাপারে বড় হরিশপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম কালিয়া জানান, শংকরভাগ হাটটি ইজারা নেওয়ার পরে হাট পরিচালনা করার জন্য আমাদের একটি অফিস প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরকারী পশু হাসপাতালটি পরিত্যাক্ত ছিল। তবে ওই পশু প্রজনন কেন্দ্রটি অফিস বানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। শংকরভাগ হাট কমিটির সভাপতি হোসেন জানান, হাটকে কেন্দ্র করে এর আগেও তারা হট্টগোল তৈরী করেছে। কিন্তু এখানে এসে বিভিন্ন লোককে হুমকি দিয়েছেন। এই সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা বিরুদ্ধে স্থানীয়দের প্রতিরোধ করা যৌক্তিক। সরকারি প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই ভাঙ্গা উচিত নয় বলে জানান তিনি। জেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন জানান, এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রত্রিয়া চলমান আছে। আমি ছুটিতে আছি। তবে আজ (রবিবার) মামলা না হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সোমবার মামলা দায়ের করা হবে। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
×