ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করব

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করব

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, তিনি যদি তার কথা মতো তিন সপ্তাহের মধ্যে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি বাতিল করেন, তবে তাকে এর ‘ফল’ ভোগ করতে হবে যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘আনন্দদায়ক’ হবে না। ইরানকে পরমাণু কর্মসূচী থেকে বিরত রাখতে চুক্তিটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি পরিত্যাগ করা হলে ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু করতে পারে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ মনে করেন না পরমাণু চুক্তিটি টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে ট্রাম্প আগামী ১২ মে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছেন। ২০১৫ সালে চুক্তিটি হওয়ার পর ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো ক্রমাম্বয়ে শিথিল করা হয়েছিল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো থেকে রেহাই পেতে প্রেসিডেন্টকে নিয়মিত ব্যবধানে এটি অনুমোদন করতে হয়, বিষয়টি চুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ। জারিফ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এ থেকে কার্যকরভাবে বেরিয়ে আসলে ইউরোপীয়দের পাশাপাশি ইরানও চুক্তি মেনে চলতে অস্বীকার করবে। তিনি মনে করেন এই বিকল্পটির সম্ভবনা খুবই কম । ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়া তেহরানে বিবেচনাধীন একটি বিকল্প, এ ছাড়া ইরানের পার্লামেন্টে অন্যান্য বিকল্পগুলো নিয়েও এখন আলোচনা করা হচ্ছে। নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। জারিফ বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের সামনে চুক্তি বাতিল করার বিকল্প খোলা রয়েছে। কিন্তু তা করলে তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের কথা বিবেচনা করে আমরা আমাদের করণীয় ঠিক করব। আমি শুধু এতটুকু বলতে পারি যে সেই পরিণতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শুভ হবে না।’ এ দিকে ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল না করার জন্য যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পার্লামেন্ট সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প জানুয়ারি মাসেই হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন যে, তিনি ১২ মে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরবর্তী আদেশে সই করবেন না। ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর থেকেই ইরান বিকল্পগুলো চিন্তা ভাবনা শুরু করে। তবে জারিফ স্পষ্ট করে বলেছেন, নতুন বিকল্প নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ইরানের ছিল না এবং চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগও তেহরান ওয়াশিংটনের প্রতি করতে চায়নি। তিনি বলেন, ইরান যেন বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য করতে না পারে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রতি পদক্ষেপে বাধা তৈরি করে যাচ্ছে। জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশনের (জেসিপিওএ) আওতায় নিষিদ্ধ শিথিল হওযার পর ইরানকে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে জড়াতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, (ট্রাম্প প্রশাসনের) গত ১৫ মাসের কর্মকা- পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তারা একের পর এক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। জারিফ বলেন, ‘আমি মনে করি না, যারা বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করে চলে তাদের চুক্তি নিয়ে কোন দাবি তোলার সুযোগ আছে। জারিফ এখন ছয় দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এ সফরে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরমাণু চুক্তি বাতিল হবে কী হবে না এ নিয়ে চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় কূটনৈতিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও জারিফ ততটা উদ্বেগ দেখাননি। তিনি মনে করেন চুক্তিটি হয়তো শেষ পর্যন্ত টিকে যাবে। ইরান ও ছয়টি পশ্চিমা দেশের মধ্যে ওই চুক্তি হয়েছিল। এখানে যুক্তরাষ্ট্র একটি পক্ষ হলেও দেশটির অংশগ্রহণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে ফিরে গেলে ইরানের সেটি করা সম্ভবনা খুব বেশি বলে জারিফ মনে করেন। তিনি বলছেন, তার দেশ একতরফাভাবে চুক্তি পালন করবে না। ইরান চুক্তিতে সই করেছে এ থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য তাই সে সম্ভাবনা না থাকলে ইরানের চুক্তি মেনে চলার কোন কারণ নেই বলে জারিফ বলেন। -ওয়েবসাইট
×