ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামিলা রহমান

নান্দনিক সাজে গয়না

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

নান্দনিক সাজে গয়না

গয়নার ক্ষেত্রে নকশা ও উপকরণের বৈচিত্র্যতা সাজগোজে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। বিশেষ করে মেটালের গয়নার চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দামি ধাতুর বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে দস্তা, পিতলের মতো সুলভ ধাতু। সঙ্গে থাকছে নানা ধরনের পাথর, পুঁতি, কড়ি, কাঠ, প্লাস্টিক, কাপড় এমনকি সুতাও। সাবেকি নকশার পাশাপাশি থাকছে একেবারে ভিন্নধর্মী নতুন ডিজাইন। তাই সহজলভ্য এসব গয়না সবাই পছন্দমতো কিনছে আর সাজিয়ে তুলছে নিজেকে। সাজের অনুষঙ্গ হিসেবে গয়নার ব্যবহার অনেক প্রাচীন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই মানুষের মধ্যে গয়নার প্রচলন ছিল। সেসব গয়না ছিল প্রকৃতি থেকে খুঁজে নেয়া নানা রকম উপাদানে তৈরি। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে গয়নার ধরন। আধুনিক এ সময়ে স্বর্ণ, রুপা ও হীরার গয়নার পাশাপাশি নারীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মেটালের বিভিন্ন ডিজাইনের গয়না। এ্যান্টিক ডিজাইনের গয়নায় প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ধাঁচ ভেঙে এসেছে নতুনত্ব, যা প্রাকৃতিক পরিবেশবান্ধব এবং ফিউশনধর্মী। নারীরা অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এখন এ ধরনের গয়নাতেই। গয়নাগুলোতে রয়েছে নিত্যনতুন ডিজাইন। দামটাও তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে মেটাল ও এ্যান্টিকের গয়না এখন সাজগোজের একটি বিরাট অনুষঙ্গ। দেশীয় অনেক ফ্যাশন হাউস এখন তৈরি করছে এসব পরিবেশবান্ধব গয়না। শুধু নতুনত্ব আনলেই তো আর হবে না। নান্দনিকতার সঙ্গে যুক্ত হয় পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিও। গয়না তৈরিতে এখন ব্যবহার করা হয় পাখির পালক। এমনকি অব্যবহৃত কাঠ, পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি গয়না, নারিকেলের ছোবড়ার তৈরি আর মাটির গয়না তো বেশ আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। এসব গয়নায় বাঙালিয়ানা সাজটাও রয়েছে। গয়নাগুলো শাড়ি, টপস কিংবা সালোয়ার-কামিজসহ সব পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। এছাড়া পাশ্চাত্য ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গেও বেশ মানায়। অবশ্যই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না পরতে হবে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই এসব হরেক রকম প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি গয়নার ব্যবহার নারীকে যেমন নান্দনিকতায় সাজায়, তেমনি সাধারণ সাজের মধ্যে দিচ্ছে ভিন্নতা। তাই অফিস বা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতে কিংবা বাড়িতে এসব মেটালের গয়না পরা যায়। শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন হালকা বা ভারি মেটালের গয়না। এসব গয়নায় কখনো পিতলের সোনালি রং, কখনও এ্যান্টিক বা কপার রঙের প্রলেপ দেয়া। গলায় অনেকে বড় ত্রিকোনাকার গোলাকার ঝুলনি দেয়া কোন লকেট পরতে পারেন। লকেট মোটা কোন চেইন বা মালার সঙ্গে লাগানো থাকতে পারে কিংবা গলার সঙ্গে লাগোয়া কোন নেকলেসও দিব্যি মানিয়ে যাবে। শাড়ির সঙ্গে কানে মাকড়ি বা ঝুমকা গলায় কাঠের মাদুলিও পরতে পারেন। গলায় ভারি গয়না পরলে কানে ছোট দুল পরুন। হাতের গড়ন বুঝে পরা যেতে পারে বালা, চুড়ি কিংবা ব্রেসলেট। যাই পরা হোক না কেন, তা হতে পারে কাঠের তৈরি বালা, লেসের চুড়ি কিংবা চিরায়ত বাঙালী নারীর পছন্দ রেশমি চুড়ি। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরতে পারেন কাঠ, বাঁশ, বেত, কাপড়, পুঁতি, স্টোন ও পার্লের তৈরি গয়না। সুতার টারসেলের সঙ্গে কড়ি ও বিডস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভিন্নধর্মী গয়না। আরও আছে পায়ের মল, বিছা, আংটি ও টিকলিসহ চুলের অনুষঙ্গ। পোশাকের সঙ্গে গয়না যোগ করে বাড়তি সৌন্দর্যের মাত্রা। তাই নগরীর ফুটপাথ থেকে শুরু করে সব দোকানেই গয়নার পসরা বসে। এছাড়া বেশ কিছু ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাবে এ ধরনের গয়না। নানা ডিজাইনের মেটালের তৈরি গয়না, পার্ল, পুঁতি, মাটির, বিডসের ও নানা উপাদানের কিছু গয়না পাওয়া যাবে নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, কর্ণফুলী মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, মল্লিকা প্লাজা এবং রাপা প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটে। স্কুল-কলেজ বা মার্কেটের পাশ ও ফুটপাথসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনতে পারেন আপনার পছন্দের গয়নাটি। আজকাল অনলাইনে সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের নিজস্ব নকশা ও উপাদানে তৈরি পছন্দমতো গয়না কিনে নিতে পারেন। ছবি : মাহমুদুল হক মনি
×