ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাহারি পণ্যের সমাহার থাই মেলায়

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

বাহারি পণ্যের সমাহার থাই মেলায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ থাইল্যান্ডের বেশ কিছু পণ্যের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশের বাজারে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে যেমন থাই খাবার তৈরির কাজে কিছু ফলমূল বা সবজির ব্যবহার রয়েছে তেমনি উন্নতমানের প্রসাধনী ব্যবহারকারীর কাছেও দেশটির প্রসাধনীর কদর রয়েছে। এ ছাড়া ক্যান বা প্যাকেটজাতসহ বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজড খাদ্যপণ্যের ক্রেতাও রয়েছে দেশে। এ ছাড়া বেশ কিছু নতুন নতুন থাই পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চার দিনব্যাপী থাই পণ্যের মেলার আয়োজন করেছে থাই সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্নয়ন বিভাগ (ডিআইটিপি)। এ মেলায় থাইল্যান্ডে প্রস্তুতকৃত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে পারফিউম, ব্যাগ, স্যান্ডেল, মেশিনারিজ, প্লাস্টিকসহ থাইল্যান্ডে তৈরি নানা পণ্যের সমাহার রয়েছে প্রদর্শনীতে। আছে থাইল্যান্ডের বিশেষ কিছু ফলমূল। আছে অর্কিডের টব, সূক্ষ্ম কারুকাজ করা থাই হ্যান্ড ব্যাগ। বিভিন্ন পাথর ও মেটালের গলার মালা, কানের দুল, সিরামিকের তৈরি গয়না, কাপড়ের তৈরি ফুলেল ব্যান্ড, ক্লিপ, খোঁপা, কাঁটাও রয়েছে। এ ছাড়া কসমেটিক্স, কোকারিজ, বিউটি পার্লার সরঞ্জাম, হেয়ার শ্যাম্পু, পোশাক, ব্রেসলেট, হরেক রকমের জুতা, ব্যালেরিনা শো, গয়নাসহ অনেক কিছু। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের থাই শুকনো খাবার-মিষ্টি তেঁতুল, জেলি চকলেট, সস, আচার, জুস থেকে শুরু করে হরেক রকমের মুখরোচক খাবার। মেলায় অংশ নিয়েছে থাই বিমস্টেক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড। এটি থাইল্যান্ডের একটি দ্রুত বর্ধনশীল ফল ও কৃষিপণ্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান। শুধু বাংলাদেশই নয় এই কোম্পানি এখন ভারতসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে তাজা ফল ও কৃষিপণ্য রফতানি করছে। এটি থাই সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে ‘গুড মেন্যুফেকচারিং প্রেকটিস’ (জিএমপি) এবং ‘হেজারড এ্যানালাইসিস এ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কন্ট্রোল পয়েন্ট’ (হেপা) সার্টিফিকেট প্রাপ্ত। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ এবং নানাভাবে তদন্ত করে যোগ্যতা যাচাই বাছাইয়ের পরই থাই সরকার এ ধরনের সার্টিফিকেট প্রদান করে। জিএমপি হচ্ছে ফলমূল এবং কৃষিপণ্যের মান নিশ্চিত করার সার্টিফিকেট। হেপা হচ্ছে এইসব পণ্যের রফতানি প্রক্রিয়ায় যেসব ব্যক্তি জড়িত থাকে তারা রোগমুক্ত কী না তা নিশ্চিত হওয়ার সার্টিফিকেট। এইসব সার্টিফিকেট এখন নিরাপদ খাদ্যের ইস্যুতে গোটা বিশ্বে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমদানিকৃত খাদ্যের মান ও বিশুদ্ধতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই নানা ধরনের আইন প্রচলিত রয়েছে। বাংলাদেশে তাজা ফল ও কৃষিজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারক দেশের ফায়টোসেনিটারি সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। রোগ ও কীটনাশকমুক্ত উদ্ভিদ থেকে এইসব পণ্য উৎপাদিত হয়েছে কী না এটি নিশ্চিতের জন্যই এই সার্টিফিকেট দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এই সার্টিফিকেটের শর্ত দিয়েই কৃষিপণ্য আমদানির অনুমতি প্রদান করে। সম্প্রতি ইউরোপসহ উন্নত বিশ্বে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ জন্য তারা জিএমপি এবং হেপা সার্টিফিকেটও বাধ্যতামূলক করেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত এখনও হেপা বাধ্যতামূলক না করলেও কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে জিএমপি সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করেছে। নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শীঘ্রই বাংলাদেশের কৃষি বিভাগ তাজা ফলমূল ও কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে জিএমপি ও হেপা সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করবে বলে জানা গেছে। মেলায় অংশ নেয়া এ প্রতিষ্ঠানটির ৭৩ নং স্টলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪১ ধরনের সুস্বাদু ফলের সমারোহ রয়েছে এখানে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাম্বুটান ফল। এটি অনেকটা কদম ফুলের মতো। ফলের ভেতরের অংশটা সাদা লিচুর মতো। আছে পুরোটাই হলুদ বর্ণের চ্যারি ম্যাঙ্গো। মেলায় ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি, ম্যাঙ্গো স্টিন ৬৫০ টাকা, থাই ডুরিয়ান ৬৫০, থাই আম ৫০০, থাই পেঁপে ৫০০ টাকা, রকমিলন ফল ৫০০, ওয়াশিংটন আপেল ৬০০ টাকা, কিওয়াই ফল ৬৫০ টাকা, হানি মিলন ৫০০ টাকা, কমলা ৬০০ টাকা, লঙ্গান ফলের কেজি ৫০০ টাকা ও মিষ্টি তেঁতুল ৩০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুনতিকা আফার্ড (ওয়ে) বলেন, এ প্রদর্শনীতে আমরা অনেক তথ্য সরবরাহ করতে পারছি। দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের মাঝে তুলে ধরছি থাইল্যান্ডের বিভিন্ন সুস্বাদু ফলের বিবরণ। মেলায় চকবাজারের প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ব¡াধিকারী মোঃ শাহেদ চৌধুরী বলেন, আমরা মূলত চুলের সাজগোজের আইটেমগুলো থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করে বিক্রি করে থাকি। দেশের বিভিন্ন স্থানের খুচরা বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে পণ্যগুলো কিনে নিয়ে বিক্রি করে। এই পণ্যগুলো মূলত উন্নতমানের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। বাংলাদেশে এ ধরনের চুলের ক্লিপগুলোর এখন অনেক চাহিদা।
×