ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জব্বারের বলীখেলায় এবারের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার জীবন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

জব্বারের বলীখেলায় এবারের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার জীবন

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের বলীখেলা বাঙালীর ঐতিহ্য। চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার ১০৯তম আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। ১০৮ বছর আগে বনেদি ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার এই আয়োজন শুরু করেন। এবার চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আসা জীবন বলী। তাকে ২০ হাজার টাকা সম্মানী দেয়া হয়েছে। অপরদিকে রানার আপ হয়েছেন কুমিল্লার শাহজালাল। তাকে দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে কৌশলের এই খেলা চলেছে সেয়ানে সেয়ানে। কিন্তু খেলা শেষ করার জন্য আয়োজকরা জীবনকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করলেও মিডিয়া ও উপস্থিত দর্শক তা মেনে নেয়নি। রেফারিদের পক্ষ থেকে শাহজালালকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। সাধারণ বাউটে বিজয়ী ৩৭ জনকে মেডেল ও ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়েছে। বুধবারের আয়োজনে সাধারণ ও চ্যালেঞ্জিং বাউটে ৮৬ জন বলী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে চ্যালেঞ্জিং বাউটে খেলেছেন ৮ জন। কিন্তু টাঙ্গাইলের তুষার চ্যালেঞ্জিং বাউটে খেলতে চাইলেও তাকে খেলতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই খেলাকে ঘিরে মেলার আয়োজনও চলছে। গ্রাম বাংলা থেকেই বৈশাখীমেলার আয়োজন শুরু হলেও গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপসী সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য দিক ফুটিয়ে তুলতে চট্টগ্রামে সেই শতবর্ষ আগ থেকেই চলে আসছে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের অবয়বে। মূলত ১৯০৯ সালে সর্বপ্রথম এ মেলার আয়োজন করা হয় ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে। এ খেলাকে ঘিরে চট্টগ্রামে সোমবার থেকে তিনব্যাপী মেলার আয়োজন শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানের আশপাশ এলাকায়। দেশের অজপাড়া গাঁয়ে তৈরি হস্তশিল্পের বিশাল সমাহার এ মেলায়। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা নিয়ে তিন দিন ধরে এ চত্বরকে ঘিরে নিজেদের অবস্থান ঠিক করে নিয়েছে। মেলার আয়োজনকে ঘিরে তিন দিন ধরে নগরীর নন্দনকানন থেকে শুরু করে কোতোয়ালী মোড় পর্যন্ত অনেকটা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে রাস্তার দুধার। তিন দিনব্যাপী বৈশাখীমেলাকে ঘিরে দেশের উত্তরাঞ্চল ছাড়াও নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই, সীতাকু-, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ি থেকেও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যবসায়ী নগরীতে আসতে শুরু করেছেন। কেউ খাবারের পসরা নিয়ে আবার কেউবা বসেছেন ঘটিবাটি আর রান্না ঘরের তৈজসপত্র নিয়ে। শিশুদের নজর কাড়তে বিচিত্র রকমের খেলনার চালান এসেছে কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকে। কাঠ ও বাঁশের তৈরি তৈজসপত্রের সরবরাহ নিয়ে তিন পার্বত্য অঞ্চল থেকে ছুটে এসেছে আদিবাসীরা। এদিকে খাট পালং আলনা আর সেগুন কাঠের আসবাবপত্র রংবিহীন অবস্থায় রাঙ্গামাটি থেকে কয়েক ব্যবসায়ী যোগ দিয়েছেন এ মেলাকে ঘিরে। শহুরে ফার্নিচারের নক্সির ছোঁয়া বা ডিজাইন পার্বত্যাঞ্চলের কারিগরদের মাঝে পুরোপুরি অর্জন নেই। তবুও চেষ্টার কমতি ছিল না পরিস্ফূটনে। এবারের সরবরাহে অনেকটা কৌশলী নকশার আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে কাঠের আসবাবপত্রে। গত মঙ্গলবার বিকেলে লালদীঘি পাড়ে অনেকটা মেলার আমেজ শুরু হলেও শেষ হবে তিন দিনের পরিবর্তে প্রায় এক সপ্তাহে।
×