ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৭৮ কিমি বেগে রাজধানীতে কালবৈশাখীর তাণ্ডব

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

৭৮ কিমি বেগে রাজধানীতে কালবৈশাখীর তাণ্ডব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৭৪ থেকে ৭৮ কিমি বেগে বুধবার সন্ধ্যার পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এ সময় ধূলিঝড়, বজ্রপাত এবং কোথাও মুষলধারে বৃষ্টিপাতের খবরও পাওয়া গেছে। সন্ধ্যা সাতটার পরই ধূলিঝড়ে আক্রান্ত হয়ে পড়ে গোটা রাজধানী। শোঁ শোঁ শব্দে প্রচণ্ডবেগে ধাবিত হতে থাকে কালবৈশাখী। সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত এবং কালবৈশাখীর তা-ব শুরু হয়। এতে বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে। কোন কোন এলাকা বিদ্যুতবিহীন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৪ থেকে ৭৮ কিলোমিটারের মধ্যে। এর মধ্যে আগারগাঁও দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ের গতিবেগ রেকর্ড করা হয় ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার। এছাড়া বিমানবন্দর এলাকায় ঘণ্টায় ৭৮ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে যায় বলে রাতে আবহাওয়া অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাত দশটা পর্যন্ত থেমে থেমে ঝড়োহাওয়া বয়ে যায়। রাতে ঝড়ের গতিবেগ কমে গেলেও তা ছিল ঘণ্টায় ৫৬ কিলোমিটার। অফিস আদালত থেকে সবেমাত্র মানুষজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। আর তখনই ঝড়ের কবলে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে। এতে প্রচ- ভোগান্তির মধ্যে পড়ে ঘরে ফেরে লোকজন। প্রথমে ধূলিঝড়, পরে বজ্রপাত এবং শেষে ঝড়োহাওয়ার তা-বে ভোগান্তির মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমে যায়। পথিমধ্যে অনেকেই কাকভেজা হয়ে ঘরে ফেরে। কোন কোন এলাকায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। বিভিন্ন স্থানে রাস্তা ওপর গাছপালা পড়ে যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। এতেও ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ে লোকজন। ঝড়ের পরে রাজধানীর অনেক রাস্তায় পানি জমে মানুষ ও যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। গাছপালা উপড়ে পড়ায় আর বিদ্যুত চলে যাওয়ায় তেজগাঁও এলাকায় রাত আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ছিল ভুতুড়ে পরিবেশ। ঝড়ের কবলে পড়ে ইন্দিরা রোড এলাকার গাছ ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে যায়। ফলে রাত পৌনে নয়টা পর্যন্ত ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে রাস্তার ওপর পড়ে। যান চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি থামার পর অনেক এলাকায় রাস্তার ওপর উপড়ে পড়া গাছ সরিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এর আগে দুপুরের আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে কালবৈশাখীর বিশেষ সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল এবং পটুয়াখালী অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সন্ধ্যার পরই শুরু হয় কালবৈশাখীর দাপট। গাইবান্ধা ও গফরগাঁওয়ে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে বোরোর ব্যাপক ক্ষতি ॥ জনকণ্ঠ ডেস্ক জানায়, গাইবান্ধা ও গফরগাঁওয়ে বুধবার শিলাবৃষ্টি ও ঝড় হয়েছে। এতে বোরো ধানসহ উঠতি অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতারা এ খবর পাঠিয়েছেন। নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা থেকে জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্যাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে শিলাবৃষ্টির ঘটনায় ঘরবাড়ি ও বোরো ধানসহ উঠতি অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুধবার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ ও সাদুল্যাপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রচ- ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ শিলাবৃষ্টির ফলে সুন্দরগঞ্জে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
×