ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁর আত্রাইয়ে ভূট্টার বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০০:১৩, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

 নওগাঁর আত্রাইয়ে ভূট্টার বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ শষ্য ভান্ডার খ্যাত উত্তরের নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ৮ ইউনিয়নে এবার রেকর্ড পরিমান জমিতে ভূট্টাচাষ করা হয়েছে। বিভিন্ন মাঠে আগাম জাতের ভূট্টা কর্তন শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। কর্তনকৃত ভুট্টার বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ও নদীতীর জুড়ে এখন ভূট্টা কর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। বিভিন্ন বিল থেকে বন্যার পানি আগাম নেমে যাওয়া, অনুকুল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পেয়ে আনন্দিত। আত্রাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে লক্ষ্যামাত্রা ছাড়িয়ে ৪ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম অথচ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে ভূট্টা চাষের আগ্রহ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। উপজেলার হাতিয়াপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, এলাকার যেসব জমিতে পূর্বে বোরো চাষ করা হতো, সেসব জমির অনেক গুলোতেই আমরা এবার ভুট্টাচাষ করেছি। বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই ওঠেনা। কিন্তু ভূট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম দামও তেমন বেশি থাকে। এ জন্য আমরা ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছি। এবারে ভূট্টার ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় আমরা খুশি। উপজেলার ক্ষিদ্র কালিকাপুর গ্রামের কৃষক মোঃ আকরাম হোসেন বলেন, আমাদের এলাকা আলু চাষের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিখ্যাত। উপজেলার সিংহভাগ আলু আমাদের এলাকায় উৎপন্ন হয়ে থাকে। গতবার আলুচাষে লোকসানের শিকার হয়েছি। মৌসুমের শেষদিকে আলুর দাম বাড়লেও এর মুনাফা কৃষকরা পায়নি। মুনাফা পেয়েছে মজুদদাররা। তাই এবার ভূট্টা চাষ করেছি অনেক জমিতে। উপজেলা কৃষি বিভাগের কালিকাপুর ও শলিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কে এম মাহবুব লিংকন বলেন, গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় এবার ভূট্টার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা শুরু থেকেই প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ভুট্টাকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমান ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম কাউছার হোসেন বলেন, সকল প্রকার ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পায়। বিশেষ করে বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিংও করেছি। আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার ও পরামর্শ অনুযায়ী চাষ করায় এবারে ভুট্টার ফলন ভাল হয়েছে । এতে কৃষকরা যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে।
×