ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়ক বেহাল ॥ জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১০ মে ২০১৮

এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়ক বেহাল ॥ জনদুর্ভোগ

সংবাদদাতা, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ, ৯ মে ॥ এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ সড়ক ভাঙ্গাচোরা খানাখন্দে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ কারণে প্রতিদিনই অর্ধলক্ষাধিক পথচারীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া বৃষ্টিতে রাস্তার বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পণ্যবোঝাই যানবাহনগুলোকে গর্তে আটকে থাকতে দেখা যায় হরহামেশায়। এ কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিনেও নেই কোন সংস্কার। হতাশ এলাকাবাসী দ্রুত সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সরেজমিনে জানা যায়, জেলা সদর থেকে ও ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের সায়দাবাদ থেকে এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের হাটে শত শত কাপড় ব্যবসায়ীরা আসেন ঐতিহ্যবাহী এনায়েতপুরে। এই সড়কের বেতিল, জামাত মোড়, আজুগড়া, মেঘলা, কলেজ মোড়, মুকন্দগাতি, চালা, রাজাপুরের সমেষপুর, সায়দাবাদ এলাকাগুলোতে পিচ ও ইট-সুরকি উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এবরো থেবরো খানাখন্দের সড়ক হওয়ায় একটু আধটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে যায়। সায়দাবাদ থেকে এনায়েতপুর প্রায় ২৮ কলোমিটার আসতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। ঝক্কি ঝাক্কিতে জীবনের মায়া অনেক সময় ত্যাগ করার উপক্রম হয় এই সড়ক দিয়ে চলাচলে। খানা খন্দকের এই সড়ক দিয়ে এশিয়া মহাদেশের অন্যতম খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী আসে। হরহামেশা রাস্তায়ই রোগীর মৃত্যু ঘটছে। অনেকে এর জন্য রাস্তাকেই দায়ী করছেন। সড়ক দুর্ঘটনাতো লেগেই আছে। এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতাল, জনতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শেখ রায়হান আলী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিরাময় ক্লিনিক, বেলকুচি জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার রোগী ভর্তি হছে এবং চিকিৎসা নিছে। এই সড়কের নিয়মিত যাতায়াতকারী মানবাধিকারকর্মী ও নারী নেত্রীরুখসানা ইসলাম জয়া, এনায়েতপুর কেজির মোড়ের সিএনজি চালক আব্দুল্লাহ ও জয়েন উদ্দিন ও গাড়ির যাত্রী সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, রোমান ও জেসমিন নাহার রতœা জানান, এনায়েতপুর সয়দাবাদ সড়কটি এখন মরণফাঁদ, প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা, সময়ও বেশি লাগে, সুস্থ মানুষকে অসুস্থ হতে হয়। মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই। এই সড়কের পাশেই অবস্থিত বেলকুচি ডিগ্রী কলেজ, মহিলা ডিগ্রী কলেজ, এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বেতিল উচ্চ বিদ্যালয়, খামার গ্রাম ডিগ্রী কলেজ, বেতিল নুরানিয়া মাদ্রাসা, যমুনা ডিগ্রী কলেজসহ প্রায় ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয় এই সড়ক দিয়ে। খানাখন্দ সড়কের কারণে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ট্রাক ও নসিমন। এই সড়কে নসিমন, করিমন, টেম্পু, ভটভটি, অটোবাইকসহ লাইসেন্সবিহীন ছোট মেশিনে চলাচলরত এ সকল মরণযান রাস্তার পাশে খাদে উল্টে পড়ে থাকতে দেখা যায় অহরহ। খানাখন্দকে ভরা জরাজীর্ণ এ সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কাপড় ব্যবসায়ীরা এনায়েতপুরে উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গিসহ কাপড় কিনতে আসতে অনীহা প্রকাশ করেছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ার পেছনে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
×