ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ডেমরা গণহত্যা দিবস

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৩ মে ২০১৮

আজ ডেমরা গণহত্যা  দিবস

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ১২ মে ॥ রবিবার ডেমরা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে এদিনে ডেমড়াসহ অপর দুটি গ্রামে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৮শ’ ব্যক্তিকে হত্যা করে। এদিন ভোরের আজান দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেড় শতাধিক পাকিস্তানী সৈন্য পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ডেমড়া এবং সাঁথিয়া উপজেলার রূপসী ও বাউশগাড়ি গ্রামে অতর্কিত হামলা চালায়। পাশাপাশি গ্রাম ৩টি ঘিরে ফেলে হানাদার সৈন্যরা এবং নির্বিচারে গুলি চালায়। ঘুমন্ত গ্রামবাসীর গুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে জঙ্গলে, পুকুরে লুকিয়ে পড়লেও পাকসেনারা নির্বিচারে তাদের ধরে এনে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বড়াল নদীর তীরবর্তী এই গ্রাম ৩টিকে নিরাপদ মনে করে বিভিন্ন এলাকার হিন্দু-মুসলমানরা আশ্রয় নেয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল বড় ব্যবসায়ী এবং অবস্থাপন্ন গৃহস্থ। হানাদার পাক সৈন্যদের এই এলাকার সন্ধান দেয় কিছু মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর সদস্য। এর অন্যতম ছিল বেড়া বাজারের আসাদ (স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে আসাদের মৃত্যু হয়)। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান খলিলুর রহমান, মুজিবুর রহমান, আব্দুল গফুর ও মোকশেদ আলী। মৃত্যুঞ্জয়ী এসব ব্যক্তির বয়স এখন ষাটের কোঠায়। তারা সেদিনের সেই বীভৎস হত্যাকা-ের বিবরণ দেন। হানাদার বাহিনী রাত আনুমানিক ৪টায় গ্রাম ৩টি ঘিরে ফেলে। তারা অস্ত্রের মুখে গ্রামবাসীকে জিম্মি করে যুবতী নারীদের ধর্ষণ করে। যুবকদের গুলি ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। পার্শ¦বর্তী দিঘুলিয়া, রতনপুর, নাগডেমড়া, কালিয়ান,বারোয়ানি গ্রামের মানুষজন বিকেলে গ্রাম ৩ টিতে যেয়ে মৃতদেহগুলো গণকবর দেয়। গভীর রাত পর্যন্ত মৃতদেহ কবরস্থ করা হয়। স্বাধীনতার দীর্ঘ এত বছর পরও ডেমড়ায় কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি। পাবনা জেলা পরিষদের উদ্যোগে গত বছর বাউশগাড়ি গ্রামের বাঁশঝাড়ের সেই বধ্যভূমিতে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের জন্য স্থান চিহ্নিত করে একটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
×