ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফুল চাষাবাদে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ১৭ মে ২০১৮

ফুল চাষাবাদে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ইউএসএআইডি’র এ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের সহযোগিতায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ফুলের চাষাবাদ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার বুধবার ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই’র সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফুল ব্যবহারের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বর্তমানে প্রতিবছর সারা পৃথিবীতে ফুলের চাহিদার পরিমাণ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুলের চাহিদা রয়েছে এবং পৃথিবীর ১৪৫টি দেশ ফুল উৎপাদন ও বাণিজ্যিক চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। তিনি উল্লেখ করেন, ফুলের বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবদান মাত্র ০.৩ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশ। তিনি জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের ফুল রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে উক্ত অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুল রফতানি হয়েছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষাবাদ হয় এবং এ খাতের সঙ্গে প্রায় ২ লাখ লোক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। ডিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ফুলের চাষাবাদসহ এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, নতুন নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, এয়ারকন্ডিশন সুবিধা সম্বলিত পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার প্রসারসহ এ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ওয়ার্কশপে চায়না হর্টিকালচার বিজনেস সার্ভিসেস-এর সভাপতি হেইডি ওয়ারনেট মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ফুল চাষকে শিল্প হিসেবে রূপান্তরের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে জলবায়ু এবং মাটির উৎপাদন গুণাগুণ অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষাবাদ এ অঞ্চলের দেশগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে ফুল চাষাবাদ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারজাতকরণ কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে। তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষাবাদের ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে ভিয়েতনাম উল্লেখজনকহারে অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চীন ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুল রফতানি করে থাকে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ফুলের বাজারের পরিমাণ হবে প্রায় ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশকে এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মূল প্রবন্ধে তিনি বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষাবাদকে সফল করার জন্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, স্বল্প সুদে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন প্রদান এবং নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান।
×