ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরে বসে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন সেবাভোগী মা

প্রকাশিত: ০১:৫৫, ১৭ মে ২০১৮

ঘরে বসে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন সেবাভোগী মা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গবর্নমেন্ট টু পার্সন (জিটুপি) পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ঘরে বসে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন একজন সেবাভোগী মা। পাইলট প্রকল্প হিসেবে নিয়ে দেশের সাতটি উপজেলায় এ কর্মসূচী চালু করেছে সরকার। এই পদ্ধতির আওতায় ভাতাভোগীরা অনলাইনের সহায়তায় তাদের ইচ্ছামতো ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে ভাতার অর্থ নিতে পারবেন। এমনকি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে সেবাভোগীদের ভাতার এই টাকা দেয়া হবে। এতদিন এই টাকা পেতে দীর্ঘ সময়ের পাশাপাশি মা দের ভোগান্তির কোন শেষ ছিল না। অনেক সময় ন্যায্য টাকাও পাওয়া যেত না। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর আওতায় ভাতাভোগীর কাছে সরকারী কোষাগার থেকে সরাসরি ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ভাতার অর্থ পাঠাতে জিটুপি পেমেন্ট পদ্ধতির উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই সময় তিনি বলেন, একসময় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে কয়েকদিন লাগতো উপকারভোগীর কাছে পৌঁছাতে। তখন টাকা খোয়া যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকতো। আজ এখানে বসে এক টিপে মিনিটের মধ্যে টাকা চলে গেলো সেবাভোগীর কাছে। তথ্য প্রযুক্তিতে এটা একটি বিপ্লব। মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীর নিকট সরকারী কোষাগার হতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি ভাতার অর্থ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম প্রমুখ। এই কর্মসূচীর অধীনে প্রথামিকভাবে ৭টি উপজেলায় শুধু মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করা হবে। উপজেলাগুলো হচ্ছে-সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ), শ্রীনগর (মুন্সিগঞ্জ), সাভার (ঢাকা), টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা), কালিয়াকৈর (গাজীপুর) এবং ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)। অর্থমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে এই সাতটি উপজেলার ৮ হাজার ৮১১ জন ভাতাভোগীকে জানুয়ারী থেকে মার্চ এই তিন মাসের ১৫০০ টাকা করে প্রদান করেন। তাৎক্ষনিকভাবে ভাতাভোগীরা তাদের ইচ্ছামত ব্যাংক কিংবা বিকাশ ও রকেটে অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যান। এসময় নিজ নিজ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেবাভোগীদের হাতে ভাতার টাকা তুলে দেন। মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সরকারী কোষাগার থেকে সুবিধাভোগীদের ভাতা তাদের ব্যাংক অথবা মোবাইল এ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হবে। এতে ভাতাভোগীদের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি দুর্ভোগও কমবে। নতুন এ পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের সম্পর্কে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অর্থ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এমআইএস-এ সংরক্ষিত থাকবে। যার ভিত্তিতে তাদের ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা যাচাই করে ভাতা পরিশোধ করা হবে। অর্থসচিব বলেন, বাংলাদেশ যে ডিজিটাল হয়েছে সেটার একটি সুফল মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীরা পাচ্ছেন। আমাদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার আরেকটি ধাপ এই সেবা। এখন ৭টি উপজেলায় এই সেবা চালু করলেও পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলার মায়েদের সেবার আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, অনলাইন সিস্টেমে ভাতা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ভবিষ্যতে এখাতের টাকা নয় ছয় হওয়ার সুযোগ থাকবে না।
×