ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তির দৌলতে আজকাল মানুষ বৃহৎ আয়তনের উপন্যাস পড়া ছেড়েই দিয়েছে প্রায়, তাই হয়তো লেখকরাও আর খুব একটা মহাকাব্যিক সাহিত্য রচনায় মনোযোগী নন। এমন বাস্তবতায় ছোট গল্পের কদর আগের চেয়ে আরো বেড়েছে বলেই বোধ হয়। ছোট গল্পেরও ছোট গল্প পশ্চিমা বিশে^ ফ্ল্যাশফিকশন, মাইক

গল্প ভাবনা -বিধান রিবেরু

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ১৮ মে ২০১৮

গল্প ভাবনা  -বিধান রিবেরু

সকল প্রশংসা তাঁরই সপ্তম দিনে নয়, গোটা সাত দিনই এখন তনি হলি ডে মুডে কাটান। এর কারণ পৃথিবী ধ্বংসের যে যজ্ঞ শুরু করবেন বলে তিনি ভেবেছিলেন, সেটা আর তাঁর করতে হচ্ছেনা। তাঁর সৃষ্ট জীবেরাই সেটা সম্পন্ন করে দিচ্ছে। আলে লুইয়া! ইউরেকা অস্বাভাবিক মৃত্যুর শহরে একদিন ঈশ্বর নেমে এলেন। পরিত্রাণ দিতে! দ-বায়সে ছেয়ে থাকা শহরেÑজট পাকানো সব বৈদ্যুতিক তার আর যন্ত্রপাতি, ম্যানহোল থেকে উপচে ওঠা মলমূত্রের দূষিত পানি, গায়েগা লেগে থাকা ঘিঞ্জি বিল্ডিংয়ের সারি, অস্বাভাবিক যানজট, মানুষের ঠাসাঠাসি ভিড়, বাতাসে ছড়িয়ে থাকা সীসাযুক্ত কালো ধোঁয়া, অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন পথঘাট, তালগোল পাকানো আবহাওয়া, ঘনঘন বজ্রপাত আর শিলাবৃষ্টি, নানা ধরনের অপঘাতে মারা যাওয়া মানুষের লাশ, জীবিত মানুষের অসম্ভব লোভ আর নিষ্ঠুরতা ইত্যাদি এবং ইত্যাদি দেখে কিছুনা করেই তিনি ফিরে গেলেন। ভাবলেন, অনেক দিন ধরেই দ্বিতীয় নরকের কথা ভাবছিলেন। এবার পাওয়া গেলো! পুরনো টাতে আর কুলোচ্ছে না। ঈশ্বর আছেন -আমার কাছে পারমানবিক বোমা আছে। -হাহাহা... আমার কাছে সেটা বহু আগেই থেকেই আছে। ডজন খানেক। তো? - তো? বুঝবে তোমার রাজধানীতে যখন বিষাক্ত গ্যাস বোমা ফেলবো, তখন বুঝবে। -আমরা কি বসে থাকবো? আমরা সুপারসনিক মিজাইল দিয়ে তোমাদের গুড়িয়ে দেবো। - আমরা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে তোমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সব ছাই করে দেবো। - তার আগেই তোমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তোমাদের প্রত্যেকটা াগরিক হরোশিমা-নাগাসাকির চেয়েও ভয়ংকরভাবে ঝলসে যাবে। - সেই সুযোগ তোমরা পাবেনা। আমাদের এয়ারডিফেন্স খুবই স্ট্রং। তোমার দেশের মানুষ স্রেফ ছাই হয়ে উড়ে যাবে, এমন অস্ত্র আমরা আবিষ্কার করেছি। - তোমরা আমাদের কিছুই করতে পারবেনা। ঈশ্বর আছেন আমাদের সঙ্গে। -আমাদের সঙ্গেও ঈশ্বর আছেন! নিছক পুরাণের গল্প আগুন চুরির অপরাধে শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে প্রমিথিউসকে। কাজটি তিনি এমনি এমনি করেননি। মানব সভ্যতাকে আলো আর উষ্ণতা দিতে দেবতাদের ঘর থেকে মশালে করে আগুন নিয়ে এসেছিলেন লোকালয়ে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয় দেবতাকূল। শাস্তি হিসেবে আজীবন পর্বতের সাথে শুধু বেঁধে রাখলেও না হয় মানা যেত। কিন্তু প্রতিদিন জিয়ুসের প্রতিনিধি বিশালাকার ঈগল হাত পা বাঁধা প্রমিথিউসের কাছে আসে, আর ঠুকরে ঠুকরে কলিজা খেয়ে চলে যায়। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন প্রমিথিউস। রাতের মধ্যে নতুন কলিজা গজায়। পরের দিন আবার ঈগল এসে সেই কলিজা নিষ্ঠুরভাবে খেয়ে নেয়। এভাবেই চলছে শত শত বছর। একদিন প্রমিথিউসজিয়ুসের প্রতিনিধি সেই ঈগল কেবল লেন, এই ঈগল আমার কলিজা খাওয়ার আগে একটু থাম। ঈগল থামলো। প্রমিথিউস বলল, শোন তোর মালিকজিয়ুসকে গিয়ে জিজ্ঞেস করবি, সে যে অ্যান্টাইয়োপি, ইউরোপা, লিডার মতো নারীদের ধর্ষণ করেছে, তার বিচার হয়েছে কি? ঈগল উত্তরে বলল, সে-ই তোবিচারপতি, দেবতাকূলের রাজা। সর্বশক্তিমান জিয়ুস। তাঁর বিচার কে করবে? প্রমিথিউস এবার হেসে উঠলেন ঠাঠা করে। বললেন, ওরে অন্যায়ের সহচর, তোর বিচারপতিকে বলিস, টাইটানরা এখনো মরে যায়নি। তারা এখন হয় তোসাব-অলটার্ন। কিন্তু একদিন ঠিক ঠিক মাটি ফুড়ে বেরিয়ে আসবে। সেদিন আর বজ্রপাতে কাজ হবেনা। সবার আগে তোর মাথায় সেদিন ‘বর্জ্যপাত’ হবে। হাহাহা...প্রমিথিউসের গগনবিদারী অট্টহাসি। ঈগল চোখ লাল করে করে প্রতিদিনের মতো মহাত্মা প্রমিথিউসের কলিজা খাওয়া শুরু করলো।
×