ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাইহিল জুতো আপনার গোঁড়ালিকে উঁচু রেখে কোমরকে অস্বাভাবিকভাবে সামনে ঠেলে রাখে। প্রকৃতির নিয়মের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে এমন অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাঁটা-চলার কারণে কোমরে প্রচন্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়

ভেবে চিন্তে হাই হিল

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২১ মে ২০১৮

ভেবে চিন্তে হাই হিল

মডেল-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সবধরনের মেয়েদের কাছে হাই হিল পরাটা এখন ফ্যাশানের ব্যাপার। পায়ের সৌন্দর্যের পাশাপাশি উচ্চতার অভাবটাও দূর করে হাইহিল। তাই জুতার হিলের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু ‘সৌন্দর্যবর্ধক’ এই হিল পায়ে দেয়া সম্পর্কে আজই সাবধান হোন। এর থেকে একাধিক রোগ হতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। গাঁটে গাঁটে ব্যথা অন্যান্য জুতার মতো হিল জুতোয় কোন অভিঘাত শোষণ করার ক্ষমতা থাকে না। তা ছাড়া চলার সময় শুধু সামনের দিক ছাড়া পায়ের পাশের দিকটা আড়ষ্ট করে দেয় হাইহিল জুতো। ফলে পা শুধু সোজা রাখা যায়। তাই পদক্ষেপের সমস্ত অভিঘাত এসে পড়ে হাঁটুর ওপর। মার্কিন অস্থি বিশেষজ্ঞদের মতে এর থেকেই শুরু হয় গাঁটে গাঁটে ব্যথা এবং আর্থাইটিসের সমস্যা। তবে হিলের কারণে শুধু হাঁটুর ওপর চাপ পরে না, পরে গোঁড়ালির ওপরেও। কাজেই সারাদিন হাইহিল পড়ে কাটানোর পরে পায়ের প্রতিটি গাঁটে ব্যথা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। পেশীর সমস্যা দেখা দেয় এটা হিল জুতোর পরার সব থেকে খারাপ দিক। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় যাবত হিল জুতো ব্যবহার করলে গোঁড়ালি অনেকটা উঁচু হয়ে থাকে। ফলে গোড়ালির সঙ্গে যে পেশিগুলো টেনডনের মাধ্যমে যুক্ত, তারা ছোট হয়ে যায় এবং পেশিগুলোর ভেতরে নানা পরিবর্তিত হতে শুরু করে। এই কারণে পায়ে প্রচ যন্ত্রণা এবং পেশিতে টান ধরে। কোমরে ব্যথা হাইহিল জুতো আপনার গোঁড়ালিকে উঁচু রেখে কোমরকে অস্বাভাবিকভাবে সামনে ঠেলে রাখে। প্রকৃতির নিয়মের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে এমন অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাঁটা-চলার কারণে কোমরে প্রচ ব্যথার সৃষ্টি হয়। পায়ের পাতা কঠিন হয়ে যায় গোঁড়ালি শরীরের সমভার বহন করে। সেখানে পায়ের পাতা আপনাকে ভারসাম্য দেয় তার নরম প্যাডের মাধ্যমে। কিন্তু হাইহিল প্রকৃতির এই স্বাভাবিক নিয়মকে লঙ্ঘন করে। উল্টো করে দেয় গোঁড়ালি আর পায়ের পাতার কাজ। আসলে হাইহিল পড়ার সময় পায়ের পাতা নেয় সমস্ত শরীরের ভার, আর গোঁড়ালি তখন সহায়ক হয় মাত্র। ফলে ধীরে ধীরে পায়ের পাতা থেকে এই প্যাডের মতো মাংসল অংশটি সরে যায় বা ক্ষয়ে যায়। কোন কোন প্লাস্টিক সার্জেন এই সময় বোটক্স নামের একটি পদার্থ পায়ের পাতায় ঢুকিয়ে দেন, যাতে এর মাধ্যমে পুনরায় পায়ের পাতা নরম হয়। অন্যথায় যন্ত্রণার সৃষ্টি হতে পারে। গোঁড়ালির সমস্যা খালি পায়ে হাঁটলে পায়ের পাতা ও গোঁড়ালির ওপর দেহের ওজনের ভারসাম্য বজায় থাকে। ফলে গোঁড়ালির অস্থিসন্ধিতে কম চাপ পড়ে। কিন্তু হাইহিল জুতো পরলে পায়ের পাতা ও গোঁড়ালির ভারসাম্য নষ্ট হয়, সেই সঙ্গে গোঁড়ালির অস্থিসন্ধিতে এসে পড়ে পুরো শরীরের ভার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গোঁড়ালি মচকে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, সৃষ্টি হয় প্রচ যন্ত্রণার। ‘পারফেক্ট’ জুতার খোঁজ পায়ের এতসব সমস্যা এড়ানোর জন্য দুটো কাজ করা যায়। হয় জুতা পরা একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে, অথবা নির্বাচন করতে হবে আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর জুতা। এখনকার ব্যস্ত সময়ে যেহেতু জুতা পরা বাদ দিয়ে বাসায় বসে থাকার কোন উপায় নেই সুতরাং আমাদের দরকার নিজেদের পায়ের জন্য ‘পারফেক্ট’ জুতা নির্বাচন। যেহেতু অনেক শখ করে জুতা কিনে থাকেন নারীরা, সুতরাং এই জুতা যাতে পায়ের ক্ষতি না করে তার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নেয়া জরুরী। আসুন দেখে নেয়া যাক সঠিক জুতা নির্বাচনের কিছু টিপস- -আমাদের পায়ের মাপ সব সময়ে এক নাও থাকতে পারে। তাই প্রতিবার জুতা কেনার আগে পায়ের মাপ নিয়ে নিন। -একেক ব্র্যান্ডের জুতার মাপ একেক রকম হয় সুতরাং জুতার সঙ্গে পা ঠিক খাপ খাচ্ছে কিনা দেখে নিন। -জুতা পায়ে দিয়ে দেখার জন্য উঠে দাঁড়ান এবং হেঁটে দেখুন। -একজোড়া জুতা পায়ে দিয়ে যদি মনে হয় সেগুলো বেশি টাইট, তার পরেও অনেকে কিনে ফেলেন এই মনে করে যে পরতে পরতে জুতা ঢিলে হয়ে যাবে। এই কাজটা করলে পায়ের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং বেশিরভাগ জুতা আসলে ঢিলে হয় না। -জুতা কিনতে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল সময় হলো বিকেল বেলা। এ সময়ে পায়ের আয়তন সবচেয়ে বেশি থাকে। যাপিত ডেস্ক
×