ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমেরিকানদের সন্তান কমে যাচ্ছে কেন

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ২১ মে ২০১৮

আমেরিকানদের সন্তান কমে যাচ্ছে কেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ আমেরিকায় জন্মহার ক্রমশ কমছে। তবে ২০১৭ সালে এই জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কমেছে। ১৭ মে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান কেন্দ্রের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছর দেশটিতে ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭২টি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ২০০৭ সালে রেকর্ড পরিমাণ শিশুর জন্মহার কমেছিল। ওই বছর ৪৩ লাখ ১৬ হাজার ২৩৩টি শিশু জন্মগ্রহণ করেছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে যে পরিমাণ শিশুর জন্ম হয়েছে তার সংখ্যা যে পরিমাণ মানুষ মারা গেছে তার চেয়েও কম। দেশটিতে ১৯৭১ সাল থেকেই এই ধারা চলে আসছে। পিউ গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ গবেষক গ্রেৎচেন লিভিংস্টোন কয়েক বছর ধরে আদম শুমারির এসব তথ্য বিশ্লেষণ করছেন। তিনি বলেন, অনেক বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেন যে সীমিত সম্পদ থাকায় এবং কম জনসংখ্যায় অধিক সুবিধা পাওয়ার আশায় অনেকেই সন্তান কম নিতে চান। অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করেন, নানা সমস্যার কারণে জন্মহার কম হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রসব বেদনার কারণে অনেক নারী গর্ভধারণ করতে চান না। গবেষণায় দেখা গেছে, সব বয়সের নারীর মধ্যে জন্মহার কমে গেছে। কেবল ৪০ এর দশকের কোঠায় থাকা নারীদের মধ্যে জন্মহারের প্রবণতা একটু বেশি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারীরা জীবনের শেষ দিকে সন্তান নিতে চাচ্ছেন বলেই মূলত জন্মহার কমে গেছে। তবে এই পরিবর্তন অস্থায়ী হতে পারে। লিভিংস্টোন বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে গর্ভধারণে বিলম্ব হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো যেসব নারী গর্ভধারণে বিলম্ব করছেন, তাদের সবাই কি প্রকৃতপক্ষে গর্ভধারণে সক্ষম? আমিতো এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই।’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৫ বছর থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের মধ্যে গর্ভধারণের হারও ক্রমশ কমছে। ২০১৬ সালের চেয়ে এই হার শতকরা ৭ ভাগ কমেছে। ২০১৭ সালে কিশোরীরা মোট ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮৪টি শিশু জন্ম দিয়েছে। অথচ ২০০৭ সালে তাদের জন্ম দেওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯৯। এ থেকে বোঝা যায়, কিশোরীদের গর্ভধারণের সংখ্যা অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা কিশোরীদের গর্ভধারণের হার কমে যাওয়াকে ‘বিস্ময়কর’ বলে বর্ণনা করেছেন। দেশের শিশু হাসপাতালের কিশোর-কিশোরী মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এলিস বারলানও এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। বারল্যান্ড আগেই সিএনএনকে বলেছিলেন, কিশোরীদের ব্যাপক হারে গর্ভধারণও অনাকাঙ্ক্ষিত। তিনি বলেন, গর্ভনিরোধকের প্রবেশ এবং এগুলোর ব্যবহার সত্যিকার অর্থে এ ধরনের পরিবর্তন এনেছে। পৃথক এক উপাত্তে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যৌন কার্যকলাপও কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০০ সালের অর্থনৈতিক মন্দাসহ বেশ কিছু স্বল্প মেয়াদি প্রভাব এই প্রবণতা সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে। লিভিংস্টোন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব জরিপের তথ্যে দেখানো হয়েছে, জনগণ আবার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত সন্তান জন্ম দেওয়া অনেকটা স্থগিত রেখেছে। অর্থনৈতিক মন্দাস্থায় জন্মহারে মন্দাবস্থা বজায় রাখাই যেন স্বাভাবিক।’
×