ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে ধান কাটামাড়াই উৎসব

প্রকাশিত: ০১:২০, ২১ মে ২০১৮

রংপুরে ধান কাটামাড়াই উৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে খুশি রংপুরের কৃষক। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটে মাঠে মাঠে পাকা সোনালী ধান ঘরে তুলতে বিপাকে পড়েছে চাষী। জেলায় ১ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান পাকলেও কাটা হয়েছে অর্ধেকের কম। এ সমস্যা সমাধানে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে কৃষিবিভাগ। প্রতিকূল আবহাওয়া ও ব্যায় সাশ্রয়ে কৃষি বিভাগের খামার যান্ত্রিকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে ফসল কর্তনের সুযোগ পাওয়ায় ধান কাটামাড়াইতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চাষীরা। বেড়েছে নতুন সম্ভাবনা। সোনালী বোরো ধানে ভরে আছে রংপুরের কৃষি ক্ষেতগুলো। এবার আগাম বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় পাকা ধান ঘরে তুলতে দূর্ভোগে পড়েছে জেলার কৃষক কৃষানী। তার উপর শ্রমিক সংকটে ব্যয় বাড়লেও ঘরে ধান তোলা নিয়ে শংকায় কৃষককুল। তবে সীমিতভাবে কম্বাইন্ড হারভেষ্ট ছোট বড় মেশিনে ধান কাটা মাড়াইয়ে দেখা দিয়েছে আশার আলো। কৃষি বিভাগের খামার যান্ত্রিকরণ ও ফসল উৎপাদনে ভর্তুকি প্রদানে কেটে যাচ্ছে সংকট সমস্যা,বাড়ছে বিপুল সম্ভাবনা। জেলা পর্যায়ে পঞ্চাশটি হার্ভেষ্ট মেশিন দিয়ে দ্রুত সময়ে ধান কাটা সম্ভব হলে চাষীদের ঘরে উঠবে ৯ লাখ মেট্রিকটন ধান, যা থেকে পাওয়া যাবে ৬ লাখ মেট্রিকটন চাল। জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ধান পাকলেও কাটা হয়েছে মাত্র ৩ ভাগের ১ ভাগ । এখনো বেশি ভাগ জমিতে ধান পাকলেও বৈরি আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটে দেখা দিয়েছে বড় বাঁধা। এ থেকে উত্তরণে কৃষি বিভাগের অর্ধেক ভর্তুকি মূল্যে ধান কাটামাড়াই মেশিন কৃষকের দোড়গোড়ায় পৌছাতে ব্যয়, সময় ও শ্রমিক সংকট লাঘবে চলছে ব্যাপক উদ্যোগ। এতে খুশি কৃষকও। রংপুর জেলায় প্রথম পর্যায়ে পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের জগজ্জীবন গ্রামে ধান কাটামাড়াই,ঔষুধি সব্জি সজিনা ও বিচি কলার চারা রোপন এবং খামার যান্ত্রিকরণে মেশিন ব্যবহারে কৃষক কৃষানীকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ দিবস। এতে জেলার কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক ড. মোঃ সরওয়ারুল হক, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আফতাব হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, কৃষি ব্যাংক এর সাবেক কর্মকর্তা মোত্তালেব হোসেন সহ চাষীরা অংশ নেয়। কৃষকরা বলেন, খামার যান্ত্রিকরণে সরকারী উদ্যোগ বাস্তাবায়নে বেড়েছে বিপুল সম্ভাবনা। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক ও পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্র্মকর্তা জানান, ভর্তুকি মুল্যে বীজ বোনা, চারা রোপন ও কাটামাড়াই মেশিন সংগ্রহে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। দল গঠন করে ৭ লাখ টাকার হারভেষ্ট মেশিন অর্ধেক মূল্য সাড়ে ৩ লাখ টকায় কিনতে চাষীদের মধ্যে আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে কৃষিতে জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা এবং উদ্বৃত্ত শষ্য ভান্ডার খ্যাত রংপুর ধান কাটা মাড়াই সমস্যা লাঘবে এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির নতুন উচ্চতায়।
×