জায়বা তাহিয়া, কুইন্স ইয়াং লিডার্স এ্যাওয়ার্ডে এবারের আসরের অন্যতম পুরস্কারের জন্য মনোনীত। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর তরুণদের মর্যাদার এ পুরস্কারটি গ্রহণ করতে ঈদের ঠিক আগের দিন বাংলাদেশের
দু’জন জায়বা তাহিয়া ও আয়মান সাদিক রওনা দেবেন দরবারে। আজকে থাকছে জায়বার বর্তমান
কার্যক্রম আর ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে সাক্ষাতুকার। লিখেছেনÑ বেনজির আবরার
ডিপ্রজন্ম : পাঠকের জানার জন্য যদি বলতেন কীভাবে নারীদের নিয়ে কাজ করার শুরু?
জায়বা তাহিয়া : আমার যখন উনিশ বছর, তখন আমি একটা সংগঠনে ইন্টার্নশিপ করি। ওই সংগঠনটির নাম হচ্ছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট। ওখানে আমাকে মহিলা এবং ধর্ষণ নিয়ে গবেষণা করতে বলা হলে আমি দেখতে পাই নারীদের ওপর অনেক অত্যাচার করা হচ্ছে। আমি প্রতিদিন বাসায় গিয়ে কান্নাকাটি করতাম তারপর থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি নিজেই এই সমস্যার সমাধান করব।
ডিপ্রজন্ম : রানীর দরবারে কি পরিধান করবেন? বাংলাদেশের ছেলে যারা আগে পুরস্কারটি পেয়েছেন তাদের পোশাক খুবই প্রশংসিত এবং আলোচিত হয়েছিল।
জায়বা তাহিয়া : আমার পরিকল্পনা ভিন্ন। বাঙালী শাড়ি পড়ব। থাকবে জামদানি ও মসলিনের মিশ্রণ। পুরো সময়টাতে ক্যামব্রিজ আর লন্ডনে চেষ্টা করব দেশকে ফুটিয়ে তুলতে।
ডিপ্রজন্ম : ঈদ তো পরিবার ছাড়া করতে হবে এবার। অনুভূতি কেমন?
জায়বা তাহিয়া : পরিবার ছাড়া ঈদ সবসময়ই খারাপ লাগার। তবে বিশ্বমঞ্চে দেশের হয়ে যাওয়ার নির্ধারিত সিডিউলে আসলে অনুভূতি মিশ্র। মানসিকভাবে প্রস্তুত যাবার জন্য, দেশের মানুষের দোয়া চাই।
ডিপ্রজন্ম : ‘ফেম’ থেকে নতুন কি করছেন?
জায়বা তাহিয়া : আমরা মেয়েদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, তাদের সেখান থেকে তাদের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ঘটাতে চাচ্ছি। আর কিছু নারীদের ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর মাধ্যমে ব্যবসায়ী করে প্রস্তুত করতে কাজ করছি।
ডিপ্রজন্ম : যে কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছেন সেটি ‘ফেম’। এর প্রতিষ্ঠা করলেন যেভাবে?
জায়বা তাহিয়া : আমি যখন দেশে ফিরলাম। আমি তখন চিন্তা করলাম নারী নির্যাতন নিয়ে কাজ করতে হলে আমার নিজস্ব একটা সংগঠনের প্রয়োজন আছে। তখন আমি ফেম (ফিমেইল এম্পাওয়ারমেন্ট মুভমেন্ট) প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিদিন খবর এর কাগজে এবং টেলিভিশনেই দেখতাম যে নিম্ন শ্রেণীর নারী ও কর্মজীবী নারীরা নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। যেমন উদাহরণস্বরূপ তারা যখন কর্মস্থলে অথবা স্কুলে যাচ্ছে তখন তারা উত্ত্যক্ত এবং শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হয়।
ডিপ্রজন্ম : বর্তমান কাজ যেভাবে চলছে ‘ফেম’ টিমেরÑ
জায়বা তাহিয়া : ‘প্রজেক্ট আত্মরক্ষা’র কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা বয়সের নারীদের শেখাই নিজেকে রক্ষার কৌশল। আগে নিজেদের নির্ধারিত স্কুলের বাইরে যেতাম না, বর্তমানে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘঠেছে। নারীরা যাতে নিরাপদ থাকে সে জন্য একার্যক্রম আরও প্রসারিত করছি। মূলত প্রজেক্ট আত্মরক্ষার মাধ্যমে নারীদের আত্মরক্ষা শিখাই। আমরা প্রথম শুরু“করি লো ইনকাম এরিয়ায়। যা নারীদের নিয়ে আত্মরক্ষা ট্রেনিং দেয়। পরে দেখা গেল আত্মরক্ষা শুধু শারীরিকভাবে সুরক্ষা করে না, নারীদের আত্মবিশ্বাসও অনেক বাড়িয়ে দেয়। যারা আত্মরক্ষার্থে ট্রেনিং করে যায় তারা তাদের কাজে অনেক নিরাপদ বোধ করে।
ডিপ্রজন্ম : নিজেকে নিয়ে যা ভাবছেন?
জায়বা তাহিয়া : আমার ব্যক্তিগত জীবনের লক্ষ্য এবং আমার পেশাগত জীবনের লক্ষ্য দুটোই আন্তঃসম্পর্কীয়। আমার লক্ষ্য সব সময়েই ছিল যে আমি একটা নিয়মতান্ত্রিক এবং পজেটিভ জীবন কাটাব। এভাবে আমি আমার ‘ফেম’-এর মেয়েদের কেউ এভাবে ডিসিপ্লিন এবং পজেটিভিটি শিখাব। আমার শেখার কোন শেষ নেই।
ডিপ্রজন্ম : তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে যদি কিছু বলার থাকে।
জায়বা তাহিয়া : বাংলাদেশের উন্নতির জন্য, তরুণরাই বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে তাই আমি মনে করি নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করার জন্য এখনই সময় এগিয়ে আসার।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: