ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এবার গাড়ি শিল্প স্থাপনে বাজেটে শুল্ক ছাড়

প্রকাশিত: ২০:২১, ২২ মে ২০১৮

এবার গাড়ি শিল্প স্থাপনে বাজেটে শুল্ক ছাড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যিকভাবে মোটরবাইক উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নাম, এবার দেশেই বিলাসবহুল গাড়ি তৈরির মতো উচ্চাভিলাষী স্বপ্নও দেখছে সরকার। লক্ষ্য পূরণে আসছে বাজেটেই দেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সব ধরণের ছাড় দেয়ার প্রতিশ্রুতি এনবিআর চেয়ারম্যানের। দেশীয় মোটরবাইক বাজারে, চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশই এখনও আমদানিনির্ভর। পালাবদলের প্রথম ধাপে দেশীয় প্রতিষ্ঠান রানারের মাধ্যমে শুরু হয় স্থানীয়ভাবে উৎপাদন। সহায়ক নীতিমালা তৈরি হওয়ায় নিজস্ব কারখানায় বাংলাদেশেই মোটরবাইক উৎপাদনে ঝুঁকেছে হোন্ডা, বাজাজ, টিভিএসের মতো ব্রান্ডগুলো। এখানেই শেষ নয়, সরকারের নজর বরং আরো দূরে। এবার বিলাসবহুল চার চাকার গাড়ি উৎপাদক দেশের কাতারে ঢুকতে চায় বাংলাদেশ। মঞ্চও প্রস্তুত, আসছে বাজেটেই থাকবে স্বপ্ন পূরণের রসদ, বলছে এনবিআর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, 'তৈরি গাড়ি বাংলাদেশে এনে বিক্রি করবে, সেক্ষেত্রে তো খুব বেশি ছাড় দেয়ার সুযোগ থাকে না। আমাদের দেশ আর কত পিছিয়ে থাকবে। গাড়ি উৎপাদনের সক্ষমতাও অর্জন করতে হবে। যারা উৎপাদনে যাবে তাদের কিছুটা ছাড়া দিয়ে, ভ্যাট সুবিধা দিয়ে আমরা তাদের উৎপাদনে উৎসাহিত করবো।' কিন্তু মোটেই আশাবাদী নন আমদানি করা গাড়ি ব্যবসায়ীরা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা-ই শুধু নয়, এক্ষেত্রে উৎপাদিত গাড়ি রপ্তানির সক্ষমতা অর্জনও জরুরী বলে মনে করছেন তারা, যেখানে একদমই তলানিতে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে সাম্পান অটোমাবাইললস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমামুল হাসান বলেন, 'আমরা গাড়ি উৎপাদন করে তার বিশ শতাংশ যদি দেশে বিক্রি করতে না পারি তাহলে এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে। সরকার এটা বলার জন্য বলছে। দশ বারোটা ব্যাংক এই গাড়ির ওপর লোন দিতো সেখানে ছয় সাতটা ব্যাংক লোন দেয়া বন্ধই করে দিলো।' কার সিলেকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসলাম সেরনিয়াবাত বলেন, 'আমদানি করে আমরা সরকারকে কতটা ট্যাক্স দিচ্ছি আর স্থানীয়ভাবে তৈরিকৃত গাড়িতে কতটুকু ট্যাক্স পাবে? সরকার মনে করছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হলে ভালো। কিন্তু অনেকে কন্টেইনার ভরে জিনিসপত্র এনে এখানে জোড়া দিচ্ছে। আসলে সেগুলোকে তো উৎপাদন বলা যায় না।' তবে, যে কোন পর্যায়ে বিনিয়োগ আকর্ষণে উৎপাদন সহায়ক নীতিমালার সঙ্গে মুলধনী যন্ত্রপাতি, কারখানা স্থাপন আর কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক কুনাল সেন বলেন, 'বাংলাদেশ যদি ট্যারিফ কমিয়ে রাখতে পারে তাহলে এখানে অনেক ইন্ডাস্ট্রি আসবে এবং রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ আরও বেশি প্রতিযোগতিমূলক হবে।' সাম্প্রতিক সময়ে মোটরবাইকের বিক্রি বাড়লেও জ্বালানি সংকট আর উচ্চমূল্যের কারণে গাড়ি ক্রয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন ক্রেতারা। জাপানের সহযোগিতায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি গাড়ি সহযোজন করলেও তা খুব বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি অটোমোবাইল বাজারে।
×