ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার পথে সৌদি ফ্লাইটের জেদ্দায় জরুরী অবতরণ ॥ ১৪১ বাংলাদেশী যাত্রী ছিলেন

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৩ মে ২০১৮

ঢাকার পথে সৌদি ফ্লাইটের জেদ্দায় জরুরী অবতরণ ॥ ১৪১ বাংলাদেশী যাত্রী ছিলেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অল্পের জন্য রক্ষা পেল মদিনা থেকে ঢাকা অভিমুখী সৌদিয়া এয়ারের একটি ফ্লাইট। সোমবার রাতে মদিনা থেকে ঢাকায় আসার পথে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (এ ৩৩০-২০০) যান্ত্রিক ক্রটির কারণে জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। মদিনা থেকে উড্ডয়নের পরপরই ওই উড়োজাহাজটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে জরুরী অবতরণ করতে হয়েছে। এ সময় যাত্রীদের দ্রুত বিশেষ পদ্ধতিতে বের করে আনার সময় ৪ জন আহত হন। জানা যায়, ওই উড়োজাহাজটিতে মোট ১৫১ জন আরোহীর মধ্যে ১৪১ জন বাংলাদেশী যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ফ্লাইটের যাত্রী ফেনীর বাসিন্দা বাকি বিল্লাহ মাছুম। তিনি বাংলাদেশ থেকে ওমরা পালন করতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। ওমরা পালনকারী একটি কাফেলার প্রধান ছিলেন। জেদ্দায় ওই ফ্লাইট থেকে নামার পর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তিনি একটি স্ট্যাস্টাস দিয়েছেন। স্ট্যাস্টাসে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের বর্ণনা দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেন, জীবনে বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, আল্লাহ আমাকেসহ ১৫১ জন হাজী সাহেবকে বহনকারী সৌদি এয়ারলাইন্সের মদিনা থেকে ছেড়ে আসা সকল যাত্রীকে তার কুদরতের ছায়া দিয়ে হেফাজত করেছেন -আলহামদুলিল্লাহ। মদিনা থেকে ১২-৩০ মিনিটে প্রথমে ঢাকার উদ্দেশে বিমান যাত্রা করে, কিছুদূর যাওয়ার পর এসি খারাপ হয়ে যায়, পরে আমাদের বিমান থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর ৫-২০ মিনিটে আবারও যাত্রা শুরু করে। এরপর ৪ ঘণ্টা এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে জেদ্দা এয়ারপোর্টের পাশে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে সামনের দুইটা চাকা ব্লাস্ট (বিস্ফোরণ) হয়ে আগুন ধরে যায়, আমরা কোন মতে লাফ দিয়ে নিচে নেমে যাই। বর্তমানে তারা জেদ্দা হোটেলে অবস্থান করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সৌদি এয়ারলাইন্স এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মদিনা থেকে ঢাকাগামী সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। এ সময় বিমানটি সামনের চাকা আগুন ধরে গিয়েছিল। এতে বিমানটির সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও যাত্রীরা নিরাপদে আছেন। সৌদি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র আব্দুর রহমান আল-তাইয়িব বলেন, বিমানটি সোমবার মদিনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তবে পথিমধ্যে স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টার দিকে বিমানটির ‘হাইড্রোলিক সিস্টেমে’ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেজন্য বিমানটির গন্তব্যস্থল পরিবর্তন করে জেদ্দা বিমানবন্দরে জরুরী ভিত্তিতে অবতরণ করানো হয়। বিমানের পাইলট বেশ কয়েকবার যান্ত্রিক ত্রুটি সারানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অবশেষে এয়ারবাস এ-৩৩০-২০০ মডেলের বিমানটি নোজ গিয়ার প্রত্যাহার করে জরুরী অবতরণ করে। সৌদি গেজেট জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে এয়ারবাস এ-৩৩০-২০০ উড়োজাহাজটি জেদ্দার বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। নামার সময় নোজ গিয়ার না খোলায় বিমানের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উদ্ধারকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীদের সরিয়ে নেন এবং ৭০ জনকে বিমানবন্দরেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আরও চারজনকে পাঠানো হয় হেলথ সেন্টারে। ঢাকার পথের ১৪১ জন যাত্রীর সঙ্গে ১০ জন ক্রু ছিলেন ওই উড়োজাহাজে। সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র আবদুরাহমান আল-তাইয়েবকে উদ্ধৃত করে সৌদি গেজেটের খবরে বলা হয়, মদিনা থেকে রাত ৮টায় উড্ডয়নের পরপরই ফ্লাইট এসভি ৩৮১৮ এ হাইড্রলিক সিস্টেমে গোলযোগ ধরা পড়ে। ওই পরিস্থিতিতে পাইলট গতিপথ বদলে জেদ্দায় জরুরী অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। জেদ্দার আকাশে ঘণ্টাখানেক চক্কর দিয়েও পাইলট জটিলতা ঠিক করতে না পারায় সামনের ল্যান্ডিং গিয়ার ভেতরে রেখেই উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের ইমার্জেন্সি রানওয়েতে অবতরণ করে। এ দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানান সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র।
×