ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিও অনুমোদনে সময়ক্ষেপণ বড় সমস্যা

প্রকাশিত: ০৭:২১, ২৩ মে ২০১৮

আইপিও অনুমোদনে সময়ক্ষেপণ বড় সমস্যা

অপূর্ব কুমার ॥ পুঁজিবাজারে ভাল শেয়ারের সঙ্কট রয়েছে বলে মনে করছেন সিএপিএম এ্যাভজাইজরি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী তানিয়া শারমিন। বাজারে ভাল শেয়ারের যোগান ও সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেছেন, আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণই বড় সমস্যা। ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে সবচেয়ে বেশি কি সমস্যার বিষয়ে তানিয়া শারমিন বলেন, একটা কোম্পানির আবেদন জমা করার পরেও ১.৫-২ বছর লেগে যায়। এর আগে ফাইল সাবমিটের জন্য একটা কোম্পানিকে প্রস্তুত করতে ১ বছর সময় লাগে। এছাড়া আইপিও অনুমোদনের পরে শেয়ার বিওতে পাঠানোর জন্য সিডিবিএল ও শেয়ার লেনদেন শুরু করার জন্য ডিএসইতে দৌঁড়াতে হয়। সবমিলিয়ে এই দীর্ঘ সময়ক্ষেপণই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এটা শুধু আমাদের না, প্রত্যেক ইস্যু ম্যানেজারের সমস্যা। যা শেয়ারবাজারের জন্য নেতিবাচক। এই সময় ক্ষেপণের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ কোম্পানি পারিবারিক। এরা শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। অনেক বুঝিয়ে আনতে হয়। এরপরে যখন দীর্ঘ সময় লাগে, তখন কোম্পানিগুলো আস্থা হারিয়ে ফেলে। এই কালক্ষেপণের কারণে অনেক সময় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের ফাইল তুলে নেয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। তিনি আরও বলেন, আইপিও অনুমোদনে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে। এই সময় ৬ মাসের মধ্যে আনা দরকার। এক্ষেত্রে বিএসইসি কোয়ারি দেয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে পারে। কারণ যেকোন ফাইলে ছোট খাটো সমস্যা থাকতে পারে। তবে বিএসইসি এমন কিছু সমস্যা নিয়ে কোয়ারি করে, যা না করলেও কোন সমস্যা নাই। তাহলে ইস্যু ম্যানেজার ও ইস্যুয়ার উভয়ের মধ্যে আস্থা বাড়বে। যার প্রতিফলন ঘটবে শেয়ারবাজারে। দুর্বল কোম্পানি আনতে ইস্যু ম্যানেজাররা সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে প্রায় ২ বছর সময় লাগে। ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালের আইপিও সম্পর্কে ঋণ খেলাপি হওয়ার কোন সুযোগ নাই। দেশে যত অনিয়ম করা সম্ভব হোক না কেন, কোন ঋণ খেলাপির সিআইবি ক্লিয়ারেন্স পাওয়া সম্ভব না। আমরা এই কোম্পানিটির ২-৩ বার সিআইবি জমা দিয়েছি। ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে ডিউ ডেলিজেন্সও দিয়েছি। দেশের সিটি গ্রুপ, আকিজ গ্রুপের মতো বড় ও ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে কেন চায় না এই বিষয়ে জানতে চাইলে তানিয়া শারমিন বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সবাই পরিবারকেন্দ্রিক। এসব কোম্পানি পরিবারের বাইরে যেতে চায় না। শেয়ারবাজারে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে বলে মনে করে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন (সিজিজি), বিভিন্ন কমপ্লায়েন্স মানতে চায় না। যা শেয়ারবাজারে আসলে মানতে হয়। তবে কোম্পানিগুলোর এমন আচরণ ঠিক না। তালিকাভুক্তির সুবিধা বিষয়ে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে আসলে বিভিন্ন সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অনেক কোম্পানি আসতে চায় না। এখানে আসলে কর রেয়াত সুবিধা, পরিচিতি, সুনাম এবং বাজারজাতকরণ বাড়ে। এছাড়া শেয়ারবাজার থেকে টাকা নিলে, ঋণের ন্যায় নিয়মিত সুদ প্রদানের বাধ্যবাধকতা নাই। আর উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা তাদের প্রয়োজনে শেয়ারও সহজেই বিক্রয় করতে পারে। তারপরেও আসতে চায় না। বিনিয়োগকারীদের সচেতনতার বিষয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা আগের থেকে অনেক শিক্ষিত ও সচেতন হয়েছে। তারা এখন কোম্পানির খোঁজ খবর রাখে। তারপরেও অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা এখনও বিভিন্ন মাধ্যমে আইটেম খুঁজে বেড়ায়। এটি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
×