ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন লাগবে

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ২৩ মে ২০১৮

ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন লাগবে

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল এসইএ-এমই-ডাব্লিউই-৪ ভারতের চেন্নাইতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কক্সবাজার থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশে ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও অন্তত ৪ দিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে বিকল্প পথে ইন্টারনেট সরবরাহ দিচ্ছে বিএসসিসিএল। বিএসসিসিএল সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ ২৫০ জিবিপিএসর জায়গায় বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ জিবিপিএস। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ অবস্থা চলবে বলে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)। ক্যাবলের কক্সবাজারের ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ভারতের চেন্নাই পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য ইন্টারনেট ডাটা সঞ্চালন ১৮ মে থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে ব্যান্ডউইথের সরবরাহ ঠিক রাখতে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের (এসইএ-এমই-ডাব্লিউই-৫) সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে কয়েকটি বিকল্প পথে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইথ সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ১৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। এখন আপৎকালীন সময়ে বাড়িয়ে ২৪০ জিবিপিএস করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিএসসিসিএলের দুটি সাবমেরিন ক্যাবল থেকে এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ আসছে। স্বাভাবিক সময়ে বিএসসিসিএলের বর্তমান ব্যান্ডউইথ সরবরাহ ক্ষমতা ৪০০ জিবিপিএস। সারাদেশে এখন দৈনিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের চাহিদা ৬০০ থেকে ৬৫০ জিবিপিএস। ভারত থেকে আইটিসি অপারেটরদের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ চাহিদার বাকিটা পূরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) কক্সবাজারের জিলং পর্যন্ত (প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ল্যান্ডিং স্টেশন) এসইএ-এমই-ডাব্লিউই-৪ ক্যাবলের মাধ্যমে দেশে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসছে। দ্বিতীয় সি-মি-উই-৫ ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ (ব্যাকআপ) দেয়া হচ্ছে। এসইএ-এমই-ডাব্লিউই-৪ (সাউথ এশিয়া-মিডেলিস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ) মালিক হচ্ছে, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিসর, ইতালি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া ও ফ্রান্স। সিমিউই-৫ এর মালিক হচ্ছে, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের মালিকও এই ১৬ দেশ। বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, গত ১৮ মে থেকে চেন্নাইতে সি-মি এসইএ-এমই-ডাব্লিউই-৪ ক্যাবলটির একটি রিপিটার পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। এ কারণে কক্সবাজার-চেন্নাই-সিঙ্গাপুর পথটি বন্ধ রয়েছে। তবে ক্যাবলটির পশ্চিম অংশ বন্ধ থাকলেও পূর্ব অংশ দিয়ে কিছু ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাচ্ছে। একেবারে ক্যাবলটি বন্ধ হয়ে যায়নি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে ক্যাবলটি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বিএসসিসিএল বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে কক্সবাজার-ব্যাঙ্কক-সিঙ্গাপুর পথে। একইভাবে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাড়িয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভারত থেকে স্থলপথে ব্যান্ডউইথ আনতে ছয়টি আন্তর্জাতিক টেরিস্টোরিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) চালু রয়েছে। ফলে দেশে ব্যান্ডউইথের খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে প্রয়োজনের তুলনায় কিছু কম ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাচ্ছে।
×