ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তামনির মৃত্যুর সংবাদ হার্ট-ব্রেকিং ॥ ডা. সামন্তলাল

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২৩ মে ২০১৮

মুক্তামনির মৃত্যুর সংবাদ হার্ট-ব্রেকিং ॥ ডা. সামন্তলাল

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনি মারা যাওয়ার খবরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, মুক্তামনির মৃত্যুর সংবাদ আমাদের জন্য হার্ট ব্রেকিং। কিছুক্ষণ আগেই তার মৃত্যুর সংবাদ জেনেছি। চিকিৎসক জীবনে আমার এমন সংবাদ খুব কমই শুনতে হয়েছে। ডা. সামন্ত লাল জানান, মুক্তামনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছয় মাস চিকিৎসা নিয়েছে। তার চিকিৎসায় কোন ত্রুটি ছিল না। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার জন্য সব চেষ্টা করা হয়েছে। সামন্ত লাল বলেন, মুক্তামনির চিকিৎসার খোঁজ নিতে গতকাল সাতক্ষীরা থেকে একজন চিকিৎসক পাঠানো হয়েছিল। তার জন্য বাড়িতে নিয়মিত চিকিৎসক পাঠানো হতো। আমাদের ইচ্ছা ছিল মুক্তামনিকে ঢাকায় আনা। এ জন্য ওর বাবার সঙ্গে কয়েক দফা কথাও হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার বাবা ইব্রাহিম মেয়েকে ঢাকায় আনতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছিলেন, মুক্তামনি নিজেই ঢাকায় আসতে রাজি হচ্ছিলো না। ডাঃ সামন্তলাল সেন বলেন, মুক্তামনির চিকিৎসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়েছিলো। শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার জন্য আন্তরিক ছিলেন। আমরাও চেষ্টা করেছিলাম তাকে ঢাকায় আনার জন্য। তাকে ঢাকায় আনার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু তার আগেই মুক্তামনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেল। ২০১৭ সালের ১২ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হয় মুক্তামনি। প্রথমে তার রোগটিকে বিরল রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরে বায়োপসি করে জানা যায়, তার রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে। তখন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা। মুক্তামনির সব রিপোর্ট দেখে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ঢামেকের চিকিৎসকরাই তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। পরে মুক্তামনির চিকিৎসার সব ধরনের খরচের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তামনির হাতে ৫ আগস্ট প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। তার হাতের ফোলা অংশ অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেন চিকিৎসকরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দু’দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক মুক্তামনির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। পরে মুক্তামনির হাত আবার ফুলে যাওয়ায়, ফোলা কমানোর উদ্দেশ্যে হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়। মুক্তামনি ঢামেক হাসপাতালে ছয় মাস চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। বাড়িতেই তার চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শে ওষুধ সেবন করানো হচ্ছিল। গত সপ্তাতে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
×