ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে হবিগঞ্জের বিএনপি নেতা মধু গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৩ মে ২০১৮

ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে হবিগঞ্জের বিএনপি নেতা মধু গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ ৭১’সালে গণহত্যা, অপহরন, ধর্ষণ, লুটপাট ও নির্যাতন সহ নানা মানবতা বিরোধী জঘন্য অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে হবিগঞ্জ শহর থেকে মধু বাহিনীর প্রধান রাজাকার কমান্ডার বিএনপি নেতা মুধু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। সংশ্লিস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি নুর হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, আজ বুধবার সকাল ১১ টার দিকে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদ্দারের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ রাজাকার কমান্ডার মধুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। এদিকে তার আগের দিন মঙ্গলবার মধ্য রাতে হবিগঞ্জ শহরের কোর্ট মসজিদ এলাকা থেকে মধুকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে হবিগঞ্জ পুলিশ অফিসের ডিবি শাখায় রাতভর রাখা হলেও কি কারনে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো, এ নিয়ে তখন কোন বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত ছিল পুলিশ। তবে জেলা শহর হবিগঞ্জ সহ তার নিজ এলাকা বানিয়াচঙ্গের মুরাদপুর ইউনিয়ন জুড়ে তখন একটাই আলোচনার ঝড় ছিল, মানবতা বিরোধী অপরাধের কারনেই হয়তো তাকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, আগের দিন মধুকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আনা হলেও তন্মধ্যে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হওয়ায় তারা মধুকে গ্রেফতার দেখাতে বাধ্য হন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি নুর হোসেন জনকন্ঠকে জানান, জেলার বানিয়াচঙ্গ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, মুরাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সংশ্লিস্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মধু মিয়া ৭১’সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংশ্লিস্ট উপজেলাধীন বিথঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা প্রমোদ রায়, আরাধন সরকার ও আদম আলীকে নির্মমভাবে হত্যা, একাধিক নারী অপহরন-ধর্ষণ সহ মুক্তিকামী অসংখ্য সাধারন নারী-পুরুষের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। ফলে এইসব নিহতের স্বজনরা রাজাকার কমান্ডার মধু ও তার সহযোগিদের বিচার চেয়ে চলতি বছরের ২৯ মার্চ সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেন। (মামলা নং-৯৬)। পরবর্তীতে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আইজিপি আব্দুল হান্নান খান পিপিএম এর নির্দেশে তিনি ওই সব ঘটনার তদন্ত শুরু করলে মধু বাহিনীর প্রধান মধু সহ তার লোকজন কর্তৃক নানা মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার প্রাথমিক সত্যতা মিলে। এরই প্রেক্ষিতে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক তার বিরুদ্ধে ওই গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়। তিনি আরও জানান, আজ বুধবারই কোন এক সময়ে রাজাকার মধুকে হবিগঞ্জ থেকে ঢাকাস্থ সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার নিকট হস্তান্তর করার কথা রয়েছে হবিগঞ্জ পুলিশ। এদিকে মধু বাহিনীর প্রধান মধু গ্রেফতার হওয়ায় তার নিজ এলাকা বানিয়াচঙ্গের মুরাদপুর ইউনিয়ন জুড়ে চলছে আনন্দ উল্লাস। চলছে মিষ্টি বিতরণ ।
×