ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাজার পর্যবেক্ষণ জরুরী

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৪ মে ২০১৮

বাজার পর্যবেক্ষণ জরুরী

রমজান মাসটিতে মুসলমানরা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মহান সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্টি করার জন্য প্রচেষ্টা চালান। পবিত্র এ মাসে সবাই আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি, ইবাদত-বন্দেগিতে ব্যস্ত থাকেন। কাজেই এ মাসে সবার প্রত্যাশা থাকে যা কিছু করবে তা যেন মহান আল্লাহ্ তায়ালা কবুল করে নেন। যে কারণে মানুষ হালাল খাদ্য গ্রহণ ও হারাম জিনিস পরিহার করে চলেন। কিন্তু আমাদের দেশে পবিত্র এ রমজান মাসেই সবচেয়ে বেশি জিনিসের দাম থাকে। এর জন্য যদিও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী করা যায় না, কিন্তু পরোক্ষভাবে তাদের অবহেলাই দায়ী। তবে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী রয়েছে যারা রমজানের শুরুতেই দ্রব্যাদি গুদামজাত করে রেখে তা দাম বৃদ্ধি করতে চেষ্টা চালায়। এতে দেখা যায় সাধারণ মানুষ যারা সারাদিন রোজা রেখে যখন তার পরিবারের জন্য ইফতার সামগ্রী বা অন্যান্য দ্রব্যাদি কিনতে যায়, তখন চড়া দামে এসব কিনতে হয়। কর্তৃপক্ষ যদিও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এর কিছুটা সমাধানের চেষ্টা চালান, তার পরেও তা সকল জেলা, উপজেলায় ঠিকমতো নজরদারি করা হয় না। তবে গত বছর আমরা একটি বিষয় লক্ষ্য করেছিলাম বিভাগীয় শহরগুলোতে ট্রাকে করে নির্দিষ্ট মূল্যে দ্রব্যাদি বিক্রি করা হয়েছে, যেটিকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে। কিন্তু যদি এই প্রক্রিয়াটি সকল জেলা, উপজেলা পর্যায়ে করা যায় তাহলে এটি প্রান্তিক মানুষের জন্য ফলপ্রসূ হবে। আমরা দেখতে পাই রমজানে দ্রব্যমূল্য সব সময়ই বাড়তি থাকে, এর জন্য অসাধু ব্যবসায়ী ও বাজার সিন্ডিকেট প্রধান দায়ী। তারা আগে থেকে দ্রব্যাদি স্টকে রেখে রমজানে দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এ বছর কর্তৃপক্ষ বলছে যারা এ রকম অসাধু কাজ করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবে তাদের যথাযথ আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য বরাবরের মতো এবারো মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে। বিষয়টি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে, যদি এর যথাযথ বাস্তবায়ন হয়। সরকার যেহেতু সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, সেহেতু রমজান মাসে বাজার ব্যবস্থাপনা আরও সুন্দরভাবে করা দরকার, যাতে কোন ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি করতে না পারে। রমজানে ব্যবসায়ী মহল এক ধনের ফাঁদ পেতে বসে থাকে, যেন তারা সারা বছরের ব্যবসা এক মাসে করে দ্বিগুণ মুনাফা অর্জন করবেন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের এক্ষেত্রে আত্মসংযমের প্রয়োজন আছে, কারণ পবিত্র এ মাসটি কিন্তু সবাইকে অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয়। আবার কিছু ব্যবসায়ীদের সঠিক মূল্যে দ্রব্যাদি বিক্রি করতে দেখা যায়, যেখানে মানুষ কেনাকাটা করে স্বস্তি পায়। তবে মার্কেটিং পলিসি যারা তৈরি করেন, তারা কিন্তু রমজান মাসে সৎ ব্যবসায়ীদের পুরস্কৃত করার মতো ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে দেখা যাবে পবিত্র রমজানে যে সকল ব্যবসায়ী মহল সততার সঙ্গে দ্রব্যাদি বিক্রি করে তারা উৎসাহ পাবেন। এ ছাড়াও দেশের আনাচে-কানাচে দ্রব্যাদি সঠিক সময় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে কোন ব্যবসায়ী বলার সুযোগ না পান যে দ্রব্যাদির মজুদ শেষ হয়ে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করা যেতে পারে। যদি রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখা যায় তাতে জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা ফিরে পাবে। তবে জনগণ আশায় আছে কর্তৃপক্ষের আশায় যে অসাধুভাবে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি করলেই আইনী ব্যবস্থা। এখন রজজান তাই যদি বাজার ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করা না যায় তাহলে জনগণ রীতিমতো হতাশ হবে। তাই বাজার ব্যবস্থা ঠিক রেখে সাধারণ জনগণের কথা মাথায় রাখাটা হবে কর্তৃপক্ষের প্রধান কর্তব্য। তাই এ বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন থাকতে হবে, যাতে কেউ কারো মাধ্যমে না প্রতারিত হয়। সর্বোপরি কিভাবে এ পবিত্র মাসে জনগণের জন্য নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখা যায় তার ব্যবস্থা করাটাই হবে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×