ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে আমের ছড়াছড়ি, চাঁপাইয়ে স্বল্পতা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২৪ মে ২০১৮

রাজশাহীতে আমের ছড়াছড়ি, চাঁপাইয়ে স্বল্পতা

ডি.এম. তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ মাত্র ৫০ কিলোমিটার ব্যবধানের দুই শহর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার আমের দুই ধরনের বাজার। রাজশাহীর বাজারে আমের ছড়াছড়ি। অথচ আম সাম্রাজ্য বলে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের একাধিক আম বাজার খা খা করছে আমের অভাবে। কারণ চলতি মৌসুমে পরিপক্ব না হওয়ায় সে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এখানকার আম বাজারের এই করুণ অবস্থা। এখানকার আম চাষীরা ভরসা পাচ্ছে না অপরিপক্ব আম নামাতে। তবে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পরিপক্বতা পেলে জমে উঠবে এখানকার আমের বাজার। মঙ্গলবার ও বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাজারে কোন আম নামেনি। এবার রোজার মাসে আম সাম্রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম মৌসুম শুরু হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা খুবই উৎফুল্ল। কারণ মুনাফা এবার বেশি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গত রবিবার (২০ মে) থেকে সাধারণ নিম্নজাতের গুটি আম বাজারে আসার কথা থাকলেও আসেনি, নতুন তারিখ দেয়া হয়েছে ২৫ মে। সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ে দেশের একমাত্র বৃহত্তম আম বাজার কানসাটে আম আসতে আরও কয়েক সপ্তাহ বাকি রয়েছে। কানসাটের বাজারে আম আসা শুরু হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম দেশের বিভিন্ন মোকামে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় পাইকার ও আড়তদাররা আসতে শুরু করেছে। এমনকি রোজাদাররাও পাকা আম পাচ্ছে না সেইভাবে। জেলার ২২ বাজারে মৌসুমের শুরুতে অভিজাত গ্রুপের আম গোপালভোগ আসা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এসেছে মাত্র ১১টি বাজারে। পাশাপাশি প্রায় নাম না জানা ৩৬টি গুটিজাতের আম বাজারে আসলেও বুনিয়াদি বলে পরিচিত ক্ষিরশাপাত বা হিমসাগর পরিপক্ব না হওয়ার কারণে কোন বাগান মালিক সাহস করে পাড়ছে না। তবে জুনের প্রথম সপ্তাহে এই আম বাজারে এসে পড়বে। অন্যতম বুনিয়াদি গুটির মধ্যে গোপালভোগ বাজারে আসলেও দামের কারণে অনেকেই কিনতে পারছে না। তবে দাম মণপ্রতি দেড় হাজার টাকার নিচে রয়েছে। উল্লেখ্য, সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের অনেক আগে থেকে ফনিয়াসহ নানান ধরনের কাচমিঠা, কাঁচাতেই মিষ্টি, বাজারজাত হওয়ার কারণে শৌখিন ক্রেতারা হামলে পড়েছে এই আমের ওপর। গোপালভোগের সময় কাল মাত্র দুই সপ্তাহ হয়ে থাকে। পুরো জেলায় এবার গোপালভোগের গাছের সংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ৬৮০টি। তার মধ্যে সদরে প্রায় ২৫ হাজার, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর রয়েছে ৭০ হাজার গাছ। ভোলাহাটে গোপালভোগের গাছ সবচেয়ে কম হলেও ১০ হাজার গাছ রয়েছে। ভোলাহাটের গোপালভোগ জেলার মধ্যে সব চেয়ে মিষ্টি। জেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে গোপালভোগের আবাদ হয়ে থাকে। গোপালভোগ শেষ না হতেই ক্ষিরশাপাত, বোম্বাই ও লক্ষণভোগ বাজারে এসে পড়বে। এবার এই তিনটি বিশেষায়িত জাতের আমের গাছ রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ। তবে এর মধ্যেই জেলার বুনিয়াদি জাত হিসেবে পরিচিত ল্যাংড়া আম এসে পড়বে। জেলায় প্রায় দুই লাখের অধিক ল্যাংড়া জাতের গাছ রয়েছে। এবার ল্যাংড়ার উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। এই ল্যাংড়া জাতের আমের চাহিদা স্থানীয়ভাবে খুব একটা না থাকলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে এই জাতের আমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। যার কারণে প্রতি বছর ল্যাংড়ার দাম থাকে খুবই বেশি। এছাড়াও বাজারে আসবে ফজলি, আম্রপালি, মল্লিকাসহ প্রায় সহস্রাধিক গুটিজাত। সমগ্র জেলায় এবার ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। যার কারণে উৎপাদনের পরিমাণ ৭ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।
×