ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৬ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে ৯ মাদকবিক্রেতা’ নিহত

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ২৪ মে ২০১৮

৬ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে ৯ মাদকবিক্রেতা’ নিহত

অনলাইন ডেস্ক ॥ মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধ অব্যাহত আছে। গতকাল বুধবার রাতেও দেশের ছয় জেলায় ৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল রাতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফেনীতে দুই, কুমিল্লায় দুই, মাগুরায় দুই, নারায়ণগঞ্জে এক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন এবং সাতক্ষীরায় এক ‘মাদক বিক্রেতা’ নিহত হয়েছেন। লাগাতার ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনার মধ্যে আজ আরও নয়জন নিহত হয়েছে। ফেনী ॥ ফুলগাজী উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন দুই মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মজনু মিয়া মনির (৩২) ও শহমিরান শামির (৩০)। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আনন্দপুর ইউনিয়নের জামমুড়া এলাকায় এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের দাবি। ফেনীতে এ নিয়ে গত তিন দিনে র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচজন নিহত হলো। ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা(ওসি) জানান, মাদক পাচার হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় মাদক বিক্রেতা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে মনির ও শামির গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৭০০ ইয়াবা, ৭০০ বোতল ফেনসিডিল, একটি এলজি, তিনটি কার্তুজ উদ্ধার করে।’ এ সময় আট পুলিশ সদস্য আহত হয় বলে ওসি দাবি করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে আনা হয়েছে। নিহত মনির ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের মনতলা গ্রামের এবং শামির আনন্দপুর ইউনিয়নের মাইজগ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। কুমিল্লা ॥ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুইজন নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগণ্ডা এলাকায় বন্ধুকযুদ্ধে বাবুল মিয়া ওরফে লম্বা বাবুল নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ২০০ বোতল ফেন্সিডিল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত বাবুল মিয়া উপজেলার পৌর এলাকার বৈদ্দের খিল গ্রামের প্রয়াত হাফেজ আহমেদের ছেলে। রাত আড়াইটার দিকে তার মরদেহ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল জানান, মাদকের চালান যাচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করলে ঘটনাস্থলে বাবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার বিরুদ্ধে ৫টি মাদকের মামলাসহ ৬টি মামলা ছিল। এদিকে একই রাতে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারার গোয়াল মথন এলাকায় রাজীব নামে আরেক মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। নিহত রাজীব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি এলাকার চাঙ্গিনি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। রাত ৩টার দিকে তার মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। সদর দক্ষিণ থানার এস আই সাহিদুল ইসলাম জানান, নিহত রাজীবের কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০ কেজি গাজা এবং একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে ৬-৭টি মাদকের মামলা ছিল। এ নিয়ে গত তিন দিনে কুমিল্লায় মোট পাঁচজন মাদক ব্যাবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেন। মাগুরা ॥ সদর উপজেলায় ‘মাদক বিক্রেতাদের দুই পক্ষের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। এরা হলেন মাগুরা পৌর এলাকার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের আইয়ুব হোসেন (৫০) এবং ভায়না টিটিসিপাড়ার মিজানুর রহমান কালু (৪৩)। জেলার সহকারী পুলিশ সুপার জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মাগুরা শহরতলীর পারনান্দুয়ালী হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় মাদক বিক্রেতাদের দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।’ ‘আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুজনকে সনাক্ত করা হয়। বিভিন্ন থানায় আইয়ুবের বিরুদ্ধে ১৮টি এবং কালুর বিরুদ্ধে ২১টি মাদকের মামলা আছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি মাগুরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে’, যোগ করেন এএসপি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ আখাউড়ায় পুলিশের সঙ্গে 'কথিত বন্দুকযুদ্ধে' আমির খাঁ (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ স্টিল সেতুর কাছে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, নিহত আমির জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে নয়টি মাদক ও একটি হত্যাসহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে আখাউড়া থানায়। নিহত আমির উপজেলার চানপুর গ্রামের মৃত সুরুজ খাঁর ছেলে। আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন তরফদার জানান, বুধবার রাতে বনগজ স্টিল সেতু এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আমির ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এ সময় সহযোগীদের গুলিতে মারা যান আমির।’ ওসির ভাষ্য, পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি কার্তুজ, একটি রামদা, দুটি বড় ছোরা, ১০ কেজি গাঁজা ও আট বোতল স্কফ সিরাপ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন ওসি। সাতক্ষীরা ॥ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাতক্ষীরায় এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছে। নিহত ব্যাক্তির নাম এখনও জানা যায়নি। নারায়ণগঞ্জ ॥ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সেলিম (৩২) নামে এক ‘মাদক বিক্রেতা’ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ জানান, সানারপাড় এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে সেলিম ১৫ মামলার আসামি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি বলেন বুধবার রাতে নিমাইকাশারি এলাকায় পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি করে পুলিশ। প্রায় আধঘণ্টার বন্দুকযুদ্ধের পর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তখন সেখানে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে ছিলেন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিমের পরিচয় সনাক্ত করা হয়।’ ‘ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটারগান, পাঁচ হাজার ইয়াবা, পাঁচ বোতল ফেনসিডিল ও একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।’ পুলিশের ভাষ্য, এ সময় আহত হয়েছেন- ওসি আব্দুস সাত্তার, পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক, এসআই ইব্রাহিম পাটোয়ারী, এসআই জাহাঙ্গীর ও কনস্টেবল সাঈদুল।
×