ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমার মতে, আইটেম সং সবচেয়ে সহজ নিশানা ॥ বিদ্যা বালান

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ২৪ মে ২০১৮

আমার মতে, আইটেম সং সবচেয়ে সহজ নিশানা ॥  বিদ্যা বালান

অনলাইন ডেস্ক ॥ সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বিদ্যা বালানের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় । এখানে এই জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পীর নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্র: জীবনের কোন সাফল্যগুলো দেখে মনে হয় যে, মেয়ে হিসেবে আপনি কোনও অংশে কম নন? উ: (হেসে) শুধু নিজেকে নয়, চারপাশের মহিলাদের দেখেও সব সময়ে মনে হয়, মেয়েরা কোনও অংশে পুরুষের চেয়ে কম নন। নারীকেন্দ্রিক ছবিই আমি বেশি করি। তবে কেউ যখন জিজ্ঞেস করত, কী ভাবে দশ দিক সামলাই, মনের মতো উত্তর পেতাম না। একটা ক্যাম্পেনের অংশ হয়ে যেন উত্তরটা খুঁজে পেয়েছি, ‘একাই একশো।’ প্র: এমন কোনও কাজ আছে, যা একা পারেন না? উ: টেকনোলজি একা সামলাতে পারি না। ল্যাপটপ বলুন, পেনড্রাইভ বলুন... টিভি না চললেও কারও না কারও সাহায্য লাগেই। তবে আগের চেয়ে একটু হলেও উন্নতি হয়েছে (হাসি)। প্র: ঘরকন্নার কাজে আপনার স্বামী (সিদ্ধার্থ রায় কপূর) কি সাহায্য করেন? উ: রোজের কাজে দরকার পড়ে না। তবে দরকার পড়লে অবশ্যই করে। এই ধরুন, রান্নার লোক আসেনি। ও কিন্তু বেশ উৎসাহ নিয়ে তদারকি করে। প্র: উনি রান্না করতে পারেন? উ: রান্না করে না। আমিও একেবারে রান্নাবান্না পারি না। কিন্তু দরকার পড়লে সিদ্ধার্থ সাহায্য করে। প্র: ইন্দিরা গাঁধীর চরিত্রে অভিনয় করছেন। ওঁর ব্যক্তিত্বের কোন দিকটা আপনাকে অনুপ্রাণিত করে? উ: ক্ষমতাশীল মহিলাদের কথা বলতে প্রথমেই আমার ইন্দিরা গাঁধীর কথা মনে আসে। রাজনীতি বিশেষ বুঝি না। তবে যে ভাবে উনি নিজেকে বৃহত্তর ক্ষেত্রে তুলে ধরেছিলেন, সেটা অনুপ্রাণিত করে। প্র: মেয়েদের শরীর নিয়ে সমাজের অনেক ধারণা রয়েছে। অভিনেত্রী হিসেবে বিষয়টাকে কী ভাবে দেখেন? উ: মেয়েদের শরীর নিয়ে সমাজের এত মাথাব্যথা, কারণ শরীরের উপর জোর খাটিয়ে মেয়েদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। নারীর শরীর ‘কালচারাল সিম্বল’ হলে পুরুষের শরীরও সেই কালচারের বাইরে নয়। কিন্তু সমাজ তা শেখায় না। এটা পিতৃতন্ত্রেরই একটা হাতিয়ার। মহিলাদের মন-সত্তা-শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে পুরুষ আধিপত্য বজায় রাখতে চায়। প্র: ‘আইটেম সং’-এ মেয়েদের উপস্থাপনা নিয়ে অনেক সিনিয়র অভিনেত্রীও প্রতিবাদ জানিয়েছেন... উ: আমি এমন পরিস্থিতির মধ্যে কখনও পড়িনি। এই বিষয়ে মন্তব্য করলে যাঁরা এমন নাচ করেন, তাঁদের কাজ নিয়ে একটা মতামত দেওয়া হবে। সেটা আমি চাই না। তবে আমার মতে, আইটেম সং সবচেয়ে সহজ নিশানা। বছরের পর বছর ধরে যে ধরনের রোম্যান্টিক গান তৈরি হয়েছে, তাতেও মেয়েরা পণ্যের মতোই। মেয়েদের পিছু করাকে মহৎ করে দেখানো হয়েছে। তবে কিছুটা হলেও ছবিটা বদলেছে বলে মনে হয়। এখনকার ছবিতে মেয়েদের যে ভাবে দেখানো হচ্ছে, সেটা কিন্তু চিরাচরিত মেল গেজ়ের বাইরে। প্র: সিবিএফসির সদস্য হয়ে সেই সমস্যার জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন, যার জন্য ছবির স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা হয়? উ: কোনও ছবির পরিচালক-প্রযোজক এগজ়ামিন কমিটির দেওয়া শংসাপত্র মানতে না চাইলে তা রিভাইজ়িং কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সিনেম্যাটোগ্রাফ আইনের নির্দেশিকাগুলো আমরা অনুসরণ করি। সেখানে কোথাও ছবির স্বাধীনতা খর্ব করার কথা বলা নেই। তবে সেখানে যা বলা আছে, সেটা কে কী ভাবে ব্যাখ্যা করছেন, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। এক জন পরিচালকের কাছে যেটা তাঁর শৈল্পিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সমাজের এক শ্রেণির মানুষের কাছে তা ভাবাবেগে আঘাত হতে পারে। সেই দিকটাও সিবিএফসিকে দেখতে হয়। অনেক সময়েই সিবিএফসির সিদ্ধান্তে সকলে খুশি হন না। কিন্তু এমন একটা সংগঠন থাকলে সকলকে একসঙ্গে খুশি রাখাও যায় না। প্র: অভিনেত্রী না হলে কী হতেন? উ: ভাগ্যিস অভিনেত্রী হয়েছিলাম (জোরে হাসি)! না হলে কী হতাম জানি না। আমার কোনও প্ল্যান বি ছিল না। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×