ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের কেনাকাটা

রাজধানীর শপিংমলে প্রচন্ড ভিড়, ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৬ মে ২০১৮

রাজধানীর শপিংমলে প্রচন্ড ভিড়, ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পবিত্র মাহে রমজানের এক সপ্তাহ শেষ। আর রোজ শেষে খুশির বার্তা নিয়ে আসে ঈদ। ঈদের আনন্দের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে কেনাকাটা। সব শ্রেণীর মানুষই কম বেশি ঈদ উপলক্ষে কেনা কাটা করেন। সামর্থ্য অনুযায়ী বেশির ভাগই পোশাক কেনাকাটা করেন সবাই। তবে এ বছর রমজান শুরুর দ্বিতীয় শুক্রবার থেকে বেশ জমজমাট হয়ে উঠে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল। কমবেশি কেনাকাটার পাশাপাশি ক্রেতারা বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে গিয়ে ঈদ কালেকশন দেখতেও দেখা যায়। আর জমজমাট মানুষের পদচারণায় খুশি বিক্রেতারা। একই সঙ্গে বিক্রেতারা আশা প্রকাশ করে বলেছেন এখন থেকে প্রতিদিনই কমবেশি ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হবে মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে গিয়ে ঈদ বাজারের কেনাকাটার নানা দৃশ্য দেখা গেছে। যেখানে নারী পুরুষ সবাই সমান তালে ছুটছেন ঈদের কেনাকাটায়। প্রতি বছরই ঈদ কেনাকাটায় ভিড় ও যানজট এড়াতে অনেকেই আগেভাগেই সেরে ফেলেন কেনাকাটা। ইতোমধ্যেই পাইকারি বাজারের কেনা টাকা শেষ পর্যায়ে। পাইকারি বাজারের পর ঈদ কেনাকাটার ধাক্কা লেগেছে খুচরা পর্যায়েও। বিভিন্ন শপিং মলে দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। ঈদ বাজারের খোঁজ খবর নিতে কাউকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শপিংমলে প্রবেশ করতে পেরেছে। খুচরা বিক্রেতারাও ইতোমধ্যেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বাহারি ও নান্দনিক ডিজাইনের রুচিশীল পোশাক সাজিয়েছেন দোকানে। অন্যান্য দিনে কয়েকটি মার্কেট ও শপিংমলে ঘুরে দেখা গেছে কেনাকাটার চেয়ে ঘুরে দেখেই সময় কাটাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে শুক্রবার ঘুরে দেখার পাশাপাশি বেশ কেনাকাটাও হয়েছে। তবে যানজট পাড়ি দিয়ে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের মুখে ছিল বিরক্তি ছাপও। সামনে ছুটির দিনগুলোতে শপিংমল মার্কেট কেন্দ্রিক যানজট আরও বাড়বে সে আশঙ্কা করে এখনই পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন ক্রেতারা। শুক্রবার রাজধানীর অন্যতম শপিংমল বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা যায় নতুনভাবে সেজেছে বসুন্ধরা সিটি। কেউ আসছে আবার কেউ বের হচ্ছে। দুপুরের পর থেকে শপিংমলের বাহিরে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। যা প্রবেশ করতে কখনও দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লেগে গেছে। শপিংমলের ভেতরে বিক্রেতাদের দেখা গেছে ক্রেতাদের পণ্য বিষয়ে ধারনা দিতে। বসুন্ধরা শপিংমলে পোশাক বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এই সপ্তাহে তো আমরাই পোশাক আনলাম। আগামী সপ্তাহে পুরো জমে উঠবে ঈদ বাজার। একই দৃশ্য ছিল চন্দ্রিমা, নিউমার্কেট, গাউছিয়া এলাকায়ও। চাঁদনিচক, গাউছিয়া মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে মানুষ আর মানুষ। মার্কেটের ভেতরে পা ফেলার জায়গায় না থাকলেও কেনাকাটা খুব একটা দেখা যায়নি। পোশাকের দোকানগুলোতে বাহারি সাজে থরে থরে সাজানো ঈদের পোশাক দেখতে-কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটসহ আশপাশের ফুটপাতেও বেশ মানুষের পদচারণা ছিল। বিক্রেতাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সারা বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি বেচা-কেনা হয় রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে। কোরবানির ঈদের তেমন একটা কেনাকাটা হয় না বলেও জানান বিক্রেতারা। তাই রোজার সময় দম ফেলার সময় পাননা বিভিন্নœ বিপণী বিতানের মানুষ। ইতোমধ্যেই রমজানের দুটি শুক্রবার শেষ হয়ে গেছে। প্রথম শুক্রবার রোজা শুরু হওয়ার কোন ভিড় ছিল না তবে দ্বিতীয় শুক্রবার সেটি কেটে গেছে। সামনের বাকি ছুটির দিনগুলোতে তুলনামূলক ভিড় আরও বাড়বে সে আশা করেছেন ব্যবসায়ীরা। গাউছিয়া মার্কেটে শপিং করতে আসা নাফিসা হাসান বলেন, মানুষের ভিড়ের মধ্যে শুধু আড়াই ঘণ্টা যাবত হেটেছি। কিছুই কেনা হয়নি। আফসানা নামের ক্রেতা বলেন, চাঁদনিচক মার্কেটে দেশীয় পোশাকের আধিক্য থাকলেও ঈদের সময় ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে বিদেশী পোশাকও থাকে। এখানের মার্কেটগুলোতে নানা আঙ্গিকের পোশাক-আশাক, বিদেশী কাপড়, রেডিমেড অলঙ্কার, থান কাপড়, বিভিন্ন রকমের বুটিকস বা হাতে কাজ করা কাপড়, চামড়ার ব্যাগ, লেইস ফিতা থেকে শুরু করে গহনা এমনকি মেয়েদের সবকিছুই পাওয়া যায়। ছেলেদেরও পণ্য পাওয়া যায় এখানে। এদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এখন পোশাকে দাম অনেক বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। তাই কেউ কেউ শুধুই দেখে রাখছেন। ক্রেতারা মনে করছেন দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে যাবে পছন্দের পণ্যের। তবে ইতোমধ্যেই যারা বিভিন্ন কাজে রাজধানীতে এসেছেন তাদেরও ঈদের কেনাকাটা সেরে নিতে দেখা দেছে। নিউমার্কেটে কথা হয় হানিফ আব্দুল্লাহর সঙ্গে। তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজেন বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে ফেরার পথে নিজের জন্য পাঞ্জাবি ও পরিবারের জন্য কেনাকাটা করেন। জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সব সময় বগুড়ায় কেনাকাটা করি। তবে ঢাকায় যেহেতু এসেছি তাই আগেভাগেই সেড়ে নিলাম কেনাকাটা। আর রাজধানীর নতুনত্ব ডিজাইন বলে কথা। এদিকে, মৌচাক, পলওয়েল, ধানম-ি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ কেনাকাটা কেন্দ্র করে এসব এলকায় বিকেলের দিকে প্রচুর যানজট তৈরি হয়। অতিরিক্ত মানুষ আর গাড়ির চাপে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় ট্রাফিক বিভাগ। ছুটির দিন হওয়াতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে আসে কেউ কেউ। পোশাকের পাশাপাশি নারীরা বিভিন্ন জুয়েলারি, জুতা নেড়ে চেড়ে দেখেন। মাহমুদা জামান বলেন, ছুটির দিন সবার সঙ্গে মার্কেটে এসে। শুধু কিছু কসমেটিক নিয়েছি। অনান্যা জিনিসের প্রচুর দামও চাচ্ছে কদিন পর কিনব। পরিবার নিয়ে শপিংমলে আসা আশফাকুর রহমান নাবিল বলেন, এবার ঈদে এখন পর্যন্ত যা দেখেছি মোটামুটি কালেকশনে নতুনত্ব আছে। সামনের দিনে হয়ত আরও নতুন ডিজাইনের আসতে পারে। তবুও বাচ্চার জন্য কিনেছি।
×