ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নদী বন্দর ও খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০০:২৮, ১২ জুন ২০১৮

নদী বন্দর ও খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদকে কেন্দ্রকরে দেশের প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট, বরিশাল, চাঁদপুরসহ সকল নদীবন্দর ও খেয়াঘাট গুলো সরকারের নিয়োজিত ইজারাদাররা অতিরিক্ত টোল আদায়ের নামে নৈরাজ্য ও অস্বাভাবিক যাত্রী হয়রানী শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহের প্রথমদিক থেকে এই নৈরাজ্য শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষ এ ব্যপারে এগিয়ে আসছে না। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন নদীবন্দর ও খেয়াঘাটে যাত্রী সেবা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ কালে এই তথ্য উঠে এসেছে। পর্যবেক্ষণ কালে দেখা গেছে, সদরঘাটে খেয়া পারাপারে ইজারাদারদের নৌকায় ৫০ পয়সা টোল আদায়ের চুক্তি থাকলেও নৌকা ছাড়া শুধু মাত্র ঘাটে নামতেই যাত্রী প্রতি ৫ টাকা হারে টোল আদায় করা হচ্ছে। ৫ টাকা টোল দিয়েও যাত্রীসাধারণ কে আবার ভাড়াকৃত নৌকায় আবারও ৫/ ১০ টাকা নৌকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়া ইজারাদারের নৌকায় পারাপারে প্রতি ১০০ কেজি মালামাল বহনে ২ টাকা ইজারা আদায়ের চুক্তি থাকলেও সদরঘাটে নিয়োজিত ইজারাদার কোন নৌকা ভাড়া না করে শুধুমাত্র ঘাট দিয়ে পারাপারে যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে খেয়া পারাপারের ভাড়ার পাশাপাশি কোন যাত্রী পণ্য নিয়ে নদী পারাপারেও সর্বনি¤œ ১০ টাকা থেকে সর্ব্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত নৌকা ভাড়া আদায় করছে। ইজারাদারকে এই টোল দেয়ার পরও যাত্রীসাধারণ নৌকায় পণ্য ও নৌকার ভাড়া আলাদাভাবে দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এতে দেখা গেছে প্রতিদিন সদরঘাটে দুইপাড়ে যাতায়াতকারী যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এই ঈদে তার দ্বিগুণ আদায় হচ্ছে। এহেন চিত্র দেশব্যাপি ছড়িয়ে থাকা দেশের প্রায় সবকটি নদীবন্দর ও খেয়া ঘাটে লক্ষ্য করা গেছে। সদরঘাটে যাত্রী হয়রানী বন্ধে ইজারা প্রথা বাতিলের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সদরঘাট থেকে অসংখ্য মানুষকে হয়রানী করে প্রতিবছর ৩ কোটি টাকা ইজারা না নিয়ে ৩ কোটি মানুষকে সেবা দেওয়া উত্তম। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বা সরকার প্রধানের ইচ্ছা ও আঙ্খাংকা জলাঞ্জলি দিয়ে এখানে অস্বাভাবিক যাত্রী হয়রানী ও টোল আদায়ের নামে নৈরাজ্য চালিয়ে একটি মহল সরকারের ভাবমুর্তি দারুন ভাবে ক্ষুন্ন করলেও সরকারের কোন কর্তৃপক্ষ হয়রানীর শিকার যাত্রী সাধারণের পাশে দাড়াচ্ছে না। এছাড়াও ঘাটে প্রবেশে যাত্রী প্রতি টিকেটবিহীন টাকা আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে বিআইডাব্লিউটিএ এর নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রী সদরঘাট দিয়ে যাতায়াত করলেও ঈদের মৌসুমে যাত্রী যাতায়াত তিনগুণ বেড়ে যায়। ঘাটে গত একসপ্তাহ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বিআইডাব্লিউটিএর নিয়োজিত কর্মচারীরা সিংহভাগ যাত্রীদের টিকেটবিহীন টার্মিনাল প্রবেশ ফি আদায় করছে। এতে টার্মিনালপ্র্রবেশ ফি আত্মসাতের পাশাপাশি নৌ-দুর্যোগ তহবিলেরও লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে । এদিকে ঘাটে নিয়োজিত কুলিদের দৌরাত্ব ও গুটি কয়েক অসাধু লঞ্চ-মালিকদের দৌরাত্ব বন্ধে অসহায় যাত্রীদের পাশে দাড়াঁতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এসব চিত্র তুলে ধরে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণে কাজ করা বেসরকারী এই সংগঠন।
×