ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরের পল্লীতে কুপিয়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ২ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ০১:৪৪, ১৪ জুন ২০১৮

শেরপুরের পল্লীতে কুপিয়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ২ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ীর পল্লীতে শিশুদের ঝগড়াঝাটিকে কেন্দ্র করে অবিরন বেগম (৩৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে কুপিয়ে ২ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা ঘটেছে। কবজি বিচ্ছিন্ন ছাড়াও শরীরে আরও একাধিক গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখমের ক্ষত নিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের ওই গৃহবধূ ৩ দিন যাবত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সার্জারি বিভাগের ১০নং ওয়ার্ডে ফ্লোরে নিস্তেজ-নিথর হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এখনও তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। এদিকে ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনও গ্রেফতার হয়নি কোন আসামী। এ বিষয়ে গৃহবধূ অবিরন বেগমের স্বামী ঢাকায় রিকশাচালক জিয়ারুল হক অভিযোগ করে বলেন, বছরখানেক আগেও তারা আমার ৫ বছর বয়সী মেয়ে জাকিয়ার গায়ে গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে গ্রাম্য শালিসে তারা দোষী হওয়ার পর থেকেই আমার পরিবারের প্রতি নানাভাবে অত্যাচার করে আসছে। সে তার স্ত্রীকে উপুর্যপরি কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে। জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত বাহারুল হকের ছেলে জিয়ারুল হক দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসলেও নিজ বাড়িতে ৩ সন্তান নিয়ে থাকেন গৃহবধূ অবিরন বেগম। কিন্তু প্রতিবেশী তোফাজ্জল হোসেনের পরিবারের লোকজন গৃহবধূ অবিরন বেগমের সাথে টুকিটাকি বিষয় নিয়ে শত্রুতা পোষণ করে আসছিল। ওই অবস্থায় ১২ জুন মঙ্গলবার বিকেলে ২ পরিবারের শিশু বাচ্চাদের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটিকে কেন্দ্র করে তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে তার পুত্র জাহাঙ্গীর (২৮), সাইদুল (২২) সহ তাদের বাড়ির ৮/৯ জন লোক অবিরনের বাড়িতে হামলে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবিরনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে এবং ডান হাতের কবজি কেটে ঝুলিয়ে ফেলে। এরপর তারা অবিরনের বাম হাতের কনুইয়ের উপরে একাধিক ও ডান হাতে ডাকনায় কুপিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করলে প্রাণ বাঁচাতে সে দৌঁড়ে বসতবাড়ি সংলগ্ন মসজিদে গিয়ে পড়ে গেলেও রক্ষা পায়নি। তারা মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে অবিরনের ডান হাতে কোপায় এবং বাশের লাঠি, লোহার রড দিয়া তাকে এলোপাথারীভাবে মারপিটে নিস্তেজ করে ফেলে। ওইসময় স্থানীয় মুসল্লীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা সটকে পড়ে। পড়ে গুরুতর অবস্থায় অবিরনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এদিকে ওই ঘটনার ৩ দিন পর নালিতাবাড়ী থানায় স্বনামে ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধূ অবিরন বেগমের ভাই গোলাম রব্বানী।
×