ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেলফি তোলায় দেশই ছাড়তে হলো ইরাকী সুন্দরীকে

প্রকাশিত: ০০:০১, ১৫ জুন ২০১৮

সেলফি তোলায় দেশই ছাড়তে হলো ইরাকী সুন্দরীকে

অনলাইন ডেস্ক ॥ আমার ও আমার পরিবারের ব্যাপারে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলাম। আমাকে এবং আমার পরিবারকে দেশই ছাড়তে হয়। আমি খুবই ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি ছবিটি সরিয়ে ফেলিনি। মিস ইরাক অর্গানাইজেশন চেয়েছিলো ছবিটি সরাতে কিন্তু আমি তা করিনি।. যে ছবিটি নিয়ে এতো কাণ্ড সেটি প্রকাশ করা হয়েছিলো ইনসটাগ্রামে। সেখানে মিস ইরাকের সাথে ছিলেন মিস ইসরায়েল - আর বিপত্তি বেঁধেছে সেটি নিয়েই। কারণ এরপর এটি নিয়ে এতো বিতর্ক তৈরি হয় যে শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে হয় মিস ইরাক সারাহ'র পরিবারকে। কিন্তু ছবিটি এলো কোথা থেকে? কীভাবে? "আমাদের মধ্যে প্রথম দেখা হয় বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার ফটোশুট সেশনে এবং এরপরই আমরা কথা বলতে শুরু করলাম। সে আমাকে তখনই বলেছিলো যে সে আমার সাথে কথা বলতে কিছুটা ভয় পাচ্ছে কারণ সে মিস ইসরায়েল আর আমি মিস ইরাক। আমি বললাম সেটা কেন? সে বললো কারণ আমাদের দু'জনের দেশ"। ইসরায়েলকে নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর মনোভাব সম্পর্কে সবারই জানা আছে। রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে মধ্যপ্রাচ্য বা উপসাগরীয় অঞ্চলের বহু মানুষ ইসরায়েলকে বা এর কোন নাগরিককে সহজ ভাবে নেয় না। এটি আর এখন কোন গোপন বিষয়ও নয়। ফলে ঝামেলা এড়াতে সুন্দরী প্রতিযোগিতা হোক আর অন্য যে কোন কিছুই হোক, ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর সবাই এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সচেতন থাকেন সবসময়। মিস ইসরায়েল এডার গান্ডেলসম্যানও তার বাইরে নন, আর সে কারণেই মিস ইরাকের সাথে দেখা হলেও কথা বলা নিয়ে টেনশনেই ছিলেন তিনি। "আমি আসলে তার কাছ যেতে কিংবা কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলাম কারণ শুরুতে ভয় পাচ্ছিলাম যে আমি তার কাছে গেলে সে আবার কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় এটা ভেবে"। কিন্তু দু'দেশের বিরোধকে এক পাশে রেখে সানন্দেই কথা হলো দুজনের, যেমনটি বলছিলেন সারাহ আইডান। "আমি বলেছিলাম ওটা কোন সমস্যা হতে পারেনা, কারণ আমরা দুজনই অ্যাম্বাসেডর অব পিস বা শান্তির দূত"। এরপরই তারা ছবি তোলার সিদ্ধান্ত নেন একসাথে। আর এ যুগে দু'জনের ছবি তোলা মানেই তো সেলফি। মিস ইসরাইল বলছেন ততক্ষণে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধুত্বেই পরিণত হয়েছিলো। "আমরা বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম এবং আমরা চেয়েছিলাম সবাই সেটি দেখুক। এরপরই তারা আলোচিত সেলফিটি তোলেন। এর অন্তত ছ'মস পরে ইসরাইলপন্থী একটি সংস্থা 'দ্যা আমেরিকান জুইশ কমিটি'র আমন্ত্রণে মিস ইরাক সারাহ যান ইসরায়েলে। সেখানে আবারো দু'বন্ধুর মধ্যে সাক্ষাৎ হয়। সেখানেও গিয়ে তার মনে হয়েছে ইসরায়েলের মানুষেরা তো তাদেরই মতো।"লোকজন আমার মতো এবং অনেকে আরবিতে কথা বলে। জেরুজালেম শহর আমাকে মনে করিয়ে দেয় দামেস্কের কথা। আমি তো সিরিয়ায় অনেকদিন বাস করেছিলাম। তাই সবকিছুই পরিচিত মনে হচ্ছিলো। আমার নিজের মাটির মতোই"। কিন্তু সবকিছু এতো সহজ ছিলোনা। ইনসটাগ্রামে প্রকাশ হওয়া সেলফির জের ধরে শেষ পর্যন্ত নিজের দেশই ছাড়তে হয় সারাহ আইডান ও তার পরিবারের সদস্যদের।
×